বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:শুভেন্দু অধিকারী কি শেষ পর্যন্ত তৃণমূলেই থেকে যাবেন, নাকি অন্য কোনও দলের দিকে পা বাড়াবেন? যদি বাড়ান, তা হলে সেই দলটি কি বিজেপি? এই মুহূর্তে রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপিতে তাঁর যোগ দেওয়া নিয়েই বেশি আলোচনা চলছে। স্বভাবতই শুভেন্দু যদি দলবদল করেন, তা হলে তিনি বিজেপিতেই যাবেন বলে অনেকের ধারণা। আর যদি না করেন, অর্থাৎ তৃণমূলেই থেকে যান, তা হলে প্রশ্ন হল, তাঁকে নিয়ে এত জল্পনাই বা হচ্ছে কেন?
শুভেন্দুকে নিয়ে যখন এমনই হাজার এক সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা চলছে, ঠিক তখনই বিস্ফোরক এক মন্তব্য করে বসলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দলুই। যদিও শুভেন্দু অধিকারী আদৌ দলবদল করবেন কিনা, সে বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে তিনি চাননি। বলেছেন, ‘শুভেন্দুদা কী করবেন, তা তিনিই জানেন। তবে আমি মনে করি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত তাঁকে প্রাপ্য ও যোগ্য মর্যাদা দেওয়া।’ সংগ্রাম দলুইয়ের কথায় পরিষ্কার হয়ে যায়, দলে শুভেন্দু ঠিকমতো মর্যাদা পাচ্ছেন না। আর এখানেই লুকিয়ে রয়েছে তাঁর মন্তব্যের গুরুত্ব। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এই সংগ্রাম দলুইকে। দলে তিনি শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তাই সংগ্রামকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ঘনিষ্ঠ মহলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শুভেন্দু।
এর পর ১৯ আগস্ট তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। এর আগের রদবদলে তৃণমূলের পর্যবেক্ষক পদ বাতিল হয়ে গিয়েছিল তাঁর। এই বিষয়ে শুভেন্দু প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও ঘনিষ্ঠ মহলে নিজের হতাশা প্রকাশ করেছিলেন। তার পর ২০ আগস্ট রাজ্য রাজনীতিতে মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ শীলভদ্র দত্তের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরেও চর্চা হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আর শুক্রবার শুভেন্দুকে নিয়ে নিজের মত জানিয়ে তীব্র আলোড়ন তুলে দিয়েছেন সংগ্রাম। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই আমি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর দলে তাঁরই গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। মূলত শুভেন্দুদার জন্যই পাহাড় থেকে জঙ্গলে তৃণমূল সাফল্য পেয়েছিল। কিন্তু তার পরেও দলে তিনি তাঁর প্রাপ্য মর্যাদা পাননি।’
যদিও তাঁর এই মন্তব্যের পর তৃণমূলের তরফে কেউ কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে সংগ্রামের এই মন্তব্য দলের শীর্ষনেতৃত্বের কানে গিয়েছে। শীর্ষনেতারা তাঁর মন্তব্যকে সহজ ভাবে নেননি বলেই খবর।