1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

সংবাদের শিরোনামে মহুয়া মৈত্র, ক্ষমা প্রার্থনার দাবি

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০
  • ২১৮ Time View

বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা: ‘দু’ পয়সার প্রেস’ নিয়ে শোরগোল সংবাদমাধ্যমে। রবিবার নদিয়ার গয়েশপুরে দলীয় কর্মিসভায় দলেরই একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়ে মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিকদের ঠিক এই ভাষাতেই গালিগালাজ করেছিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তার পরই সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে সরব হতে শুরু করেন। কিন্তু মঙ্গলবারও মহুয়া নিজের বক্তব্য থেকে এতটুকু সরেননি। বরং টুইট করে সে কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। দায়সাড়া ভাবে নিজের ‘সঠিক’ মন্তব্যের জন্য ‘ক্ষমা’ চেয়েছেন। যদিও তাঁর মন্তব্যের দায় নেয়নি তৃণমূল বা রাজ্য সরকার। মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘এটা ওর ব্যক্তিগত কথা। দলের কথা নয়।’

এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে বাংলা সংবাদ মাধ্যমে রীতিমতো অসন্তোষ তৈরি হয়। বিশেষ করে ‘জি ২৪ ঘণ্টা’ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। কোনও পাল্টা শ্লেষাত্মক মিমের পথে না গিয়ে, ওই মন্তব্যের জন্য যতক্ষণ পর্যন্ত না তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। তাদের বক্তব্য, ‘সংবাদ মাধ্যমের দু–একজনের প্রতি ক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু সেই দায় সম্পূর্ণ মিডিয়ার ওপর চাপানো উচিত নয়। ভবিষ্যতে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা নেত্রী যেন সাংবাদিকদের এ ভাবে অপমান করার সাহস না দেখান।’ শুধু ‘জি ২৪ ঘণ্টা’ই নয়, সংবাদ প্রতিদিন, হিন্দুস্থান টাইমস বাংলা–সহ বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমও মহুয়ার বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয় প্রেস ক্লাবও। তারা বলে, ‘কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সাংবাদিকদের সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে প্রেস ক্লাব কলকাতা উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং প্রতিবাদ করছে। তাঁর মন্তব্য অনভিপ্রেত, অপমানজনক। ধিক্কার জানাই সাংসদের মন্তব্যে।’

ঘটনাটি রবিবারের। ওইদিন নদিয়ার গয়েশপুরে নদিয়া জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া গিয়েছিলেন একটি কর্মিসভায়। সেখানে হাজির ছিলেন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরাও। মহুয়ার বৈঠকে সংবাদ মাধ্যমের সেই প্রতিনিধিরা ঢুকে পড়েছিলেন বলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। তখনই আচমকা মেজাজ হারিয়ে মহুয়া বলেন, ‘কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে? কর্মিবৈঠক হচ্ছে। আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত! আমি নির্দেশ দিচ্ছি, প্রেসকে সরান!’ মহুয়ার সেই বক্তব্য রেকর্ড করে পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করে দেন কয়েকজন সাংবাদিক। তার পরই সোমবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে যায়। বেশ কয়েকজন সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়াকে কটাক্ষ করেন। এর পর অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন। অনেকে গান গেয়েও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। চারদিকে সমালোচনাকে প্রথমে মহুয়া মৈত্র পাত্তা দেননি। তাঁর ‘হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি’ দেখে তখন বোঝা গিয়েছিল, নিজের মন্তব্যে তিনি কোনও ভুল দেখতে পাচ্ছেন না।

পরে সেই বক্তব্য টুইটও করেন। সেখানে পরিষ্কার লেখেন, ‘আই অ্যাপোলোজাইজ ফর দ্য মিন হার্টফুল অ্যাকিউরেট থিংস আই সেড।’ অর্থাৎ, নিম্নমানের দুঃখজনক সঠিক কথা বলার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী। তাঁর এই প্রতিক্রিয়ার প্রভাব পড়ে সংবাদ মাধ্যমেও। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম তাঁর সমালোচনা করতে শুরু করে। তাঁর বক্তব্যের নিন্দা করেন সংস্কৃতি জগতের ব্যক্তিত্বরাও। চলচ্চিত্র পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন, ‘উপার্জনের দু’পয়সা তোলাবাজির দু’কোটির থেকে অনেক বেশি দামি।’ অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজ আমি যেখানে আছি, নিজের দক্ষতা, সঠিক সুযোগ, দর্শক এবং সর্বোপরি সাংবাদিক ও মিডিয়ার সৌজন্যে। প্রত্যেক পেশায় কিছু ব্যতিক্রম থাকে। কিন্তু সমস্ত কিছুর জন্য নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ‘দু’পয়সার সাংবাদিক’ মন্তব্যের জন্য তীব্র ধিক্কার জানাই।’ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও মন্তব্য করেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি বলেছেন, ‘সাংবাদিকরা গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। আগামিদিনে সংবাদমাধ্যম এবং জনগণই এর সঠিক উত্তর দেবে।’

রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় প্রথমে বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও পরে বলেন, ‘সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সাংবাদিকদের সঙ্গে সুসম্পর্কে বিশ্বাসী। আমরাও তাই বিশ্বাস করি। তাই সাংবাদিকদের প্রতি এমন মন্তব্য শুনে খারাপ লাগছে। তবে একটা কথা বলতে পারি, এটা ওর ব্যক্তিগত কথা, দলের নয়।’ এর পর দলের তরফে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘তিনি কোনও পেশাকে ছোট করতে পারেন না। অন্তর থেকে তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে শেষে তৃণমূলের তরফে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রানিগঞ্জের সভা থেকে তিনি বলেন, ‘প্রেস, মিডিয়ার একটা ইজ্জত আছে। প্রেস, মিডিয়া আমাকে অনেক সাহায্য করে থাকে। কার কোথায় কী প্রয়োজন, তা তুলে ধরে সংবাদমাধ্যম।’ মহুয়া মৈত্রের নাম না করেও তিনি তাঁর বক্তব্যের সঙ্গে যে সহমত নন, তা বুঝিয়ে দেন।

এদিকে, তৃণমূল সূত্রে খবর, মহুয়াকে নিয়ে রাজ্য–রাজনীতি এবং সংবাদ মাধ্যম যখন সরগরম, তখন বিতর্ক এড়াতে অনেক সভাই এড়িয়ে চলতে শুরু করেছেন মহুয়া। আর এই ঘটনা শুরু হয়েছে সোমবার থেকে। ওইদিন নদিয়ার কালীগঞ্জের মাটিয়ারিতে তৃণমূলের সভার প্রধান বক্তা ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সভায় তিনি যাননি।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..