ইমরান ইমন:
করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মধ্যেই দেশে দেশে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন ভুল তথ্য, অদ্ভুত গুজব। যার বেশ কিছু একেবারেই ভ্রান্ত, মনগড়া। নেই বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তিও।
গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাস তার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে গেলেও অনেকেরই ধারণা, বসন্তে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব করোনাভাইরাসও মারা যাবে।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্দি কাশি ও ফ্লু ভাইরাস শীতকালে বেশি ছড়ালেও অন্যান্য সময়েও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি তাপমাত্রাতেও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব নয়।
কিছুদিন পূর্বে আমাদের দেশে গুজব উঠেছে আদা মিশ্রিত রং চা খেলে,কালো জিরা খেলে নাকি করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত হওয়া যাবে।
কি অদ্ভুত গুজব!কি অদ্ভুত লৌকিকতা! যার কোন বৈজ্ঞানিক বা যৌক্তিক ব্যাখ্যা নেই।
এদিকে অনেকেরই ধারণা, ত্বকে ক্লোরিন ও এলকোহল স্প্রে করলে ভাইরাসের মৃত্যু হয়।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্যানিটাইজার ব্যতিত শুধু ক্লোরিন ও এলকোহল ত্বকের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব রাসায়নিক ত্বকের ভাইরাস মারতে সক্ষম নয়।
এছাড়া ব্লিচিং দিয়ে কুলকুচা করলে করোনা ভাইরাস এড়ানো যায় বলে যারা মনে করেন তা একেবারেই সঠিক নয়। বরং এ ক্ষারক মারাত্মক বিপর্যয় বয়ে আনতে পারে।
অনেকেই মনে করেন, গরম পানির সঙ্গে লেবু মিশিয়ে পান করলে করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে লেবু পানি, ভিটামিন সি, রসুন কিংবা কোনো ঘরোয়া ওষুধই করোনা প্রতিরোধে সক্ষম নয়, বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু এসব ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী থাকে।
শিশুরা কোভিড নাইন্টিনে আক্রান্ত হয় না বলেও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে চারিদিকে।অথচ ভারতের তেলেঙ্গানায় আজকে ২৩ দিনের একটি শিশু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গবেষণায় দেখা গেছে সব বয়সী ব্যক্তিরই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কেবল শিশুদের ইমিউন সিস্টেমের কারণে উপসর্গগুলো কম দেখা যায় বলে জানান গবেষকরা।
পোষা কুকুর ও বিড়াল থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর মিথ থাকলেও তা সত্য নয়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
লেখক: ইমরান ইমন
শিক্ষার্থী: ইংরেজি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।