বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:
লকডাউন ঠিকমতো মানা হচ্ছে কিনা দেখতে গিয়ে পুলিশের বাধায় আটকে গেলেন বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার তিনি লকডাউন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বালুরঘাট থেকে হিলি সীমান্তে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বালুরঘাটের মঙ্গলপুরের কাছে তঁাকে আটকে দেয় পুলিশ। জানিয়ে দেয়, অনুমতি ছাড়া লকডাউনের মধ্যে এ ভাবে কোথাও যেতে দেওয়া হবে না।
ঘটনায় ক্ষুব্ধ সাংসদ পুলিশের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন। শেষে সেখানেই তিনি বসে পড়েন। সেখান থেকে সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ফোন করে অভিযোগও জানান। উল্লেখ্য, এর আগেও লকডাউন পরিদর্শন এবং সাধারণ মানুষকে ত্রাণ দিতে গেলে বিজেপি সাংসদ জন বার্লা, জয়ন্ত রায়, দেবশ্রী চৌধুরী, সুভাষ সরকার ও অর্জুন সিংকে পুলিশ রাস্তায় আটকে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছিল। রাজ্যপাল কখনও টুইট করে, আবার কখনও ভিডিও বার্তা দিয়ে সে–সব বিষয় উল্লেখও করেছেন।
সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, কোন নির্দেশিকার বলে তঁাকে আটকানো হয়েছে, তা তিনি পুলিশ অফিসারের কাছে জানতে চাইলেও তিনি কোনও জবাব দেননি। বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘শাসক দলের ছোট নেতাদেরও আদর করে পুলিশ সব জায়গায় যেতে দিচ্ছে। ত্রাণ বিলি করতে দিচ্ছে। তাঁদের পুলিশ আটকে দিয়েছে বলে কোনও খবর পাওয়া যায়নি। আসলে পুলিশ এখন তৃণমূলের ক্যাডার হয়ে গিয়েছে।’
এর পরই বিজেপি সাংসদ সরাসরি আঙুল তোলেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ অর্পিতা ঘোষের দিকে। তিনি বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যসচিব যে নির্দেশিকা জারি করেছিলেন, পুলিশই তা মানছে না। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, স্ট্যান্ডার্ড প্রটোকল মেনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অঞ্চলে ত্রাণের কাজ বা লকডাউন পরিদর্শন করতে পারবেন। কিন্তু পুলিশই তা মানছে না। তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ পালন করতেই তারা এখন ব্যস্ত। তাই এখানকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকেও তাঁর কাজ করতে দিচ্ছে না।’
যদিও পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেছেন, ‘বিপর্যয় মোকাবিলা আইন মেনে চিকিৎসা ও অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রীর গাড়িই রাস্তায় যাতায়াত করতে পারবে। অন্য কারও গাড়িকে যাতায়াত করতে হলে মুখ্যসচিব বা জেলাশাসকের কাছ থেকে পাওয়া অনুমতি পত্র দেখাতে হবে। সাংসদ সুকান্ত মজুমদার তেমন কোনও অনুমতি পত্র দেখাতে পারেননি।’
তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছে বিজেপি। তারা বলেছে, ‘রাজ্যে গণতন্ত্র বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই। রাজ্যকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করছে শাসক দল। তাই বিরোধী দলগুলির কোনও সাংসদ বা বিধায়ককে ত্রাণ বিলি করতে দিচ্ছে না, বা লকডাউন মানা হচ্ছে কিনা, তা দেখতেও দিচ্ছে না। অথচ তৃণমূল নেতাদের ত্রাণ বিলির ক্ষেত্রে পুলিশ সবরকম সাহায্য করছে। এমনকী, সেই অনুষ্ঠানে পুলিশের অনেকেও গিয়ে হাজির হচ্ছেন।’