” বাবার চেয়ে দামী নয়তো কোন ধন
তুচ্ছ তারই কাছে মানিক রতন ”
দেখতে দেখতে ২৫ বছর কেটে গেলো। ১৯৯৫ সালের এই দিনে ঠিক এই সময়ে আব্বা চলে গেলেন। মনে হচ্ছে এই তো সেদিন। আমার এসএসসি পরীক্ষার ঠিক ১৪ দিন আগে। ২০ তারিখ থেকে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। আর ৪ তারিখ দিবাগত রাত ১২.২৫ মিনিটে আব্বা মারা যান। সেদিনের মতো আজ রাতেও ঘুমাতে পারছিনা। খুব চেষ্টা করছি আব্বার মুখটা মনে করতে কিন্তু পারছি না। কত কথা বলতেন আব্বা আমাকে। আমি প্রচন্ড রকমের পড়ায় ফাঁকি দিতাম। হেন কোন বাদড়ামি নেই যেটা করতাম না। আব্বা বুঝাতেন তোমাকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন, তুমি বড় অফিসার হবা, আমার চেয়েও বড় ইত্যাদি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। পরীক্ষায় মাঝামাঝি লেভেলের পাস দিতাম।
আব্বা মারা যাওয়ার ১৪ দিন পর পরীক্ষা। সবাই না করলো পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই। আমি মনোবল হারাইনি। শোককে শক্তি করলাম এবং পরীক্ষায় অংশ নিলাম। আমাদের স্কুল থেকে ১১ জন First Division পায়। আমিও তাদের মধ্যে একজন। নিজেকে যতটুকু পেরেছি গড়ে নিয়েছি। আমার চলার পথ ছিলো বন্ধুর। সহজে পাইনি সহজেরে। আমার মেয়ে ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমোচ্ছে। আমি দেখছি আর চোখের জলে ভিজছি। একটা সন্তানের জীবনে বাবার ভূমিকা কতটুকু তা আমি মর্মে মর্মে বুঝি। ২৫ বছর পরও আমি খুঁজে বেড়াই আব্বার অস্তিত্ব। মন প্রাণ উজার করে আমি দোয়া করি কোন সন্তান যেন অসময়ে পিতৃহারা না হয়। এতিম না হয়। কত যে যন্ত্রণার তা বলে বুঝানো যাবেনা। সবার কাছে আব্বার জন্য দোয়ার দাবী রাখছি।
রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগীরা।
লেখক:হুমায়রা পপি