আতা মোহাম্মদ উবায়েদ ( ভ্রমন বিষয়ক লেখক ও সাহিত্যিক) করিমগঞ্জের বালিখলা থেকে:
হাওরসমৃদ্ধ জেলা কিশোরগঞ্জ । বর্ষাকালে হাওর হয়ে উঠে সৌন্দর্যের এক নতুন দিগন্ত। বিভিন্ন হাওর পয়েন্টে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ।
‘বালিখলা বেড়িবাঁধ’ এখন হাওরজেলা কিশোরগঞ্জের নতুন আকর্ষন।
নীল আকাশ ও জলের এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন তৈরি হয়েছে এই বালিখলা বেড়িবাঁধে। করিমগঞ্জ উপজেলার নতুন সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে খুব দ্রুত ভ্রমণপ্রেমি মানুষের মন জয় করেছে এ জায়গাটি। জলের কাছাকাছি আর ঢেউয়ের সান্নিধ্যে মন ভেজাতে বালিখলা বেড়িবাঁধে ছুটে আসেন বহু ভ্রমণপ্রেমি। করিমগঞ্জের নিয়ামতপুরের রৌহা দিয়ে বালিখলা বাজারে পৌছাঁতে নতুন পিচঢালা পথ উন্মোচিত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে বালিখলা বেড়িবাঁধের বিভিন্ন সৌন্দর্য তুলে ধরেছেন অনেকেই। এরপর থেকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমাচ্ছেন। রৌহা থেকে বালিখলা বাজারে পৌঁছানোর যে রাস্তা তার দু’পাশের সৌন্দর্যই পর্যটকদের বেশি আকর্ষিত করে। মনে হয় সমুদ্রের মাঝে সরু রাস্তার দু’ধারে অথৈ জল রাশি। আর মাঝ হাওরে নৌকা আর ঢেউয়ের দোলে দূর থেকে একেকটি গ্রামকে একেকটি দ্বীপ মনে হয়।
নতুন সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বালিখলা বেড়িবাঁধ দেশের মধ্যে পর্যটনে মডেল হতে পারে। অনেকেই এখানে এসে স্থানটিকে মিনি কক্সবাজার বলে অভিহিত করছেন। দিনে দিনে যেন বেড়েই চলেছে বালিখলা বেড়িবাঁধের জনপ্রিয়তা। ভ্রমণপ্রেমি মানুষ আপনমনেই স্থানটিকে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। প্রকৃতির খোলা হাওয়ায় যতদূর চোখ যায় শুধু অথৈ জলরাশি ও তার কলকল শব্দে যেন সবাই অভিভূত। কথা হয় বালিখলা বেড়িবাঁধে ঘুরতে আসা একজন প্রকৃতিপ্রেমি জানালেন, কিশোরগঞ্জে হাওরাঞ্চলে পর্যটনের সম্ভার রয়েছে। শুধু সরকারি উদ্যোগে সেটিকে সজ্জিত করা গেলেই দেশ-বিদেশের পর্যটকদের ঢল নামবে হাওরাঞ্চলে। অন্যদিকে নতুন কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
বালিখলা বেড়িবাঁধে কিভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে ট্রেন বা বাসযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা সদরে পৌছাঁতে হবে। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে বালিখলায় যাতায়াত খুব সহজ। শহরের একরামপুর থেকে সিএনজি বা অটোরিকশায় নিয়ামতপুরের রৌহায় যেতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ৭০/৭৫ টাকা। নিয়ামতপুরের রৌহায় নেমে অটোরিকশায় বালিখলা বেড়িবাঁধে যেতে ১০/১৫ মিনিট সময় লাগবে। সবমিলিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে ঘন্টাখানেক সময় লাগবে। তবে সেখানে ভাল কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। সাথে করে শুকনো খাবার ও পানি নিতে পারেন।
কোথায় থাকবেন ও খাবেন: দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারা আসবেন, হাওর ভ্রমণ শেষে শহরের সার্কিট হাউস বা আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। কিশোরগঞ্জে শহরে বেশ কিছু ভালমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। শহরে ভালমানের বিভিন্ন ছোট বড় খাবার হোটেল, চাইনিজ ও মিনি চাইনিজও রয়েছে।