ওয়েব ডেস্ক: ২৮ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে আলটিমেটাম দিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। বুধবার ( ১৮ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে সমাবেশ থেকে এ আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

এসময় গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা ২৮ অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানান। সরকার পদত্যাগ না করলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।

সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল হক বলেন, আমরা যখন রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি, তখন সরকারি দলের সাধারণ সম্পাদক এক প্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেছেন, শাপলা চত্বরের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। এরমধ্য দিয়ে তিনি শাপলা চত্বরে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের স্বীকৃতি দিলেন। সরকার বলছে দু-একটা দল নির্বাচনে না এলে কিছুই আসে যায় না। আমরা বলতে চাই, আরেকবার ১৪ বা ১৮ সালের নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সরকারকে না কি পাহারা দিতে রাখতে হবে। কেন? গত ১৫ বছরে কত অন্যায় করেছেন, ব্যাংক লুট করেছেন, মানুষের হক কেড়ে নিয়েছেন। এজন্যই কি পাহারা বসাতে হবে। কোনো পাহারা দিয়ে সরকারকে রক্ষা করা যাবে না।

সরকারি দল শান্তি সমাবেশের নামে উসকানি দিচ্ছে উল্লেখ করে সাইফুল হক বলেন, আইএমএফ বলেছে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ দেবে না। বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা এখনো বিক্ষোভে যাইনি, হরতাল অবরোধে যাইনি। সরকার পদত্যাগ না করলে হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে। আখেরি লড়াইয়ের মধ্যে আছি আমরা।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন বিরোধীদলকে না কি রাস্তা দখল করতে দেবে না। আমি বলি পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। উনাদেরও তাই হয়েছে। আমরা যে সমাবেশ করছি রাস্তা কি দখল আছে? গত ১৫ বছরের শাসনে এই সরকার দেশকে জাহান্নাম বানিয়ে ফেলেছে। ওরা বলে, দেশ না কি জান্নাত। এক লোক একা এক রাতে ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ পায়, তার জন্য তো এই দেশ বেহেশত। কিন্তু আমাদের জন্য দোজখ।

মান্না আরও বলেন, ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবে বলেছিল। এখন কত? আমি বলি, আপনারা ৬০ টাকা দিয়ে চাল কিনে বস্তা বস্তা চাল ওবায়দুল কাদেরের মাথায় ঢালেন। যত চাপাবাজি করেন তলে তলে মিল হয়ে গেছে, সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। এসব ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই না।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকারকে আমরা সময় দিচ্ছি আপনারা মন স্থির করেন। কীভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করবেন। আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সব বিরোধীদল মহাসমাবেশ করবে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি যেভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাস করে ক্ষমতা ছেড়েছিল, আপনারাও সেই প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারেন।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, সরকার বলছে, জনগণকে রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না। আর কোনো শাপলা চত্বরের মতো ঘটনা ঘটবে না। জনগণ প্রতিরোধ করবে। পরিষ্কার করে আমরা বলতে চাই জনগণ এখন আর ভয় পায় না। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। আর যদি ভুয়া নির্বাচনের পাঁয়তারা করেন, গুন্ডা আর পুলিশ বাহিনী নামিয়ে দেন। জনগণ জানে ২৮ তারিখের পর কীভাবে আপনাদের গলায় গামছা বেঁধে ক্ষমতা থেকে নামাতে হয়।