বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা : কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পর পশ্চিমবাংলায় বিজেপির রাজ্য কমিটিতে নিয়ে আসা হচ্ছে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। রাজ্য বিজেপি সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিজেপির রাজ্য কমিটির সাধারণ ও আমন্ত্রিত সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। কিন্তু সেখানে বৈশাখীদেবীর নাম ছিল না।সেই তালিকায় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়। সেখানে মোট ২৩০ জনের নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে বিশেষ আমন্ত্রিত ২১ জন এবং স্থায়ী আমন্ত্রিত সদস্য ১১০ জন। রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন সদস্য এবং পদাধিকারী–সহ ৯৬ জন।
এই কমিটিতে বিভিন্ন মহলের বিশিষ্টদের স্থান দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের মধ্যে নতুন মুখ জ্যোর্তির্ময়ী শিকদার, অর্চনা মজুমদার, দেবযানী সেনগুপ্ত, বীথিকা মণ্ডল ও বিশ্বভারতীর অধ্যাপক মধু ছন্দা কর রয়েছেন। সেই তালিকায় মুকুল রায়ের ছেলে তথা বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় বা যুবনেতা শঙ্কুদেব পন্ডার নামও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হতে চলেছে বৈশাখীদেবীর নামও।
কিন্তু ওই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর অসন্তোষের ইঙ্গিত মিলেছিল খোদ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যে। যদিও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। তবে শোভন তাঁর ক্ষোভ গোপন করেননি। তিনি বলে দেন, রাজ্য কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির খবর সংবাদমাধ্যম থেকে জেনেছেন। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কেউ আলোচনাও করেননি। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় কমিটিতে না থাকলে তিনি যে সক্রিয় হবেন না, সেই ইঙ্গিতও দেন। শোভনের ক্ষোভের কারণ যে কমিটিতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তি না হওয়ায়, তা বুঝতে অসুবিধে হয়নি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তাই ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর সেই অসন্তোষ মেটাতে দ্রুত পদক্ষেপ করেন তিনি। শোভন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে টানাপড়েন এক বছর ধরে চলছে। ফলে বিজেপিতে যোগ দিলেও তিনি সক্রিয় হননি। সেই পরিস্থিতি তিনি আর জিইয়ে রাখতে চান না।
বৃহস্পতিবারের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিতে তাঁর পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তখনই প্রশ্ন ওঠে, কর্মসমিতির সদস্যা না হয়েও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই বৈঠকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে? দিলীপ ঘোষ তৈরিই ছিলেন। তিনি স্পষ্ট বলে দেন, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও কর্মসমিতির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর নামও ঘোষণা করা হবে। এদিন রাতের মধ্যেই শোভনের পাশাপাশি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও পৌঁছে যায় বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দেওয়ার ভার্চুয়াল লিঙ্ক। জানা গিয়েছে, অধ্যাপক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করার কথাই ভাবা হয়েছে। তাঁর পাশাপাশি রাজ্য কমিটিতে আরও কয়েকজনকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হবে।
সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিক্ষাবিদ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি। আগে মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যাপনা করতেন তিনি। কলেজের দায়িত্বেও ছিলেন। দুর্নীতির প্রতিবাদ করে সেই দায়িত্ব ছেড়ে দেন। কলেজের বৈঠকেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, দুর্নীতি বিরোধী তাঁর সেই স্বচ্ছ ভাবমূর্তিকেই বাংলার নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি।