বনানী (ঢাকা) প্রতিনিধিঃ রাজধানীর মহাখালীতে বারে মদ পানের পর টাকা না দিয়ে উল্টো ভাঙচুর করে কয়েক লাখ টাকাসহ শতাধিক মদের বোতল ও বিভিন্ন জিনিস লুট করার অভিযোগ উঠেছে সরকারি তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় বনানী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে মহাখালী ওয়্যারলেস গেইটে জাকারিয়া বারে এই ঘটনা ঘটে।
জাকারিয়া বারের দায়িত্বরত ব্যক্তি উজ্জল বলেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিতুমীর কলেজের কিছু ছেলে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। তারপর আমাদের বারে এসে হামলা করে। এসময় ক্যাশ ভেঙে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় ৭৫ ইঞ্চি একটি টিভি, ২০/২৫টি চেয়ার ভাঙচুর করে। এসময় বারে থাকা ৪০ বোতল ফরেন হুইস্কি যার প্রতি বোতলের দাম ১০ হাজার টাকা করে প্রায় ৪ লাখ টাকার হুইস্কি লুট করে।
তিনি আরও বলেন, এসময় কেরুর ৮০ বোতল মদ লুট করে যার প্রতি বোতল মদের নাম ২ হাজার ২০০ টাকা করে প্রায় ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মদ লুট করে। মোট ১২০টি মদের বোতল যা প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার মদ লুট করে। এছাড়াও আমাদের রিসিপশন ভেঙেছে, সেখানে ফটোকপির মেশিন, দুইটা কম্পিউটার ভেঙেছে। এ ঘটনায় ৪/৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০ জনের নামে মামলা হয়েছে বনানী থানায়। আমরা আশা করি বনানী থানা এটার ব্যবস্থা নেবে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েলের একদল অনুসারী ওই বারে মদ পান করার জন্য যান। মদ পান করার পর বিল চাইলে, বিল না দিয়ে তখন বারের ম্যানেজারকে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করেন বারের ম্যানাজার। কিন্তু তারপরও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়লকে তারা ফোনে জানালে হল থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে পাঠিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে।
জানা গেছে, ভাঙচুর এবং লুটের অভিযোগের মূল হোতা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান সাগর। এছাড়াও ঘটনায় ছিলেন শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি লোকমান হোসেন রাহুল, সুলতান, সহ-সম্পাদক শাওন ও সাব্বির, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মামুন, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নিলয় সেন, কর্মী কাউসার, শাহিন মাতব্বর প্রমুখ।
এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিপন মিয়া বলেন, এরকম একটি ঘটনা আমাকে বনানী থানার ওসি জানিয়েছেন। কিন্তু তারা ঘটনা ক্যাম্পাসের বাহিরে করেছে। এটা তাদের ব্যাক্তিগত অপকর্ম। এ বিষয়ে তার কিছু করার নেই।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন এ ঘটনার বিষয়ে বলেন, এ ধরনের কর্মকান্ড ছাত্রলীগের আদর্শের বিপরীত। এটা যদি ঘটে থাকে তারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।