আন্তর্জাতিক ডেস্ক: তিব্বতের নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা বলেছেন, তিনি ১৩০ বছরের বেশি বাঁচবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। তার এই প্রত্যাশা আগের করা ভবিষ্যদ্বাণীর তুলনায় দুই দশক বেশি।
শনিবার ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় হিমাচল প্রদেশে ভক্তদের আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিজের বেঁচে থাকার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন দালাই লামা। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন পালন করা হবে রোববার। তার আগে তিব্বতের এই নির্বাসিত আধ্যাত্মিক নেতার দীর্ঘায়ু কামনা করে শনিবার ভক্তরা ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
এর আগে, গত বুধবার দালাই লামা তার মৃত্যুর পর একজন উত্তরসূরি থাকবেন বলে নিশ্চিত করেন। ভারতের হিমাচল প্রদেশে ধর্মীয় নেতাদের এক সমাবেশে এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্বজুড়ে ৬০০ বছরের পুরোনো দালাই লামা প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আশ্বস্ত করেন তিনি।
কিন্তু দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন নিয়ে বাগড়া দিয়েছে চীন। বেইজিং জোর দিয়ে বলছে, দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচন করবে চীন। গত বছরের ডিসেম্বরে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দালাই লামা বলেছিলেন, তিনি সম্ভবত ১১০ বছর বাঁচবেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন পর্যন্ত বৌদ্ধধর্ম ও তিব্বতের বাসিন্দাদের সেবা করতে সক্ষম হয়েছি।’’ দালাই লামা বলেন, এবং তারপরও আমি আশা করি, ১৩০ বছরের বেশি বাঁচব। তার এমন প্রত্যাশার কথা শুনে ভক্তরা করতালি দেন ও উল্লাসে মেতে ওঠেন।
তিব্বতি বৌদ্ধধর্মের সবচেয়ে দীর্ঘায়ু প্রধান চতুর্দশ দালাই লামা। শনিবার উত্তরের ভারতের ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত প্রার্থনায় প্রায় ৯০ মিনিট কাটিয়েছেন। ১৯৫৯ সালে চীনের শাসনের বিরুদ্ধে ব্যর্থ বিদ্রোহের পর তিব্বত ত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকে ভারতেই বসবাস করছেন দালাই লামা।
সেখানে দেওয়া তার বক্তৃতা একসঙ্গে ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষায় অনূবাদ করে প্রচার করা হয়। এতে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আমাদের দেশ হারিয়েছি এবং ভারতে নির্বাসনে বাস করছি। তবে আমি মানুষের অনেক উপকার করতে পেরেছি। তাই ধর্মশালায় বাস করে আমি যতটা পারি মানুষ ও ধর্মের সেবা করে যাবো।’’
তিব্বতে নিয়ন্ত্রণ দৃঢ় করতে চাওয়া চীন দালাই লামাকে বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে দেখে। বেইজিং জোর দিয়ে বলেছে, দালাই লামার উত্তরসূরি নির্বাচনে চীনের নেতাদের অনুমোদন লাগবে।
দালাই লামা আগে বলেছিলেন, তিনি চীনের বাইরে ‘মুক্ত বিশ্বে’ পুনর্জন্ম নেবেন। চলতি সপ্তাহে বক্তদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তার পুনর্জন্ম স্বীকৃতির একমাত্র কর্তৃত্ব নিজের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান গাদেন ফোড্রাং ট্রাস্টের কাছে রয়েছে।
‘‘অনেক ভবিষ্যদ্বাণী দেখে আমার মনে হয়, আমি ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেয়েছি। আমি এ পর্যন্ত আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমি অন্তত আরও ৩০ থেকে ৪০ বছর বাঁচতে পারব বলে আশা করছি।’’
রোববার দালাই লামার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ভারতের উচ্চপদস্থ মন্ত্রী ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি তার হাজার হাজারও সেখানে উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: রয়টার্স।