1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প আসলে ভাঁওতা, বাংলায় তৃণমূল সরকারকে তীব্র কটাক্ষ রাজীবের

  • Update Time : রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১
  • ৩১৫ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা : রবিবার ডুমুরজলার সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল তাঁর। এই সভাতেই তাঁর হাত থেকে বিজেপির পতাকা তুলে নেওয়ার কথা ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বৈশালী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, প্রবীর ঘোষাল, পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষের। কিন্তু শুক্রবার দিল্লিতে ইজরায়েল দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে তাঁকে বঙ্গসফর বাতিল করতে হয়। তবে দলের কর্মসূচি স্থগিত হয়নি। শনিবার অমিত শাহের পাঠানো বিশেষ বিমানে দিল্লি গিয়ে এক ঝাঁক তৃণমূল নেতা ও নেত্রী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আর, রবিবারের সভায় তাঁর পরিবর্তে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। অবশ্য সেইজন্য নিজের বক্তব্য পেশ করা বন্ধ করে দেননি তিনি। মানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

‌‌এদিন দুপুরে দিল্লি থেকে ভার্চুয়াল ভাষণ দেন তিনি। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে বিজেপিতে নতুন আসা নেতাদের কথা। তিনি বলেন, ‘নবাগতদের বিজেপিতে যোগদানে বিজেপি অবশ্যই শক্তিশালী হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। এখন বাংলায় বিজেপির ভিত যথেষ্ট মজবুত। পশ্চিমবাংলার ক্ষমতা থেকে তৃণমূলকে সমূলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে বিজেপি।’ তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা। তিনি বলেন, ‘গত তিনমাস ধরে কেন একের পর এক নেতা তৃণমূল ছেড়ে দিচ্ছেন, তা মমতাদির একটু ভেবে দেখা উচিত। যাঁরা দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, তিনি শুধু তাঁদেরই দোষ দেখেন। কখনও নিজের দলের দোষ দেখেন না।’‌

এর পর তাঁর কথায় উঠে আসে রাজ্যে পালাবদলের কথা। অমিত শাহ বলেন, ‘১০ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গ থেকে যখন কমিউনিস্ট সরকারের অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় এলো, মমতাদিদি তখন রাজ্যে পরিবর্তনের স্লোগান দিয়েছিলেন। স্লোগান দিয়েছিলেন, মা মাটি মানুষের সরকার হবে। এখন ১০ বছর পিছন ফিরে দেখলে দেখা যায়, পুরোটাই মিথ্যে স্লোগান ছিল। এখন মা মাটি মানুষের স্লোগান অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। বদলে স্থান নিয়েছে স্বৈরশাসন, তোষণ আর তোলাবাজি। এখন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, কমিউনিস্টরা বাংলাকে যেখানে রেখে গিয়েছিলেন, তার চেয়েও অনেক নীচে রাজ্যকে নামিয়ে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সত্যি কথা বলতে কী, বাংলার মানুষ সেজন্য আপনাকে ক্ষমা করবে না।’

এর পরই জনসভার আকর্ষণ ছিলেন বিজেপিতে নবাগত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত তাঁকে সভার প্রধান বক্তা হিসেবে এদিন কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে উল্লেখ করা হয়েছে। আর প্রথম সভাতেই রাজীব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’ এবং ‘পাড়ায় সমাধান’কে তীব্র কটাক্ষ করেন। এদিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি দাবি করেন, বিজেপি নীলবাড়ি দখল করতে পারলে সরকার প্রথম দিন থেকেই ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি নেবে। কিন্তু কেন? তা হলে কি তিনি স্বীকার করে নিচ্ছেন যে, রাজ্যের এই দুটি প্রকল্পের গুরুত্ব বিজেপি স্বীকার করে নিচ্ছে? এর উত্তরও দিয়েছেন তিনিই। জানিয়েছেন, আসলে সরকার বুঝতে পেরেছে, দশ বছর ধরে মানুষের জন্য তারা কিছুই করেনি। স্বভাবতই মানুষের মন থেকে তারা এখন অনেক দূরে সরে গিয়েছে। তাই ভোটের মুখে মানুষের মন জয় করতেই এইসব করছে সরকার।

রাজীব বলেন, ‘ভোটের মুখে সরকারকে ‘দুয়ারে সরকার’ করতে হচ্ছে। তার মানে এতদিন মানুষের দুয়ারে যায়নি এই সরকার। এখন পাড়ায় পাড়ায় সমাধান করতে হচ্ছে। তার মানে এতদিন রাজ্য জুড়ে পাড়ায় পাড়ায় সমস্যা ছিল। মানে সব সমস্যা সরকার ও প্রশাসন জিইয়ে রেখে দিয়েছিল।’ এর পর তাঁর কথায় উঠে এসেছে সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প। এই প্রকল্পকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসাথী আসলে একটা ভাঁওতা। বলা হচ্ছে, প্রতি পরিবার ৫ লক্ষ টাকা কভারেজ পাবে। এক কোটি পরিবার যদি ৫ লক্ষ টাকা করে পায়, তবে কত টাকা হয়? ৫ লক্ষ কোটি টাকা।’ রাজীব প্রশ্ন তোলেন, ‘‌সরকারের বাজেট কত? স্বাস্থ্যসাথীর টাকা আসবে কোত্থেকে?’

সংখ্যালঘু প্রসঙ্গও উঠে আসে তাঁর কথায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে সংখ্যালঘুদের বিজেপির নামে ভয় দেখানো হয়। কিন্তু সংখ্যালঘুদের জন্য তারা কী করেছে? সংখ্যালঘুদের জন্য রাজ্যের শাসক দল কোনও কাজই করেনি। গত দশ বছরে তাঁদের কোনও উন্নয়নও হয়নি।’ নতুন করে ‘সোনার বাংলা’ গড়ার ডাক দিয়ে রাজীব বলেন, ‘‌আবার বদল আনতে হবে। দশ বছর আগে মানুষ যে আশা নিয়ে রাজ্যে পরিবর্তন এনেছিল, তা সফল হয়নি। মানুষের আশা পূরণ হয়নি। ‌আসলে ২০১১ সালে রাজ্যে প্রকৃত পরিবর্তন হয়নি। এবার হবে আসল পরিবর্তন। কেন্দ্রের সঙ্গে ঝগড়া করে রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। গত ৩৪ বছর ধরে বাম সরকার কেন্দ্রের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখেনি। ক্ষমতায় আসার পর সেই ধারা বজায় রাখল তৃণমূলও। বাংলায় এবার ডবল ইঞ্জিন সরকার হবে।’

বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। কিন্তু তিনি এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন। সংবাদ মাধ্যমের কাছে তাঁকে ‘ফেকু’, ‘বিশ্বাসঘাতক’, ‘গুরুত্বহীন’ বলেও উল্লেখ করেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি বা তাঁর দল কোনও নেতা বলে মনে করেন না বলে জানান। কিন্তু রাজীব যে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ করেছিলেন, তা কি সত্য? রাজীবের প্রশ্নের জবাব দেবেন না বলেও সৌগত শেষে বলেন, ‘প্রথমে সেচ দফতর ও পরে বন দফতরের মন্ত্রী থেকেছেন। এতদিন এই সব কথা বলেননি কেন?’ যদিও সৌগত রায়ের আক্রমণের জবাবে এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় সৌগত রায়ের আক্রমণ হাসিমুখে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

এদিনের সভায় অমিত শাহের পরিবর্তে দিল্লি থেকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। তিনি রীতিমতো তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘দিদি, গরিব মানুষের এত ক্ষতি কেন করলেন? আপনি বাংলার মানুষকে গ্যাস সিলিন্ডারও দিতে চাননি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী উজলা যোজনায় গ্যাস সিলিন্ডার দিয়েছেন।’ পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গও উঠে আসে স্মৃতি ইরানির কথায়। তিনি বলেন, ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনকে দিদি করোনা এক্সপ্রেস বলেছিলেন। আমি জানতে চাই, ভিনরাজ্যের শ্রমিকরা কি ভাইরাস? এ রাজ্য থেকে যাঁরা বাইরে কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁরা কি ভাইরাস? মমতা দিদি, আপনি মহাপাপ করেছেন। বাংলার মানুষ আপনাকে ক্ষমা করবেন না।’‌

এদিকে, মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপি নেতাদের দিল্লিতে বৈঠকে ডাকলেন অমিত শাহ। সেখানে বাংলায় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। বৈঠক হবে অমিত শাহের বাসভবনে। বৈঠকে থাকবেন শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী, বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং মুকুল রায়। ডাক পেয়েছেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। শনিবার ও রবিবারের বঙ্গ সফরে পশ্চিমবঙ্গের সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করার কথা ছিল শাহের। কিন্তু সেই সফর বাতিল হওয়ায় মঙ্গলবারের ওই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..