দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ ইসলামের দাওয়াত ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে সুদান গিয়ে আটকা পড়েছেন ১২ জন বাংলাদেশি নাগরিক। লকডাউনের কারণে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় নির্ধারিত সময় পেরিয়ে আরও এক মাসের বেশি সময় দেশটিতে কঠিন সময় পার করছেন তারা। যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরে আসার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে আবেদন ধর্মপ্রাণ বয়োজ্যেষ্ঠ এই ১২ নাগরিকদের।

বুধবার (১০ জুন) সুদান থেকে ফোন করেন এই ১২ জনের একজন সদস্য মোহাম্মদ সানাউল্লাহ। তার কাছ থেকে হোয়াটস অ্যাপ নম্বর নিয়ে পরবর্তীতে যোগাযোগ করা হয়।

সানাউল্লাহ বলেন, আমরা তাবলীগ জামাতের অংশ হিসেবে গত ৫ জানুয়ারি সুদানে আসি। প্রথমে আমরা ফেনী থেকে ছয় জনের একটি দল আসি। এর ১৫ দিন পর ঢাকা থেকে আরও ছয় জনের একটি দল আছে। চার মাস জামাত শেষে আমাদের দলের গত ৫ মে দেশে ফেরার ফ্লাইট নির্ধারিত ছিল। আর ঢাকার দলের ২২ মে। কিন্তু লকডাউন শুরু হয়ে বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে আমরা কেউই আর ফেরত যেতে পারিনি। আমরা ১২ জনই এখন একসঙ্গে এখানে আটকে আছি।

বর্তমানে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সানাউল্লাহ বলেন, আমরা এখন খার্তুম মিন শহরের খার্তুম বেলাল মসজিদ তথা মারকাস মসজিদে আছি। আমাদের সঙ্গে থাকা টাকা শেষ। এখানকার স্থানীয়দের মেহমানদারিতে মসজিদে অবস্থান করছি। এখানে প্রচুর গরম। আমাদের মধ্যে আমার বয়সই ৪২ বছর। আর বাকি সবাই ৬০ বছরের উপরে। সবার খুবই কষ্ট হচ্ছে। আমরা চাই দ্রুত দেশে ফিরে যেতে।

সুদানে বাংলাদেশ কনস্যুলার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলে দাবি করেন সানাউল্লাহ।

তিনি বলেন, এখানে বাংলাদেশের দূতাবাস নেই। একটি কনস্যুলার কার্যালয় আছে। আমরা সেখানে গিয়ে তালাবদ্ধ পেয়েছি। আশপাশ থেকে জানতে পারি, তিনি (কনস্যুলার প্রধান) দেশে চলে গিয়েছেন। একটি ফোন নম্বর আছে, আমরা অনেকবার ফোন দিয়ে চেষ্টা করলেও কেউ ফোন ধরছে না। এখানে আমরা ছাড়া আর কোনো বিদেশি নাগরিক নেই। পাকিস্তান, ভারত থেকেও তাবলীগ জামাতের জন্য মুসল্লিরা এসেছিলেন। তাদের দেশের সরকার বিশেষ বিমানে করে তাদের নিয়ে গেছে। আমাদের দেখার কেউ নেই। প্রয়োজনে আমাদের বিশেষ বিমানে দেশে ফিরিয়ে নিতে আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি।

আটকে পড়াদের মধ্যে সানাউল্লাহ ছাড়াও আছেন ফেনী জেলার সদর উপজেলার ফাজিলপুর ইউনিয়নের আমিনুল ইসলাম, ডা. নুরুল আলম, নুরুল করিম, শশরদী ইউনিয়নের জালাল আহমেদ এবং দলিয়ার মাওলানা আবুল খায়ের।

আর ঢাকা দলের মধ্যে আছেন গেণ্ডারিয়ার মো. কুতুব উদ্দিন, হেলালুদ্দীন, কামাল উদ্দিন, মিজানুর রহমান, এমদাদ হোসেন এবং কাকরাইল জামে মসজিদের মুফতি মোস্তাক।

ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন