ফাতেমা ফেরদৌস রেসিম
আমার খালাতো ভাই আমার চেয়ে ১৫ বছরের ছোট।সেই ছোট্ট বেলা থেকে আমাকে খুব ভয় পেতো, শুধু সে না, আমার সব ভাই বোন বা কাজিনরাও।কারন আমি সবার বড়, সেই সাথে তারা যথেষ্ট সন্মানও করতো আমাকে।যাই হোক , ৫/৬ বছর আগে সে লন্ডন আসছে।এখানে আপন বলতে তার চাচা ফুপু থাকলেও কিছুদিন পর সে আমার কাছে চলে আসে।পরে তার বিয়ে হয়, আমিও তার মায়ের ভূমিকায় সব কিছু করি।মোট কথা তার বউ থেকে শুরু করে শ্বশুর বাড়ীর সবাই আমাকে তার মায়ের মতই ভাবেন সন্মান করেন।এমন কি তার নিজের মা মানে আমার খালাও জানেন যে আমি যদি কিছু বলি সে কথা উল্টাবেনা রাখবে।
তার বিয়ের কয়েক মাস পরে সে চুলে লালটি রং করলো।আমার ভাইয়ের বউয়ের এই রং করাটা মোটেও পছন্দ হয়নি।কয়েকবার তাকে বললো কালার বদলাতে কিন্তু ভাই শুনলো না।এমন কি বউ দেশে শ্বাশুড়ীকে মানে আমার খালাকে বিচার দিলো চুলের রং পরিবর্তন করতে, কিন্তু কোনো ভাবেই কিছু হলোনা।কারোও কথা শুনলো না।তখন ভাইয়ের বউ আমাকে ফোন দিয়ে বললো, আমি বললাম ঠিক আছে আমার ঘরে যখন আসবে তখন বোঝাবো।এদিকে বলে রাখি, আমার ভাইয়ের একটা মূদ্রাদোষ আছে: কথায় কথায় “বাল” খুব বলে।কদিন পর ভাই আর তার বউ এলো আমার ঘরে।আমি তো তাকে দেখে সত্যিই ভয় পেয়ে গেলাম কারন তার চুলের রং এ তাকে ভিষন ভয়ংকর লাগছে।মোটেও খাটেনি, আমি তাকে বললাম…..এসব কি রং লাগাইছো? তোমারে তো পুরা ভূত মনে হচ্ছে… বলতেই সে বললো.. “লাল আপু তুমিও? ভাবছিলাম তুমি বুঝবা আমাকে।চুলের রং নিয়ে কিছু বলবা না।( একটু মন খারাপ আর অভিমানের সুরে) তুমিও শুরু করে দিছো সবার মতো, বালের চুল আমি আর রাখমুই না, বাল কাইট্টা ফালামু।
“ আমি বললাম ……. “তোরে আমি বাল কাটতে বলি নাই। চুলের রং বদলাতে বলছি???? “ কি বলবো ভাই জিব্হায় কামড় দিয়ে অন্য রুমে চলে গেলো, এরপর আর কোনোদিন তার মুখে “বাল” কথাটা শুনিনি???? পরে অবশ্য চুলের কালার বদলে ছিল ।
লেখিকা: ফাতেমা ফেরদৌস রেসিম,লন্ডন।