নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল থেকে পালানোর ১০ ঘণ্টা পর ধরা পড়েছে মিন্টু মিয়া (২৮) নামে এক কয়েদি। শনিবার দুপুর ২টার দিকে বাবুবাজার ব্রিজের নিচ থেকে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে আটক করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, শনিবার ভোররাত ৪টার দিকে দায়িত্বরত কারারক্ষীরা ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে পালিয়ে যায় মিন্টু মিয়া। এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য একজন ইনচার্জসহ তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার হাটবাইয়ান গ্রামের আজহার আলীর ছেলের মিন্টু মিয়া। গত ৫ আগস্ট গোপালপুর থানায় হওয়া একটি মাদক মামলার আসামি সে। চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেলা কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত শুক্রবার রাতে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। মানসিক সমস্যা থাকার পাশাপাশি শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিল সে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের (কেরানীগঞ্জ) জেলার মাহবুবুল ইসলাম জানান, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার পাশাপাশি মানসিক সমস্যায় ভুগছিল হাজতি কয়েদি মিন্টু মিয়া। গত শুক্রবার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কারা তত্ত্ববধানে তাকে মিটফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ সময় তার তত্ত্ববধানে দুজন করারক্ষী ছিল। শনিবার ভোরের দিকে ওই কারারক্ষীরা ঘুমিয়ে গেলে পালিয়ে যায় মিন্টু মিয়া। পরে হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় শনিবার দুপুর ২টার দিকে বাবুবাজার ব্রিজের নিচ থেকে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জন্য একজন ইনচার্জসহ তিন কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলার আরও জানান, পালিয়ে যাওয়ার পরপরই তাকে আটকের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। টাঙ্গাইলে নিজের বাড়ি ছাড়াও গাজীপুরে শ্বশুরবাড়িতে খোঁজ নেওয়া হয়। এ ছাড়া রাজধানীর সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় তাকে খোঁজ করা হয়। আমাদের ধারণা ছিল মানসিক সমস্যা থাকায় সে পালিয়ে বেশিদূর যেতে পারবে না। শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে। হ্যান্ডকাফ পরে বাবুবাজার ব্রিজের নিচ দিয়েই ঘোরাফেরা করার সময় তাকে আটক করা হয়।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার (কেরানীগঞ্জ) সিনিয়র জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী জানান, শনিবার ভোররাতে কারারক্ষীরা দায়িত্ব পালনকালে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় আসামি মিন্টু মিয়া পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় দায়িত্বে থাকা তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে পালানোর ঘটনায় রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বরখাস্ত হওয়ারা হলেন- সহকারী প্রধান কারারক্ষী ও ইনচার্জ মোবারক মিয়া এবং কারারক্ষী কামরুল ইসলাম ও আব্দুল আলিম।
মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী মো. রাশীদ-উন-নবী জানান, হাসপাতালের দুই নম্বর ভবনের মেডিসিন বিভাগের ছয়তলায় কারারক্ষীদের পাহারায় চিকিৎসাধীন ছিল মিন্টু। সে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ছিল। শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে এখানে ভর্তি করা হয়। এর আগে কারারক্ষীরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে সেখান থেকে মিটফোর্ডে স্থানান্তর (রেফার্ড) করা হয়। তবে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি।