ওয়েব ডেস্ক: তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশের ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন সহকারী শিক্ষকরা। তারা বলছেন, যতদিন পর্যন্ত সরকার দাবি মেনে না নেবে ততদিন পর্যন্ত এমন অবস্থা চলমান থাকবে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ এক ভিডিও বার্তায় এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সরকার শিক্ষকদের দাবির ব্যাপারে উদাসীন– এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, বারবার জানানোর পরও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই আমরা অনির্দিষ্টকালের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছি।
মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, আমরা বারবার বলেছি আলোচনায় বসুন। কিন্তু সরকার আমাদের গুরুত্ব দেয়নি। আমাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ অবস্থায় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা পিছু হটব না।
তিনি জানান, এর আগে ৫ থেকে ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা, ১৬ থেকে ২০ মে পর্যন্ত দুই ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বর্তমানে সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন পান। তারা দীর্ঘদিন ধরে ১০ম গ্রেডের দাবি জানিয়ে এলেও সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অন্তত শুরুতে ১১তম গ্রেডে বেতন চান।
এছাড়াও চাকরিতে ১০ বছর ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার জানিয়েছেন, বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকদের শুরুতে ১২তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং চার বছর পর তারা ১১তম গ্রেডে পদোন্নতি পাবেন। মন্ত্রণালয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা দেশে ৬৫ হাজারের বেশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় চার লাখ শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে ১১তম গ্রেডে বেতন পান। উচ্চ আদালতের রায়ে সম্প্রতি প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে সহকারী শিক্ষকরাও তাদের বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন।