1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

মমতার প্রচারে নিষেধাজ্ঞা কমিশনের, পাল্টা ধর্নায় তৃণমূল নেত্রী

  • Update Time : সোমবার, ১২ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৩৫ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা: বেশ কয়েকবার আপত্তিকর বক্তব্য পেশ করেছেন স্বয়ং তৃণমূল দলনেত্রী। তাই দু–দু’বার নোটিশ পাঠিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। জবাব দিয়েছিলেন মমতাও। কিন্তু তাঁর জবাবে কমিশন খুশি হতে পারেনি। তাই সোমবার রাত ৮টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সময় কোনও রকম নির্বাচনী প্রচারে তৃণমূল নেত্রী অংশ নিতে পারবেন না বলে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিবাদে মমতা মেয়ো রোডে ধর্নায় বসছেন বলে ঘোষণা করেছেন। সমালোচনায় মুখর তৃণমূল নেতারা।

যদিও ভারতে মমতাই প্রথম নন, যিনি ভোটের সময় নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লেন। এর আগে শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরের ওপর ৬ বছরের জন্য প্রার্থী হওয়া এবং ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কমিশন। এ ছাড়া হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতালা, কংগ্রেস নেতা সীতারাম কেশরি ও কল্পনাথ রাই, উত্তরপ্রদেশের ভোটে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ, সপা নেতা আজম খানের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল।
একই সময়ে কড়া ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল বহুজন সমাজ পাটির নেত্রী মায়াবতী এবং বিজেপি নেত্রী মানেকা গান্ধীকে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি নেতা অমিত শাহের প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। এ ছাড়া বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ ভার্মা, সাধ্বী প্রজ্ঞাকেও কমিশনের শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। আবার কংগ্রেসের নভজ্যোৎ সিংহ সিধু, ডিএমকে নেতা এ রাজা, অসমের বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মার প্রচারও নিষিদ্ধ করেছিল কমিশন।

পশ্চিমবাংলার তৃণমূল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রেও এবার একই ঘটনা ঘটেছে। উল্লেখ্য, তারকেশ্বরে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের (‌পড়ুন মুসলমান)‌ বলছি, আপনাদের ভোট ভাগাভাগি হতে দেবেন না। বিজেপিকে ভোট দেবেন না। বিজেপি এলে মনে রাখবেন খুবই বিপদ, সবচেয়ে বেশি বিপদ আপনাদের।’

তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে রাজনৈতিক মহলে। ভারতীয় আইন অনুযায়ী এ ভাবে সরাসরি কোনও ধর্ম সম্প্রদায়ের কাছে ভোট চাওয়া যায় না। তাঁর বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। উত্তরবঙ্গে অপর এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমিও যদি একই ভাবে হিন্দুদের ভোট চাইতাম, তা হলে আমার কাছে ৭–৮টা নোটিশ চলে যেত।’

এর পরই নড়েচড়ে বসে নির্বাচন কমিশন। ওই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়ে তারা তাঁর কাছে নোটিশ পাঠায়। কমিশনের যুক্তি ছিল, ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে ভোট চাওয়া আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপন্থী। কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ প্রমাণিত হলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী তাঁর প্রার্থীপদ খারিজও করা যেতে পারে।

এর পর মমতা উত্তরবঙ্গে প্রচারে গিয়ে মমতা একই ভাবে মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনাদের একটি দল বাড়ি থেকে হাতা, খুন্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করবেন, অপর দল গিয়ে ভোট দেবেন। মমতার সেই বক্তব্য নিয়েও বেশ চর্চা হয়। তাঁর সেই বক্তব্য নিয়েও ব্যাখ্যা চেয়ে নির্বাচন কমিশন ফের নোটিশ পাঠায়। উল্লেখ্য, এর পর শনিবার চতুর্থ দফার ভোটে কোচবিহারের শীতলকুচিতে একই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি ঘটে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ ওঠে, তাঁর প্ররোচনামূলক বক্তব্যের জেরেই ওই ঘটনা ঘটেছে।

সেই ঘটনা নিয়েও তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠেছে। তিনি রবিবারই শীতলকুচিতে মৃতদের বাড়িতে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সে ক্ষেত্রে আইন–শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, এই আশঙ্কায় কমিশন ৭২ ঘণ্টার জন্য যে কোনও দলেরই কোচবিহারে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

যাই হোক, কমিশনের প্রথম নোটিশের জবাবও দেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি কী জবাব দিয়েছেন, তা জানা যায়নি। তবে বিভিন্ন জনসভায় বিষয়টি উল্লেখ করছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে ১০ বার শো–কজ করেও লাভ নেই। একই জবাব দেব। নরেন্দ্র মোদিরা যখন হিন্দু–মুসলমান করেন, তখন কিছু হয় না। আমি একটু বললেই দোষ।’ উল্লেখ্য, বাংলার কোনও সভাতেই নরেন্দ্র মোদি বা অমিত শাহ হিন্দু–মুসলমান বিভাজন করে এখনও পর্যন্ত ভোট চাননি। তবে আর একটি নোটিশের জবাবে তৃণমূলনেত্রী লেখেন, ‘কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর প্রতি আমার সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। দেশের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা রক্ষায় তাদের অবদান খুব উঁচুতে।’

যাই হোক, সোমবার জানা গেল, মমতার প্রথম নোটিশের জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট নয়। তাই এদিন রাতে তাঁর কাছে কড়া নির্দেশ চলে আসে কমিশনের তরফে। কমিশনের সচিব রাকেশ কুমার সেই নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি যে ধরনের প্ররোচনা দিচ্ছেন এবং উত্তেজক কথা বলছেন, তা রাজ্যের আইন–শৃঙ্খলার পক্ষে বিপজ্জনক। তাই এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে তাঁকে বলা হচ্ছে। পাশাপাশি তাঁর প্রচারের ওপর ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।’

কিন্তু কমিশনের এই নির্দেশ পাওয়ার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা। টুইট করে জানিয়ে দেন, কমিশনের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তিনি মঙ্গলবার মেয়ো রোডে ধর্নায় বসবেন। রাজনীতি এবং সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, মমতার আচরণে কমিশনের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করাই প্রমাণ হচ্ছে। এতে আখেরে তাঁর ক্ষতিই হতে পারে। তবে কমিশনের নির্দেশে মমতার মঙ্গলবারের বেশ কিছু কর্মসূচি বাতিল হয়ে যায়।

কিন্তু কমিশনের নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, এ–সব নাকি হচ্ছে বিজেপির নির্দেশে। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘এটা অন্যায়। এক তরফা ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। তারা পক্ষপাতদুষ্ট। শুধু তাই নয়, এখন তারা বিজেপির শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। মানুষ এর জবাব দেবে।’
শুধু রাজ্যে দলের মুখপাত্রই নন, সর্বভারতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েনও কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন এমন কাজ করতে পারে না। এটা গণতন্ত্রের পক্ষে কালো দিন।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..