নিজস্ব প্রতিবেদক: সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ১১টা। মাঝখানে চলে গেছে ২৬ ঘণ্টা। ডুবে যাওয়া লঞ্চ মর্নিং বার্ড উদ্ধার হয়েছে এই সময়ের ব্যবধানে। লঞ্চটি ডুবে যাওয়ার তিন ঘণ্টা পরই পানির নিচে এর অবস্থান চিহ্নিত করা হয়। এর পরই চলে লঞ্চটি উদ্ধারের প্রক্রিয়া। এর আগেই নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা হয় উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয়। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্যখানে। পোস্তগোলায় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-১ (প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতু) সেতুটিতে ধাক্কা খায় যানটি। এতে সেতুতে ফাটল সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে আটক যায় ‘প্রত্যয়’-এর আসা।
এর পর অবলম্বন করা হয় অন্য প্রক্রিয়া। পরবর্তী বিকল্প ব্যবস্থা বা অন্য কোনো লঞ্চ দিয়ে টেনে আনা যায় কিনা সেই চেষ্টা চালানো হয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় সনাতন পদ্ধতি। একপর্যায়ে লঞ্চটিকে এয়ার লিফ্টিং ব্যাগ দিয় ভাসিয়ে তোলেন উদ্ধারকারীরা। সকাল ১১টার দিকে লঞ্চটি পানির সমান্তরালে ভেসে ওঠে। যদিও যানটি পুরোপুরি উদ্ধার হয়নি। লঞ্চটিকে এখন কোথায় কোন প্রক্রিয়ায় নেওয়া হবে তা নির্ধারণ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায় ছোট আকারের লঞ্চ মর্নিং বার্ড। মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি থেকে সদরঘাটে এসে নোঙর করতে যাচ্ছিল মর্নিং বার্ড। ময়ূর-২ লঞ্চটিও চাঁদপুর থেকে সদরঘাটে এসে যাত্রী নামিয়ে ভিন্ন স্থানে নোঙর করতে যাচ্ছিল।
ডুবে যাওয়া লঞ্চটি থেকে এ পর্যন্ত ৩২ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নদীতে ভেসে ওঠার পর কোস্ট গার্ডের কর্মীরা তাঁকে তুলে নেন। উদ্ধার করার পর তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। তাকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া উদ্ধার করা হয়েছে ডুবে যাওয়া লঞ্চটিও।
দুর্ঘটনার পর দায়ী ব্যক্তি বা সংস্থাকে শনাক্তকরণ এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় উল্লেখ করে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। কমিটি আগামী সাত দিনের মধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করবে।