বগুড়ার সংবাদদাতাঃ আজ ১২ আগস্ট বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা থেকে ১২০০ (বারোশত) কোটি টাকার ভুয়া চেকসহ রিশান গ্রুপের চেয়ারম্যান ডিজে শাকিল সহ তিনজন প্রতারক চক্রের সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ। বুধবার রিশান গ্রুপের কার্যালয় থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেপ্তারকৃত তিন প্রতারকের নাম মো. রাব্বী শাকিল ওরফে ডিজে শাকিল (৩২), আইটি এক্সপার্ট মো. হুমায়ূন কবির (২৮) এবং ম্যানেজার মো. হারুন রশিদ ওরফে সাইফুল (২৬) ।
এই চক্রের মূল হোতা ডিজে শাকিলের বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তাড়াশ উপজেলার খাঁ পাড়ার কাজী গোলাম মোস্তফার ছেলে সে। ডিজে শাকিল নিজেকে তাড়াশ উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি এবং তার বাবা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বলে দাবি করেন। অপর দুই সঙ্গীর একজন এর নাম হুমায়ূন। সে তাড়াশ উপজেলার কুসুমদ্বী এলাকার আব্দুল মালেকের ছেলে। অপর আরেকজন সাইফুলের বাড়ি নওগাঁয়। মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র এলাকার মো. সাইদুর রহমান এর পুত্র সে।
এ সময় তাদের কাছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের জাল নথি, নকল নিয়োগপত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম, ভূয়া চেক বই, সিল উদ্ধার করেছে অভিযানকারী দল। এ ছাড়াও এই প্রতারক চক্রের ১২টি ফেসবুক আইডি, ৩৫টি ফেসবুক পেজ ২২টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ভুয়া সাংবাদিকতার কয়েকটি আইডি কার্ড ও ৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডকুমেন্ট এ ভর্তিকরা হার্ডডিস্কসহ ৪৩টি রবির সিম, ১৪টি গ্রামীণ সিম ও ৩টি বাংলালিংক সিম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার জনাব আলী আশরাফ ভূঁইয়া জানান, বুধবার বগুড়ার প্রতারিত হওয়া আমানতউল্লাহ তারেক নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, এই প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে চাকুরির নামে জালিয়াতি ও ভুয়া অনলাইন পেজ চালিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ও লোন সার্ভিস নামে একটি অনলাইন পেজে দেশে-বিদেশে লোন করে দেওয়ার ভুয়া বিজ্ঞাপন প্রচার করে তারা। এতে তারা বিভিন্ন ব্যাংকের যে কোনো পরিমাণ লোন নিয়ে দিতে পারে বলে মিথ্যা প্রচারণা চালায়। এমন একটি বিজ্ঞাপন দেখে বগুড়ার মালতিনগরের আমানতউল্লাহ তারেক নামে একজন উদ্যোক্তা যোগাযোগ করেন। তিনি ব্যাংক লোন নেওয়ার জন্য ওই প্রতারক চক্রের শাকিলের সাথে যোগাযোগ করেন। চুক্তি অনুযায়ী শাকিল লোনের ৫ শতাংশ কমিশন হিসেবে দাবি করেন। এরই মধ্যে তারেক প্রতারক শাকিলকে এডভান্স ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকাও দেন। পরে শাকিলের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তিনি বুধবার সদর থানায় মামলা করেন। জেলা পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে এই প্রতারক চক্রকে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে।
জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, এই তিন প্রতারককে বৃহস্পতিবার আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।