ওয়েব ডেস্ক: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে পাকিস্তান এবং তাদের এদেশীয় দোসররা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হওয়ার প্রতিশোধ নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি অডিটোরিয়াম বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত শেখ রাসেল দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
টিপু মুনশি বলেন, যারা সম্মুখযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে পরাজিত করতে পারেনি, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি, এদেশের মানুষের মুক্তি চায়নি, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কাজ করেছে তারাই প্রতিশোধ নিতে শিশু রাসেলসহ বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোন শেখ রেহানা সেসময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান। দুই বোন দেশে থাকলে সেদিন তারাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হতেন। পরবর্তীকালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে তাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে এবং সে চেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জয় বাংলা‘ যে স্লোগান দিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে সেই স্লোগানকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র চলছে দেশকে পিছিয়ে দিতে। যারা বাংলার সম্পদ লুণ্ঠন করেছিল সেই পাকিস্তান আমাদের দেশের চেয়ে উন্নয়নের সব সূচকে পিছিয়ে আছে।
তিনি জানান, জাতির পিতা পুরো দেশকে সংগঠিত করে বাঙালিকে শাসন-শোষণ ও দাসত্বের বেড়াজাল থেকে মুক্ত করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। দেশকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে নিজের সপে দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগেই ঘাতকদের হাতে জীবন দিতে হয়। থমকে যায় দেশের উন্নয়নের মহাযজ্ঞ।
মন্ত্রী আরও বলেন, শিশু শেখ রাসেলকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে বিশ্ব ইতিহাসে ঘৃণ্যতম নৃসংশতার পরিচয় দিয়েছে ঘাতকেরা। শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে দেশ ও জাতির কল্যাণে অবদান রাখতে পারতো। কিন্তু ঘাতকেরা সে সুযোগ তাকে দেয়নি।
টিপু মুনশি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসাম্প্রদায়িক ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতি হিসেবে আমাদের সবার উচিত বঙ্গবন্ধুকন্যার পাশে থাকা।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উল্লেখ করে তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদের রক্তের বিনিময়ে হলেও দেশবাসীর উচিত স্বাধীনতার স্বপক্ষে থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত করা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সরকারের সচিব), মো. ফয়জুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জাফর উদ্দীন এবং জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বক্তব্য রাখেন। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং এর আওতায়ধীন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে শেখ রাসেল দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।