1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

রাজশাহীতে ধর্ষককে বাঁচাতে পুলিশ-চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

  • Update Time : রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০
  • ৩৮৫ Time View
রাজশাহীতে ধর্ষককে বাঁচাতে পুলিশ-চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীর একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত ধর্ষককে বাঁচাতে পুলিশ ও চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জালিয়াতি করে ঘটনার তারিখ সাত মাস পিছিয়ে দিয়েছে আর চিকিৎসক জালিয়াতি করে ধর্ষণ পরীক্ষার তারিখ পিছিয়েছে ১৫ দিন। তাদের এই জালিয়াতির ফলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই ছাত্রী বিচার পাবেন কিনা তা নিয়েই এখন শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। বিচারের আশায় ওই ছাত্রীটি এখনো ছুটছেন আদালত থেকে শুরু করে পুলিশের দরবারে।

এ ঘটনার সঙ্গে নগরীর বোয়ালিয়া থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রওশন আলম, থানার ওসি নিবারণ চন্দ্রণ বর্মণ এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক মো: কফিল উদ্দিন জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই ছাত্রী এবং মামলার স্বাক্ষীদের দেওয়া তথ্য মতে, গত ৫ আগস্ট ধর্ষণের পরের দিন ওই ছাত্রী থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় নগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকার কামরুজ্জামান দুলালের ছেলে ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মান্নাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর পুলিশের হস্তক্ষেপেই থানায় বিষয়টি নিয়ে মান্নার পরিবার মেয়েটিকে সমঝোতার জন্য বার বার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। কিন্তু ধর্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীটি জানিয়ে দেয়, মান্না তাকে বিয়ে করতে রাজি হলেই কেবল তিনি সমঝোতা করবেন। কিন্তু মান্না কিছুতেই সেই বিয়েতে রাজি হয় না। উল্টো টাকা দিয়ে মীমাংসা করে নিতে চায়। শেষে মেয়েটির কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার ব্যবস্থা করে পুলিশ। গত ৯ আগস্ট রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে ওই ছাত্রীর ধর্ষণের ফিঙ্গার পরীক্ষা করা হয়।
মেয়েটির অভিযোগ, তিনি ঘটনার তারিখ ৫ আগস্ট উল্লেখ করার পরেই পুলিশ ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহের জন্য রামেক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পরীক্ষার জন্য। কিন্তু পুলিশ মামলায় ওই তারিখ পরে তার অনুপস্থিতিতে পরিবর্তন করে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি উল্লেখ করে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ওইদিন মেয়েটি নগরীর বেলদারপাড়া এলাকায় ধর্ষণের শিকার হোন মান্নার এক বন্ধুর বাড়িতে। ওইদিন বিয়ের প্রলোভনে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে মনিরুজ্জামান মান্না। কিন্তু ধর্ষণের পরে মেয়েটিকে আর বিয়ে করতে রাজি হয় না মান্না। পরে মেয়েটি মান্নার বোনের বাড়িতে গিয়ে মান্নাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু মান্নার বোন ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। এরপর তাকে মেয়েটিকে মান্নার বোন মোছা: শিলা মারধোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। শেষে ধর্ষণ ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে মেয়েটি গত ৬ আগস্ট থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।

মেয়েটির অভিযোগ করে বলেন, ‘ধর্ষণের একদিনের পরেই থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছি। আমার মৌখিক অভিযোগ পেয়েই পুলিশ আসামিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসেছে। কিন্তু প্রভাবশালী আসামিকে বাঁচাতে পুলিশ ও চিকিৎসক ঘটনার তারিখ এবং ধর্ষণ প্রতিবেদন তৈরীর তারিখ পরিবর্তন করে দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’

মেয়েটির আইনজীবী হামিদুল হক বলেন, ‘মেয়েটি যদি ৭ মাস আগে ধর্ষণ হতো তাহলে থানায় মামলা নিয়ে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষা করতে পাঠাতো না। কারণ এতোদিনে ধর্ষণের কোনো আলামত থাকার কথা নয়। মেয়েটি গত ৫ আগস্টই ধর্ষণের শিকার হয়। কিন্তু পুলিশ ইচ্ছেকৃতভাবে আসামিকে বাঁচাতে এজাহারে সেই তারিখ পরিবর্তন করে সেখানে ১২ জানুয়ারির কথা উল্লেখ করেছে।’

হামিদুল হক আরও জানান, মামলায় যে তারিখের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, ওইদিন আসামি মালেয়শিয়াতে ছিলো। এই ধরনের একটি পাসপোর্ট ও ভিসার কপিও আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, পুলিশ মামলার তারিখ পরিবর্তন করেছে ধর্ষককে বাঁচানোর জন্যই। আবার হাসপাতালের চিকিৎসকও তাঁর প্রতিবেদন তৈরীর দিন ইচ্ছেকৃতভাবে ৯ আগস্টের স্থলে ২৬ জুলাই উল্লেখ করেছেন। অথচ মামলা হয়েছে ৬ আগস্ট। এরপর ৮ আগস্ট মামলার এসআই রওশন আলম একটি চিঠি দিয়ে ভিকটিমের আলামত পরীক্ষার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগে মেয়েটিকে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পরের দিন ৯ আগস্ট মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

আইনজীবী হামিদুল হক বলেন, ‘মামলা হওয়ার আগেই ওই চিকিৎসক মেয়েটির ধর্ষণ পরীক্ষা করলেন কিভাবে? পুলিশ ও চিকিৎসক পরস্পর যোগসাজস করে মেয়েটিকে এই ধর্ষণের বিচার না পাওয়া থেকে বিরত করতেই এমন ধরনের জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। আমি চাই এমন জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’

এদিকে ধর্ষণ প্রতিবেদনেও মেয়েটি সরাসরি ধর্ষিত হয়েছে সেটি উল্লেখ করা হয়নি। ‘কোনো এক সময় মেয়েটির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক হয়েছে এমন কথা উল্লেখ করা হয়।’ এদিকে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়। মেয়েটি যেদিন ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে, সেদিনের কথায় মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।’

থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘মামলায় তারিখ পরিবর্তনের ঘটনাটি সঠিক নয়। আসামিকে বাঁচাতে তারিখ পরিবর্তনের অভিযোগও সঠিক নয়। বাদীর দেওয়া তথ্য মতেই মামলা এজাহারভূক্ত করা হয়েছে। কোনো বাড়তি তথ্য দেওয়া হয়নি।’

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..