1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. Azharislam729@gmail.com : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  4. bobinrahman37@gmail.com : Bobin Rahman : Bobin Rahman
  5. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  6. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  7. harun.cht@gmail.com : চৌধুরী হারুনুর রশীদ : চৌধুরী হারুনুর রশীদ
  8. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan : Rakibul Hasan
  9. msharifhossain3487@gmail.com : Md Sharif Hossain : Md Sharif Hossain
  10. humiraproma8@gmail.com : হুমায়রা প্রমা : হুমায়রা প্রমা
  11. dailyprottoy@gmail.com : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  12. namou9374@gmail.com : ইকবাল হাসান : ইকবাল হাসান
  13. mohammedrizwanulislam@gmail.com : Mohammed Rizwanul Islam : Mohammed Rizwanul Islam
  14. hasanuzzamankoushik@yahoo.com : হাসানুজ্জামান কৌশিক : এ. কে. এম. হাসানুজ্জামান কৌশিক
  15. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  16. niloyrahman482@gmail.com : Rahman Rafiur : Rafiur Rahman
  17. Sabirareza@gmail.com : সাবিরা রেজা নুপুর : সাবিরা রেজা নুপুর
  18. prottoybiswas5@gmail.com : Prottoy Biswas : Prottoy Biswas
  19. rajeebs495@gmail.com : Sarkar Rajeeb : সরকার রাজীব
  20. sadik.h.emon@gmail.com : সাদিক হাসান ইমন : সাদিক হাসান ইমন
  21. safuzahid@gmail.com : Safwan Zahid : Safwan Zahid
  22. mhsamadeee@gmail.com : M.H. Samad : M.H. Samad
  23. Shazedulhossain15@gmail.com : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু
  24. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  25. showdip4@gmail.com : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
  26. shrabonhossain251@gmail.com : Sholaman Hossain : Sholaman Hossain
  27. tanimshikder1@gmail.com : Tanim Shikder : Tanim Shikder
  28. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :
  29. Fokhrulpress@gmail.com : ফকরুল ইসলাম : ফকরুল ইসলাম
  30. uttamkumarray101@gmail.com : Uttam Kumar Ray : Uttam Kumar Ray
  31. msk.zahir16062012@gmail.com : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আরও প্রভাবশালী হচ্ছে রাশিয়া? - দৈনিক প্রত্যয়

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আরও প্রভাবশালী হচ্ছে রাশিয়া?

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২
  • ৩৬৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়ায়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-সহ পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে আরোপ করা হয় একের পর এক নিষেধাজ্ঞা।

এসব নিষেধাজ্ঞায় রুশ অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পশ্চিমা অনেক সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হলেও আসলে কি ঘটছে? নিষেধাজ্ঞা কি আসলেই রুশ অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারছে? নাকি নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বিশ্বে আরও প্রভাবশালী হয়ে উঠবে রাশিয়া।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বসবাস করেন ২৩ বছর বয়সী আলেকজান্ডার। পেশায় স্থানীয় একটি আর্ট মিউজিয়ামের কর্মী আলেকজান্ডারের জীবন বেশ ভালোভাবেই জটিল করে তুলেছে পশ্চিমাদের আরোপিত বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা।

জিনিপত্রের ক্রমবর্ধমান দাম তাকে তার দৈনন্দিন খরচ কমাতে বাধ্য করেছে। এমনকি বিল পরিশোধ-সহ জীবনযাপনে সহায়তার জন্য নিজের নিয়মিত কাজের বাইরে তাকে একটি বাড়তি কাজও খুঁজে বের করতে হয়েছে। তবুও আলেকজান্ডার আশাবাদী যে, পশ্চিমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো দীর্ঘমেয়াদে রাশিয়ার জন্য কিছু অপ্রত্যাশিত সুবিধা বয়ে আনবে।

নিজের নামে শেষাংশ উল্লেখ করতে অনিচ্ছুক এই যুবক বলছেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা যেন আমাদের সামনে আরও সুযোগ এনে দিয়েছে এবং আমাদের দেশকে এটিই মনে করিয়ে দিয়েছে, রাশিয়া তার নিজস্ব পণ্য উৎপাদন করতেও সক্ষম। এটি সম্ভবত নতুন এবং ইতিবাচক কিছুর দরজা খুলতে পারে।’

গত ছয় মাসে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো বহির্বিশ্বের সাথে রাশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করেছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মাত্র তিন দশকের মধ্যেই রাশিয়া খুব সহজে বৈশ্বিক পুঁজিবাদের বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছিল।

যদিও এই সময়ে মস্কো এবং পশ্চিমের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক প্রায় সময়ই উত্তেজনাপূর্ণ থাকলেও উভয়ের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল বেশ শক্তিশালী। মধ্যবিত্ত রাশিয়ানরা সহজেই ইউরোপে ফ্লাইট বুক করতে বা স্মার্টফোন থেকে জিন্স পর্যন্ত সর্বশেষ পশ্চিমা বিভিন্ন পণ্য কিনতে পারতেন। এছাড়া বিদেশে অর্থ প্রেরণ বা গ্রহণসহ মৌলিক আর্থিক কর্মকাণ্ডও রাশিয়ানরা কয়েক মিনিটের মধ্যে করতে পারতেন।

তবে বর্তমান বাস্তবতায় এখন সেই যুগ যেন চিরকালের জন্য শেষ হতে পারে। ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে ক্রেমলিনের সিদ্ধান্তের পর যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ ও এশিয়ায় ওয়াশিংটনের মিত্ররা দ্রুতই রাশিয়ার অর্থনীতির বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব সব নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে।

এসব দেশের গৃহীত কিছু পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার আর্থিক রিজার্ভের প্রায় অর্ধেক হিমায়িত করা, দেশের বেশ কয়েকটি বৃহত্তম ব্যাংককে সুইফট পেমেন্ট সিস্টেম থেকে বহিষ্কার করা, রাশিয়ান জাহাজ এবং বিমানগুলোকে তাদের বন্দর ও আকাশসীমায় প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা, কিছু উন্নত প্রযুক্তির ওপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রবর্তন এবং কার্যকর করা। এছাড়া রাশিয়ান তেল ও কয়লার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি তো রয়েছেই।

একইসঙ্গে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ এক্সিকিউটিভ লিডারশিপ ইনস্টিটিউটের ডাটাবেস অনুসারে, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ১২০০টিরও বেশি বিদেশি কোম্পানি রাশিয়ায় তাদের কার্যক্রম হয় স্থগিত করেছে বা না হয় কমিয়ে দিয়েছে। এই তালিকায় থাকা বড় নামগুলোর মধ্যে অ্যাপল, ম্যাকডোনাল্ডস, আইকেইএ, ভিসা এবং মাস্টারকার্ডের মতো ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে।

এখন পর্যন্ত নতুন নিষেধাজ্ঞার এসব পদক্ষেপ রাশিয়ার জন্য মিশ্র ফলাফল বয়ে এনেছে। একদিকে, রাশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে ৪ শতাংশ কমেছে। যা বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৭ শতাংশে পৌঁছাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া নতুন সরবরাহ বিধিনিষেধ রাশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতিকে ডাবল ডিজিটে উঠিয়ে দিয়েছে। একইসঙ্গে রাশিয়ার আমদানির প্রয়োজন হয় এমন বিভিন্ন উপাদান থেকে মস্কোকে বঞ্চিত করার মাধ্যমে রাশিয়ান নির্মাতাদের ক্ষতিগ্রস্তও করা হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রাশিয়ার গাড়ি উৎপাদন বিস্ময়করভাবে ৬১.৮ শতাংশ কমে গেছে।

অনেক রুশ কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, মাইক্রোচিপের মতো নির্দিষ্ট উচ্চমানের ইলেকট্রনিক উপাদানগুলোর বিকল্প খুঁজে পাওয়া মস্কোর জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে। কারণ পশ্চিমা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এসব পণ্য এখনও অত্যধিক উন্নত।

অন্যদিকে অনেকের প্রাথমিক অনুমান সত্ত্বেও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রাশিয়ান অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করেছে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে এবং মার্চের শুরুতে রুশ অর্থনীতি ৩০ শতাংশেরও বেশি মূল্য হারানো সত্ত্বেও রাশিয়ার মুদ্রা রুবল বছরের সেরা-কার্যকারি মুদ্রায় পরিণত হয়েছে।

এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ায় মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। গত এপ্রিলে রাশিয়ার মুদ্রাস্ফীতি সর্বোচ্চ ১৭.৮ শতাংশ থেকে আগস্টে ১৪.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এদিকে রাশিয়ার চলতি অ্যাকাউন্টের উদ্বৃত্ত জানুয়ারি থেকে জুলাইয়ের মধ্যে রেকর্ড সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার বেড়েছে। যা এক বছর আগের তুলনায় তিনগুণ বেশি।

এখনও পর্যন্ত রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপ করা নিষেধাজ্ঞাগুলো অন্তত মস্কোর জীবনকে ম্লান করতে খুব বেশি কিছু করতে পারেনি। রাশিয়ার রাজধানীর বার্ষিক রাস্তা সংস্কার কর্মসূচিতে বেশ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। মস্কোর ডাউনটাউন রেস্তোরাঁ, বার এবং ক্যাফেগুলো উচ্ছ্বসিত জনসমাগমে পূর্ণ। শপিং মলগুলোও একইভাবে লোকে ভরা। যদিও অনেক পশ্চিমা মালিকানাধীন দোকান কয়েক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। মুদি দোকানে ঘুরলেও একই চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।

মস্কো আর্ট মিউজিয়ামের কর্মী আলেকজান্ডার বলছেন, ‘মানুষ ক্রমাগত উদ্বিগ্ন বোধ করে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে; তাই তারাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। রেস্তোরাঁয় খাবার এবং প্রকৃতির বিষয়ে আমি খুব কম লোককেই তাদের নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখি। তাদের কাছে আগের তুলনায় কম টাকা থাকতে পারে, কিন্তু এখনও (আনন্দে থাকার মতো) কিছু বিষয় আছে।’

২০২২ সালে রাশিয়ার অর্থনীতি নিয়ে গত মাসে বেশ ভালো ভবিষ্যদ্বাণী করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সেখানে তারা বলেছে, রাশিয়ার জিডিপি ৮.৫ শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে। এটি এখনও বেশ উল্লেখযোগ্য একটি পতন, তবে ভয়ানক প্রাথমিক পূর্বাভাসের তুলনায় অনেক কম।

মস্কোভিত্তিক ক্রেডিট অ্যাসেসর এক্সপার্ট আরএ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ আন্তন তাবাখ আলজাজিরাকে বলেছেন, নতুন করে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের প্রথম ছয় মাসে দু’টি বিষয় রুশ অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছে। প্রথমটি হচ্ছে- (নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও) বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার পণ্য রপ্তানি, বিশেষ করে জ্বালানি রপ্তানি অব্যাহত থাকা।

মস্কোর একটি সরকারি নথি অনুসারে, রাশিয়া চলতি বছর তার জ্বালানি বিক্রয় থেকে ৩৩৭ বিলিয়ন বা ৩৩ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার বেশি আয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। যা ২০২১ সালের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি।

রুশ সরকারের ওই নথিটি বার্তাসংস্থা রয়টার্স দেখেছে। আর রুশ অর্থনীতি টিকে থাকার দ্বিতীয় কারণটি হলো- সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি।

আরএ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ আন্তন তাবাখ বলছেন, বিশ্বব্যাপী চাহিদা হ্রাস এবং নতুন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার কারণে রাশিয়ার রপ্তানি বৃদ্ধি সম্ভবত শীর্ষে পৌঁছেছে। একই সময়ে রাশিয়ার আমদানি চলতি বছরের শুরুতে তীব্র পতনের মুখে পড়লেও ধীরে ধীরে সেটি আবারও আগের জায়গায় ফিরতে শুরু করেছে। রুশ এই উত্থানের পেছনে প্রধান চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে রুবলের স্থিতিশীলতা এবং উন্নত পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন।

তাবাখ বলছেন, ‘এখন মূল প্রশ্ন হলো রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে কাঠামোগত রূপান্তরের প্রক্রিয়ার কথা বলছে সেটি কিভাবে রাশিয়ার অর্থনীতির মধ্যে মানিয়ে নেবে। আমরা ভোক্তাদের নতুন পণ্য ব্যবহারে অভ্যস্ত করা, নতুন সাপ্লাই চেইন এবং আর্থিক মধ্যস্থতাকারীদের উত্থান ও নতুন বিধিনিষেধের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া সংস্থাগুলোর কথা বলছি। আমার অনুমান এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমান অনুসারে, আমরা বর্তমানে এই প্রক্রিয়ার সবচেয়ে কঠিন পর্যায়ে আছি, যা নয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।’

