নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বলেছেন, হলি আর্টিজান হামলার পর আমরা একের পর এক জঙ্গি আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছি। ইমপ্রভাইসড বোমা বানানোর মত এক্সপার্ট এখন আর নাই। তারা কেউ জেলে আছেন অথবা বিভিন্ন অভিযানে নিহত হয়েছেন। তাদের ছোটখাটো সক্ষমতা থাকতে পারে কিন্তু বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটানোর সক্ষমতা নেই। জঙ্গিদের সক্ষমতা যে পর্যায়ে ছিল সেটি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে চলে এসেছে।
বুধবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে একথা বলেন তিনি।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা ছিল উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, হলি আর্টিজানে হামলার আজ ৪ বছর পূর্ণ হলো। আমরা এই জঙ্গি হামলায় নিহত আমাদের দুইজন সহকর্মী ও দেশী-বিদেশি নিহত নাগরিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি। যারা সরাসরি এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন তারা অভিযানে ঘটনাস্থলে নিহত হন। এই পুরা ঘটনার সাথে যারা জড়িত ছিলেন পরবর্তীতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করি এবং সবারই সাজা হয়েছে। এর মধ্যে সাতজন আদালতে আপিল করেছেন। তবে এখন আপিলের শুনানি শুরু হয়নি।
ডিএমপি কমিশনার আরো বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার পরে বাংলাদেশ পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। একইভাবে যারা জঙ্গিবাদে জড়িত তাদের সক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের একটি পরিষ্কার ধারণা তৈরি হয়েছিল।
সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে আশ্বস্ত করে কমিশনার বলেন, করোনাকালে স্বাভাবিকভাবে মানুষ বাসায় বেশি থাকেন। তারা অনেকেই ধর্মীয় সাইটগুলোতে বেশি ভিজিট করছেন। এই সুযোগ নিয়ে জঙ্গিরা ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছে। এখন পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছি। কাউকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করতে পেরেছে বা জঙ্গিবাদের কার্যক্রমকে পরিচালনার জন্য যে ধরণের সাংগঠনিক ব্যবস্থা প্রয়োজন সে ধরণের কোন সংগঠন আবার গড়ে তুলতে পেরেছে সেরকম কোন তথ্য আমাদের কাছে নাই।
ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়। এছাড়াও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। এরপর চীন, জাপান ও আমেরিকার এম্বাসেডররা এসে হলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলার ঘটনায় নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজানে ২০১৬ সালের ১ জুলাই দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস জঙ্গি হামলায় ইতালির ৯ জন, জাপানের সাত জন, ভারতীয় একজন ও বাংলাদেশি তিন জন নাগরিকসহ ২২ জনকে হত্যা করেছিল জঙ্গিরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দুজন পুলিশ কর্মকর্তা। জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় আহত হন পুলিশের অনেকে। পরদিন অর্থাৎ ২ জুলাই সকালে সেনা কমান্ডোদের উদ্ধার অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হন।