স্পোর্টস ডেস্ক: ২০২১ সালের আগস্টে স্পেন সরকার বাফুফেকে বলেছিল, তারা বাংলাদেশকে একটি অত্যাধুনিক ফুটবল স্টেডিয়াম উপহার দিতে চায়। স্পেনের প্রথম পছন্দ ছিল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। জি টু জি (সরকার টু সরকার) চুক্তির মাধ্যমে এই স্টেডিয়াম নির্মাণের আগ্রহের কথা ঢাকাস্থ স্পেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন বাফুফেকে।
শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। আলোচনাও আর আগায়নি। রোববার মন্ত্রণালয়ে তিনটি প্রকল্প নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করে গণমাধ্যমকে যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন স্পেনের স্টেডিয়াম তৈরি করে দেওয়ার আগ্রহের বিষয়টিও তুলেছিলেন।
ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘আমার জানা মতে এই স্টেডিয়াম স্পেন সরকারের করে দেওয়ার কথা ছিল। প্রধানমন্ত্রীও আমাকে বলেছিলেন, নকশা একটু দেখে দিতে। যদিও বিষয়টি ছিল ফুটবলের। আমি আজ এ প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের করেছিলাম। আমাকে বলা হয়েছে, শেষ পর্যন্ত সেটা হয়নি। কেন হয়নি সে বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য আমার কাছে নেই। ওনারা সংস্কারে গেছেন।’
সংস্কারের নামে দেশের ঐতিহ্যবাহী এই স্টেডিয়ামের পেছনে কয়েক বছর পরপরই বিশাল অর্থ ব্যয় করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ওই অর্থে নতুন করে স্টেডিয়াম তৈরি করা যেত। এ প্রসঙ্গে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে শতভাগ একমত যে, এটা (বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) এত পুরোনো হয়ে গেছে যে, সংস্কার করে চলবে না। আমাদের নতুন স্টেডিয়াম দরকার।’
আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সরেজমিনে গিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ঘুরে দেখবেন বলে জানিয়েছেন নাজমুল হাসান পাপন। বলেন, ‘আমি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি যে, মাঠ পরিদর্শন করবো। যেসব অভিযোগ আছে সেসব দেখবো। আগে যা হয়ে গেছে, এখন সেসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। সামনে যাতে আর কোনো সমস্যা না হয় এবং কীভাবে উন্নতি করা যায়, সেটা আমি দেখবো। এটুকু আমি আশ্বাস দিতে পারি।’
স্পেন সরকার যখন বাফুফেকে এ প্রস্তাব দিয়েছিল তখন ৯৮ কোটি টাকা বাজেটে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ চলমান ছিল। আলোচনা আগায়নি বলে তখন স্পেন সরকারও নির্দিষ্ট করে প্রস্তাব দিতে পারেনি বাংলাদেশ সরকারকে। ওই সময় তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ছিলেন জাপান সফরে।
সেখান থেকে তিনি বলেছিলেন, ‘স্পেন সরকার যতক্ষণ আমাদের নির্দিষ্ট করে কোনো প্রস্তাবনা না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে পারব না। এই স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। এখানে আইনি একটা ব্যাপারও আছে। তারপরও পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না। স্টেডিয়াম কক্সবাজারে হতে পারে, পূর্বাচলেও তো হতে পারে। তারা কীভাবে করতে চায়, সেটা আগে আমাদের জানতে হবে।’
স্পেন সরকারের আগ্রহটা কাজে লাগাতে চান উল্লেখ করে জাহিদ আহসান রাসেল বলেছিলেন, ‘তারা যদি আমাদের স্টেডিয়াম তৈরি করে দিতে চায়, সেটা অবশ্যই ভালো খবর। আমরা সাদরেই তাদের প্রস্তাবনাকে স্বাগত জানাই। যেখানেই স্টেডিয়াম হোক, সেটাই আমাদের জন্য বড় পাওয়া হবে।’
বাফুফে স্টেডিয়ামের একটা নকশা তৈরি করে স্পেন দূতাবাসে দিয়েছিল। পরে কী কারণে স্পেনের এ ইচ্ছা বাংলাদেশ লুফে নেয়নি, তা রহস্যঘেরাই রয়ে গেছে।