অন্যদিকে বিদেশি নিষেধাজ্ঞাগুলো কিছু রাশিয়ান উদ্যোক্তাদের কাছে সুযোগের একটি অপ্রত্যাশিত উৎস হয়ে উঠেছে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসার মালিকদের জাতীয় সমিতি ‘অপোরা রাশিয়ার’ ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকোলাই ডুনায়েভ বলছেন, রাশিয়া থেকে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাপকভাবে চলে যাওয়া দেশীয় কোম্পানিগুলোর জন্য নিজেদের বাজারের অংশীদারিত্ব প্রসারিত করার সুযোগ তৈরি করেছে — বিশেষ করে খাদ্য পণ্যের মতো খাতগুলোর পাশাপাশি প্রসাধনী, পোশাক, পর্যটন এবং নির্মাণখাতে ব্যবসা প্রসারের সুযোগ অনেক বেশি সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলছেন, ‘ভোক্তাদের মধ্যে সামগ্রিকভাবে পণ্যের চাহিদা কমে গেছে, তবে রাশিয়ায় এটি তেমন তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে না। কারণ বাকি চাহিদার বেশিরভাগই দেশীয় উৎপাদনকারীদের দিকেই স্থানান্তরিত হয়েছে।’

আরেকটি বিষয় হচ্ছে, পশ্চিমা নয় এমন দেশগুলোর অর্থনীতিও রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলার কৌশলে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। উদাহরণস্বরূপ, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যে পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে রাশিয়ার পক্ষে বেশিরভাগ পশ্চিমা পণ্যের বিকল্প খুঁজে পাওয়ার কাজটি সহজ হয়ে গেছে।

একই সময়ে সমান্তরাল আমদানি নীতিগুলোর মাধ্যমে মস্কো তার অর্থনৈতিক শূন্যতাও পূরণ করতে শুরু করেছে। এই নীতির অধীনে রুশ কোম্পানিগুলো তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে স্মার্টফোন, গাড়ি এবং পোশাকসহ পশ্চিমা ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য আমদানি করে এবং তারপর মালিকদের ট্রেডমার্কের অনুমতি ছাড়াই রাশিয়ার বাজারে পুনরায় তা বিক্রি করে।

তাবাখ বলছেন, ‘এই ধরনের বিকল্পগুলো প্রায় সবসময়ই বেশি ব্যয়বহুল এবং কম ব্যবহারকারী-বান্ধব হয়, তবে শেষ পর্যন্ত এসব পদক্ষেপ নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। এসব বিকল্পগুলো এটিই বোঝায় যে, ৩০ বছর আগেও বিশ্বজুড়ে যেভাবে পশ্চিমাদের আধিপত্য ছিল তার থেকে পৃথিবী এখন কতটা পরিবর্তিত হয়েছে।’

এখন বড় প্রশ্ন হলো, রাশিয়ার অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদে তার এই ‘কাঠামোগত রূপান্তর’ কতটা অতিক্রম করতে সক্ষম হবে। রাশিয়া কি সফলভাবে তার অর্থনীতিকে একটি নতুন ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পারবে বা নাকি বছরের পর বছর অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত পতনের কারণে উল্টো পথে হাঁটবে?

প্যান-এশীয় বিনিয়োগ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডেজান শিরা অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ডেভনশায়ার-এলিসের মতে, রাশিয়ার পক্ষে সম্ভাব্য দু’টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বেশ কার্যকর হতে পারে। প্রথমটি হলো- মস্কোর অনেক প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে যা বৃহত্তর ভাবে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘আপনি রাশিয়ার দিকে তাকালে দেখবেন এখানে বিশ্বব্যাপী প্রায় সব কিছুর মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ মজুদ রয়েছে। জ্বালানি থেকে হীরা, সুপেয় পানি থেকে খনিজ সম্পদ পর্যন্ত এটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি দেশ।’

ডেভনশায়ার-এলিস বলছেন, ‘এ কারণেই পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বর্তমান বিচ্ছিন্নতা সত্ত্বেও রাশিয়া আসলে ভূ-রাজনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়নি। এছাড়া চীন, ভারত এবং ইরানসহ বিশ্বজুড়ে রাশিয়ার কিছু শক্তিশালী বন্ধু দেশ রয়েছে।’

তার ভাষায়, ‘একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী দেশে পরিণত হচ্ছে এমন কিছু দেশও যেমন, সৌদি আরব, তুরস্ক, ব্রাজিল এবং আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশ রাশিয়ার সাথেই রয়েছে। আর এই ভারসাম্যের কারণেই আমি মনে করি, রাশিয়া হয়তো জয়ী হবে বা আরও প্রভাবশালী হবে।’

আলজাজিরা অবলম্বনে

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..