স্পোর্টস ডেস্ক: পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা কাতার বিশ্বকাপে ছন্দ হারিয়েছিল। অভ্যন্তরীণ কোচের অধীনে সেই ছন্দ এখনও খুঁজে পায়নি তারা। উল্টো লিড নেওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত আফ্রিকান দেশ সেনেগালের কাছে ৪-২ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে। উজ্জীবিত ফুটবল খেলে প্রথমবারের মতো ব্রাজিলকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে সেনেগাল। আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে জোড়া গোল করেছেন সাদিও মানে।
মঙ্গলবার (২০ জুন) রাতে পর্তুগালের লিসবনে দ্বিতীয় প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দল দুটি। এদিন প্রথমে এগিয়ে গেলেও এরপর রক্ষণের ভুল এবং আক্রমণভাগের সুযোগ মিসের মহড়ায় ব্রাজিলকে আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে।
এর আগের দেখায় ব্রাজিলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল সেনেগাল। ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরে দল দুটি মুখোমুখি হয়েছিল। সেটিই ছিল দুই দলের মধ্যকার প্রথম ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে হার ঠেকাতে পারলেও, দ্বিতীয় ম্যাচেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছে।
কাতার বিশ্বকাপের পর এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচে নেমেছে কোয়ার্টার থেকে বিদায় নেওয়া সেলেসাওরা। তার মধ্যে দুটিতেই তারা পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে। সেনেগালের মুখোমুখি হওয়ার আগে ব্রাজিল আরেক আফ্রিকান দেশ গিনির বিপক্ষে বার্সেলোনার মাঠে নেমেছিল। দুদিন আগের সেই ম্যাচে ৪-১ ব্যবধানে বড় জয় পেয়েছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র এবং রিচার্লিসনরা। কিন্তু এরপরই তারা আগের সেই বিভৎস রূপে হাজির হলেন।
ম্যাচের মাত্র সপ্তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে বক্সে আলগা বল পান ব্রাজিলের ব্রুনো গুইমারেস। তবে উড়িয়ে মেরে নিউক্যাসল ইউনাইটেডের এই মিডফিল্ডার ভক্তদের হতাশ করেন। তবে গোলের জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হয়নি তাদের। একাদশ মিনিটে বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ক্রসে ছয় গজ বক্সের মুখে লাফিয়ে হেডে দলকে এগিয়ে নেন লুকাস পাকুয়েতা।
পঞ্চদশ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েও বাইরে মারেন রিচার্লিসন। দুই মিনিট পর ভিনিসিয়ুস প্রতিপক্ষের বক্সে পড়ে গেলে প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি, তবে ভিএআরের সাহায্যে তিনি সিদ্ধান্ত বদলান। এরপর সমতায় ফেরে সেনেগাল। ২২তম মিনিটে ব্রাজিলের রক্ষণভাগ ঠিকমতো ক্রস ক্লিয়ার করতে পারেনি। আর তাতেই পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে বাঁ পায়ের জোরালো ভলিতে গোলটি করেন হাবিব দিয়ায়ো। প্রথমার্ধে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে দু’দল মাঠ ছাড়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের আর লিড নয়, সপ্তম মিনিটেই নিজেদের ভুলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। মানের ক্রসে দিয়ায়োর হেড ক্লিয়ার করার চেষ্টায় নিজেদের জালেই বল পাঠান ডিফেন্ডার মার্কিনিয়োস। এরপর সেনেগালের এগিয়ে যাওয়ার পালা। ৫৫তম মিনিটে অসাধারণ এক গোলে সেনেগালকে আরও এগিয়ে দেন মানে। শুরুতে গেয়ের শট এডারসন ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল পেয়ে বাঁকানো শটে তিনি বল জালে জড়ান। ফলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-১।
এরপর ম্যাচের ব্যবধান কমানো গোলটি করেন মার্কিনিয়োস। কর্নারের থেকে উড়ে আসা বল পিএসজির এই ডিফেন্ডার বুক দিয়ে নামিয়ে লব শটে ক্রসবার ঘেঁষে জালে পাঠান। বাকি সময়ে ম্যাচে ফিরতে মরিয়া চেষ্টা চালায় ব্রাজিল, কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি তারা। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পেয়ে যায় সেনেগাল। নিকোলাস জ্যাকসনকে এডারসন ফাউল করলে রেফারি শ্যুট আউট ডাকেন। সেখান থেকে সফল স্পট কিক নেন মানে। আর তাতেই সেনেগাল ৪-২ গোলের বড় এবং স্মরণীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।