বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:এ বছরও পৌষমেলা হবে শান্তিনিকেতনে। নির্দিষ্ট সূচি ও নিয়ম মেনেই হবে সেই মেলা। শুক্রবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী। তবে মেলা আয়োজনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন ধরে নিরাপত্তার কারণে পৌষমেলার মাঠে বিশ্বভারতীর পাঁচিল দেওয়াকে কেন্দ্র করে রাজ্যের শিক্ষা জগতে ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়েছে। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল, বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে তা নিয়ে তুমুল রাজনৈতিক চাপান–উতোরও চলছে। এরই মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠকে পৌষমেলা আয়োজনের চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বভারতী। এদিনের বৈঠকে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী এবং অন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকরা। সেই বৈঠকেই বিশ্বভারতী সিদ্ধান্ত নেয়, পরিবেশ আদালতের সিদ্ধান্ত মেনে এবার চারদিনের মেলা হবে এ বছর। আগের মতো সাতদিনের মেলা হবে না। আর মেলা আয়োজনে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করা হবে বলেও জানিয়েছে বিশ্বভারতী। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র অনির্বাণ সরকার এক প্রেস বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন।
কিন্তু এ বছর পৌষমেলা আয়োজন হলেও করোনা পরিস্থিতির ব্যাপক পরিবর্তন না হলে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে অনুমতি থাকবে কিনা, তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে বিশ্বভারতী পৌঁছেছে কিনা, তা জানা যায়নি। রাজ্য সরকারই বা সে বিষয়ে কী মনে করছে, তা–ও জানা যায়নি। তবে বিশ্বভারতী যেহেতু কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের এ ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা নেই। তবে পাঁচিল দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু মানুষ তা ভেঙে দিলে, তা নিয়ন্ত্রণে রাজ্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বভারতী। তাই বিশ্বভারতী যদি কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় পৌষমেলা করে, রাজ্য সরকার বিষয়টিকে কী ভেবে নেবে, তা নিয়ে ওয়াকিবহাল মহল সংশয় প্রকাশ করেছে। যদিও সে ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া রাজ্য সরকারের তরফে এখনও জানানো হয়নি।
পৌষ মেলা আয়োজনে বিশ্বভারতীকে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য করা উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন। এমনকী, কেন্দ্রের প্রধান শাসক দল বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও তাই চান। এদিন একটি সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানান, এর আগে ২০১৯ সালেও তিনি এমন দাবি তুলেছিলেন। কবিগুরুর স্মৃতিবিজড়িত এই ঐতিহ্যপূর্ণ মেলা বন্ধ করে দেওয়া কোনও মতেই উচিত হবে না। কিন্তু একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এত বড় মেলা আয়োজন করা খুবই কঠিন। তাই কেন্দ্রীয় সরকার মেলা আয়োজনের দায়িত্ব নিলে এই মেলা আরও সুন্দর ভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকার এই মেলা আয়োজনের দায়িত্ব নেবে কিনা, সে বিষয়ে তাদের তরফে কোনও মতামত দেওয়া হয়নি।