দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস আজ। ১৯৬৬ সালের এই দিনে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণ-আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ১১ জন শহীদ হন। এরপরেও থেমে থাকেনি দুর্বার এই মুক্তির লড়াই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছয়দফা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের বুদ্ধিদীপ্ত রাজনৈতিক কৌশলের প্রথম ধাপ।
১৯৬৬ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের লাহোরে আইয়ুব সরকার বিরোধী দলগুলোর সর্বদলীয় জাতীয় সংহতি সম্মেলন হয়। সম্মেলনে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান, দীর্ঘদিনের অন্যায়, অবিচার, বৈষম্যের বিরুদ্ধে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেন। এই দাবি উপস্থাপিত হওয়ার পর বিরোধী এই সম্মেলনে ন্যাপসহ প্রতিটি দল ছয় দফা দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেন। উপায়ান্তরবিহীন অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান দলবলসহ সম্মেলন ত্যাগ করেন।
এত কিছুর পরেও হতাশ হননি শেখ মুজিব। লাহোর থেকে ফিরেই ছয় দফা বাস্তাবায়নে দুর্বার আন্দোলনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন তিনি। তুলে ধরেন ছয়দফার যৌক্তিকতা। বাঙ্গালীর স্বাধীনতাসহ শাসনতান্ত্রিক কাঠামো, রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও সার্বভৌম ক্ষমতার দাবির এ আন্দোলন সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
রাজনীতিবিদ অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এই বন্ধুর পথে একাকী চলেছেন। অন্ধকারে আলোকবর্তিকা হয়ে বাঙালির জাতির হাতে মশাল দিয়ে তিনি পথ চলেছেন।
শেখ মুজিব যখন ছয়দফার পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে ব্যস্ত, তখন বারোশো মাইল বহুদূর থেকে পাকিস্তানী প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, মুজিবের ছয় দফার জবাব অস্ত্রের মাধ্যমেই দেয়া হবে। এরপর ৭ জুনের পূর্বঘোষিত হরতালে নির্বিচারে গুলি চালায় পাক সরকার, শহীদ হন ১১ জন, গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে।
ইতিহাসবিদ ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, পূর্ব পাকিস্তানের সেই সময়ের রাজনীতিতে এই প্রথম সমস্ত বাঙালির কথা বলা হয়ে উঠেছিলো। এবং আমাদের যে মূল দাবি শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ, সেই প্রতিবাদের ভাষাটি ছয়দফা আন্দোলন।
বঙ্গবন্ধু যখন জেলে তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করে পাকিস্তানী সরকার। তবে সব বাধা ডিঙিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, আপামর মানুষের প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু ঠিকই বাংলার মানুষের হাজার বছরের কাঙ্খিত স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। ছয়দফা ছিল সেই মুক্তি অর্জনের প্রথম ধাপ।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন