ওয়েব ডেস্ক: আলোচনা সমঝোতার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসা ও মুক্তির দাবিতে যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আজ সব জায়গায় মানুষের একটি প্রশ্ন- আর কয়দিন? মানুষ আর অপেক্ষা করতে পারছে না। দুর্বিষহ দিন কাটাচ্ছে তারা। এখনই পদত্যাগ করুন। আলোচনা-সমঝোতার কথা আসছে। বিএনপি অবশ্যই আলোচনা-সমঝোতায় বিশ্বাস করে। এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। তারপরই বিএনপি আলোচনায় বসতে রাজি। অবৈধভাবে সংবিধান পরিবর্তন করেছে আওয়ামী লীগ। সংবিধানের দোহাই দিয়ে লাভ হবে না। জনগণ রাস্তায় নেমেছে। সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরবে না।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ওবায়দুল কাদের নিজেই বিএনপির প্রচার করছেন। বলছেন রাজধানীর সব হোটেল, বাসাবাড়ি পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতাদের মাথায় নাকি ইউরেনিয়াম ঢেলে দেবে। আসলে আওয়ামী লীগে পাগলে ভরা। সরকারের কিছু উচ্ছিষ্টভোগী যারা ইউরেনিয়াম দিয়ে হত্যার হুমকি দেয় তাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য দালালি করছেন। একদিকে, বিএনপিশূন্য করছেন, বলছেন নির্বাচনে আসেন।
এর আগে রাতে পুলিশের কড়াকড়ির পর ভোর হতেই নয়াপল্টনে আসতে শুরু করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলীয় কার্যালয়ের সামনে তৈরি মঞ্চের চারপাশে জড়ো হন তারা।
ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ওয়ার্ডসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। দুপুর গড়াতেই জনস্রোত শুরু হয় নয়াপল্টনমুখী। দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরুর আগেই নেতাকর্মীদের ঢল মালিবাগ, কাকরাইল, নাইটিংগেল মোড়, মৎস্যভবন, পল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল, আরামবাগ, পীর জঙ্গি মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। এসময় নেতাকর্মীদের সরকারবিরোধী নানা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে নয়াপল্টন এলাকা।
এদিকে জনস্রোতের কারণে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে মতিঝিল, পল্টন, দৈনিক বাংলা পর্যন্ত সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়াপল্টন এলাকায় বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফরহাদ হালিম ডোনার, হাবিবুর রহমান হাবিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।