বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ–উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের আস্ফালনই সার হল। বুধবার তিনি কার্যত পিছু হটে জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তাঁর কথা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা অনভিপ্রেত। বরং এই দুঃসময়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে একযোগে তিনি কাজ করতে চান বলে জানিয়ে দেন। ফলে সহ–উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবন–নবান্নের সঙ্ঘাত আপাতত মিটে গেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য পদে নিয়োগ করার জন্য নিজেদের মনোনীত প্রার্থীর নাম রাজভবনে পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন বলে অভিযোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরিবর্তে অধ্যাপক গৌতম চন্দ্রকে সহ–উপচার্য হিসেবে নিয়োগ করে নির্দেশিকা জারি করে দেন রাজ্যপাল। কিন্তু সেই নির্দেশিকা যে রাজ্য সরকার মানবে না, সে কথা শিক্ষামন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন। শুধু তাই নয়, তিনি এ কথাও বলেছিলেন, বিজেপির লোককে ওই পদে বসাতে চাইছেন রাজ্য সরকার।
পার্থবাবুর এই মন্তব্যকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে তাঁর নির্দেশিকা মানা না হলে কড়া আইনি পদক্ষেপ করার ইঙ্গিতও দেন তিনি। জবাবে পার্থবাবুও অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘মস্তানের মতো কথা বলছেন রাজ্যপাল।’ মঙ্গলবার বিতর্কের মাঝে সরকার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ–উপাচার্য পদে আশিস পাণিগ্রাহীকে নিয়োগ করে দেয়। আশিসবাবু দায়িত্বভার গ্রহণও করেন। এর পরই শোনা যায়, বুধবার রাজ্যপাল সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের বক্তব্য জানাবেন। কিন্তু এদিন দেখা যায়, রাজ্যপালের বাগাড়ম্বরই সার হয়েছে। বরং বিষয়টি নিয়ে তিনি যে পিছু হটেছেন, তা পরিষ্কার হয়ে যায় তাঁর বক্তব্যে।
এদিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় বলেন, ‘আমার সঙ্গে আজ সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে। এই সময় রাজ্য একটা সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলেছে। তাই আমি এই বিতর্ককে দীর্ঘ করতে চাই না। আমি চাই এই বিতর্কের এখানেই শেষ হোক।’ সহ–উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্যপাল ও শিক্ষামন্ত্রীর দ্বন্দ্বও চরমে উঠেছিল। সেই বিতর্কে এদিন রাজ্যপাল নিজেই জল ঢেলে দেন। বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মন্ত্রিসভায় আমার একমাত্র বন্ধু যদি কেউ থেকে থাকেন, তিনি হলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।’