নিজস্ব প্রতিবেদক: র্যাব সদর দফতরে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলাটি করেছেন তার স্ত্রী ইশরাত রহমান (২৫)। মামলায় তিনি সাকিবের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মারধরের অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে সাকিবের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী বাদী হয়ে মামলাটি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন রমনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম। রমনা থানার ওসি বলেন, ইশরাত রহমান নামের এক নারী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্যাতন, ভ্রুণ হত্যা ও যৌতুকের অভিযোগ তুলে মামলা করেছেন। আমরা মামলাটির তদন্ত করে দেখব।
রমনা থানা সূত্র জানায়, ওই নারী অভিযোগপত্রে তার স্বামী নাজমুস সাকিব, শ্বশুর সফিউল্লাহ তালুকদার (৬০) ও শাশুড়ি খালেদা সুলতানাকে (৫২) অভিযুক্ত করেছেন। অভিযোগে বলা হয়, নাজমুস সাকিবের (৩৪) সঙ্গে ইশরাত রহমানের ২০১৭ সালের মার্চে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর মো. সফিউল্লাহ তালুকদার, শাশুড়ি খালেদা সুলতানা তাদের যৌতুকলোভী এবং অত্যাচারী মনোভাব প্রকাশ করতে থাকেন। আসামিরা বিভিন্ন সময় ইশরাতকে তার বাবার কাছ থেকে নগদ টাকা এনে দিতে চাপ দিতে থাকেন। টাকা না দিলে সকল আসামি মিলে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের ভয়ে তিনি তার বাবার কাছ থেকে প্রায়ই নগদ টাকা এনে আসামিদের দিতেন। এ ছাড়া অভিযুক্তদের চাহিদা মোতাবেক তাদের বাসার সকল আসবাবপত্র ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী ইশরাতের বাবা দিতে বাধ্য হন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, অভিযুক্তরা তাদের বাড়ি দোতলা করার জন্য ইশরাতের বাবার কাছে ১২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এ টাকা দিতে না পারায় তারা ইশরাতের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালাতে থাকেন। ওই সময় ইশরাত গর্ভবতী হলে তার ওপর আসামিদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তারা তালাকের ভয় দেখিয়ে ইশরাতকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন। ইশরাত অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। একপর্যায়ে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইশরাতের স্বামী নাজমুস সাকিব জোর করে ঢাকার মগবাজারে অবস্থিত রাশমনো হাসপাতালে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তালাকের ভয় দেখিয়ে গর্ভপাত করান।
ইশরাত রহমান বলেন, আমি আমার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এর ন্যায়বিচার চাই। সে আমাকে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোন কলসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভিন্ন রকম হুমকি দিচ্ছে। র্যাব বাহিনী দিয়ে আমাদের পরিবারের সবাইকে ক্রসফায়ার করার হুমকি দিচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার প্রতি মুহূর্তে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এএসপি নাজমুস সাকিবের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
র্যাব সদর দফতরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, অবশ্যই আমরা বিষয়টি অবগত আছি। এটা একান্তই নাজমুস সাকিব ও তার পরিবারের পারিবারিক একটি দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বটার ব্যাপারে সে আমাদের আগে অবগত করেছিল এবং আমরা এটাকে পারিবারিকভাবে সমন্বয় করার জন্য বলেছিলাম। আমরা তার বিষয়টি খতিয়ে দেখব বলে কথা দিচ্ছি। নাজমুস সাকিবকেও তার স্ত্রী মারধর করেছে। সে চারবার জিডিও করেছে। সেই ছবি ও মেডিকেল কাগজ তার কাছে রয়েছে। তারপরও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।