ডায়েরি..( ২য় পর্ব )
— তিথি নন্দী
তিলোত্তমার কোনো খোঁজ না পেয়ে, সেইদিন রাতে ঠিক করলাম সকালে কলেজ গিয়ে প্রথমে ১ম বর্ষের ক্লাসে যাব। পরেরদিন ঠিক তাই করলাম, গিয়ে সবাইকে তিলোত্তমার কথা জিজ্ঞেস করা মাত্র সবার এক উত্তর কেউ নাকি তিলোত্তমাকে চিনে না। শুনে খুব অদ্ভুত লাগলো। ক্লাস শুরু হয়ে যাবে তাই বিষন্ন মন নিয়ে ক্লাসে চলে গেলাম।
রাতে শুয়ে ভাবলাম আর হয়তো তার দেখা পাব না। এই ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম টেরও পেলাম না। পরের দিন ক্লাসে সুনির্মল কে দেখে মনে পড়লো তিলোত্তমা তো সুনির্মলকেই ডায়েরিটা পাঠিয়েছিল। তাই সুনির্মলকেই জিজ্ঞেস করলাম কিন্তু তার ও একই উত্তর তিলোত্তমা নামে কাউকে চিনে না।
সেই দিন রাতে আর ঘুম আসলোনা, মনে একটাই প্রশ্ন কেন সবাই বলছে তিলোত্তমাকে চিনে না ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে মনে পড়ে গেল দারোয়ান চাচার কথা। তিলোত্তমার খোঁজ এখন শুধুমাত্র দারোয়ান চাচাই দিতে পারে।
পরেরদিন সকালে কলেজ বাদ দিয়ে চলে যায় দারোয়ান চাচার কাছে। সব কিছু খুলে বলাতে চাচা বললো মেয়েটার নাম কমলিকা। সে লেখা লেখির কাজ করে কলেজ হোস্টেলে থাকা খাওয়ার ফিস দিতো।সবকিছু শুনে তাকে আরো ভালো লাগলো। কিন্তু দুঃখের বিষয় তিলোত্তমা নামক ডায়েরিটা আমার কাছে থাকায় সে ঠিক সময়ে সেটা জমা না দিতে পারাই,, তাকে কর্মসূচি থেকে বের হয়ে যেতে হয়। তাই সে এখন আর কলেজও আসে না।
কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে অপরাধী মনে হলো। সেইদিন যদি ডায়েরিটা না নিতাম তাহলে সে আজ কলেজ আসতে পারতো। দারোয়ান চাচার কথামতো চলে গেলাম কমলিকার বাড়ি…
__কমলিকা বাড়িতে আছো।
___ কমলিকার মামি বেরিয়ে আসলেন,কে গা তুমি কমলিকা খুঁজছো। বাপ মা মরা মেয়ের আজ বেয়ে বুঝলা। যা কইবা আমাকে বলো।
___ না,, মাসিমা বলছিলাম, কমলিকা এখন কলেজ আসে না।
___শোনো বাপু, ওই মেয়েতো জন্মের সময় তার বাপ মা কে খেয়েছে। মামা মামির কাছে খেয়ে বড় হলো। বাড়ির কাজে মন না দিয়ে ওই মেয়ে মামার মতে কলেজে ভর্তি হয়েছিল কিনা সে তার পড়ার খরচ একাই চালাবে।
___হুম মাসিমা আমি সেই ব্যাপারে কথা বলতে এসেছিলাম।
____কোনো কথা নাই, এখন যাওতো বাপু, আজ আবার বেয়ের অনেক কাজ।
এই বলে দরজা বন্ধ করে দিল। আমিও ফিরে এলাম। ডায়েরির শেষ পাতার
ভালোবাসা অসম্পন্নই রয়ে গেল…..
লেখক : শিক্ষার্থী