বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ক্যাম্পাসে আন্দোলন-প্রতিবাদে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশের ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র প্রতিনিধিরা।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতি ছাত্র প্রতিনিধিরা বলেন, ৩১ জানুয়ারি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৭৫তম বিশেষ সভায় প্রশাসনিক ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, একাডেমিক ভবন ও শ্রেণিকক্ষের সামনে মিছিল, সভা-সমাবেশ, অবস্থান ধর্মঘট, বিক্ষোভ প্রদর্শন, স্লোগান, বক্তব্য দেয়া, মৌনমিছিলসহ কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসঙ্গে উপাচার্যের ভবন এবং প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই চরম অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত তীব্র নিন্দাকর।
ছাত্র প্রতিনিধিরা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কতিপয় দালানকোঠা, কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমাহার নয়। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টির বাতিঘর। মানবিক মূল্যবোধ ও প্রতিবাদী চেতনা গড়ে তোলার কেন্দ্রস্থল। বিশ্ববিদ্যালয় ধারণার সঙ্গেই গণতান্ত্রিক পরিবেশ অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত। বাংলাদেশের ইতিহাসের অধিকাংশ গণআন্দোলনের সূচনা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকেই। ফলে চরম অগণতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারী স্বার্থান্বেষী প্রশাসন না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে রুদ্ধ করার ভাবনা আসতে পারে না।
বলা হয়েছে, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরনের অনিয়ম অব্যবস্থাপনা আছে। বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব নেয়ার পর সেটা আরও বেড়েছে। উপাচার্যের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও তদন্ত করেছে। এরমধ্যেই এরকম সিদ্ধান্ত স্পষ্টতই উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের কণ্ঠস্বরকে রুদ্ধ করার অপকৌশল। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে প্রশাসনিকভাবে দমন করার পথ প্রশস্ত হলো।
বিবৃতিতে অবিলম্বে ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সকল ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী ছাত্র প্রতিনিধিরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভী হাওলাদার, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিদ তুর্য, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মাহফুজুল ইসলাম বকুল, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মোহাম্মদ শিহাব, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিকে সাদিক, বশেমুরবিপ্রবির রোমিও রহমান, শাবিপ্রবির মোহাম্মদ শাহিন মিয়া, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আলিশা মুনতাজ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিমেষ রায়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি আরিফ হাসান, যবিপ্রবির মো. আব্দুল কাদের ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুদীপ্ত দে।