কলকাতা সংবাদদাতা:রবিবারও করোনা সংক্রমণ বাড়ল বাংলায়। শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ৯৩৯ জন। এর ফলে গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৫৫৪ জন। করোনা ভাইরাস সক্রিয় থাকায় এখনও রাজ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৬ হাজার ৩৭৫ জন। শনিবার সংখ্যাটা ছিল ২৫ হাজার ৪৮৬ জন। করোনা ভাইরাস সক্রিয় রয়েছে, এমন রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার বেড়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রকাশিত বুলেটিন থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
এদিন সংক্রমিতদের মধ্যে কলকাতার রয়েছেন ৬১৫ জন। শনিবার সংক্রমিত হয়েছিলেন ৬৮৪ জন। এর অর্থ মহানগরীতে নতুন করে সংক্রমিত হওয়ার সংখ্যাটি কমে গিয়েছে ৬৯ জন। এটা একটা ইতিবাচক দিক হলেও নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো নয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সোমবারই সংখ্যাটা বেড়ে ফের শনিবারের সংখ্যাকে অতিক্রম করে যেতে পারে। তবে সংক্রমিতের সংখ্যা যদি বেশ কয়েকদিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে কমতে থাকে, তা হলে তা আশাব্যঞ্জক হতে পারে। কলকাতার পর রবিরার উত্তর ২৪ পরগনার ৫৮৮ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩০৬ জন, হাওড়ায় ১৮৫ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৭৭ জন, পশ্চিম বর্ধমানে ১০৮ জন, হুগলিতে ৯৫ জন, কোচবিহারে ৯২ জন, বাঁকুড়ায় ৮৬ জন, পূর্ব বর্ধমানে ৮৩ জন, পশ্চিম মেদিনীপুর ও নদিয়ায় ৮২ জন করে, মুর্শিদাবাদে ৭৯ জন, দার্জিলিংয়ে ৬৮ জন, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬৩ জন, বীরভূমে ৪০ জন, মালদায় ৩৮ জন, উত্তর দিনাজপুরে ৩৬ জন, জলপাইগুড়িতে ৩৪ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন।
এ ছাড়া শনিবার ঝাড়গ্রামে সংক্রমিত হয়েছিলেন ৫ জন। কিন্তু রবিবার এই জেলায় সংক্রমিত হন ১৯ জন। এটা কিন্তু বেশ আশঙ্কার বিষয়। অন্তত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের ধারণা তেমনই। শনিবার রাজ্যে সংক্রমিত হওয়ার হার ছিল ১১.৭৩ শতাংশ। রবিবার সেই সংখ্যাটা একটু কমে গিয়েছে। হয়েছে ১১.২০ শতাংশ। এটা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য মহলকে। রবিবার করোনা সংক্রমিত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ জন। মৃতদের মধ্যে কলকাতারই রয়েছেন ২১ জন। এ ছাড়া উত্তর ২৪ পরগনায় ১৫ জন, হাওড়ার ৬ জন, হুগলির ৪ জন, দার্জিলিংয়ের ৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২ জন এবং জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর ও পূর্ব বর্ধমানে ১ জন করে মারা গিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত গোটা রাজ্যে করোনা সংক্রমণে মোট মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৫৯ জনের। মৃতদের মধ্যে ১ হাজার ৮২২ জনের কো–মর্বিডিটি ছিল বলে বুলেটিন থেকে জানা গিয়েছে।
রবিবার করোনা মুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৯৯৬ জন। ফলে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ থেকে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা ৬৭ হাজার ১২০ জন। রাজ্যে এখন সুস্থতার হার ৭০.২৪ শতাংশ। আশঙ্কার হল, শতাংশের হিসেবে শনিবারের তুলনায় সুস্থতার হার কিছুটা কমেছে। উল্লেখ্য, শনিবার রাজ্যে সুস্থতার হার ছিল ৭০.৩২ শতাংশ। তবে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা এদিনও বেশ বেড়েছে। এদিন করোনা পরীক্ষা হয়েছে ২৬ হাজার ২৪২ জনের। শনিবার পরীক্ষা হয়েছিল ২৫ হাজার ১৪৮ জনের। অর্থাৎ, একদিনে ১ হাজারেরও বেশি মানুষের করোনা পরীক্ষার সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিদিন পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ায় বেশি সংক্রমিতের সংখ্যা ধরা পড়ছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। যাই হোক, এখনও পর্যন্ত সারা রাজ্যে মোট করোনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লক্ষ ৫ হাজার ৮৮৯টি।