দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনাভাইরাসের মধ্যেই ঢাকাসহ সারাদেশে প্রথম রমজান পার হলো। প্রতি বছরই যেখানে প্রথম রমজান থেকেই ইফতার কেনাবেচার ধুম পড়ে, সেখানে আজ ঢাকাসহ দেশের সর্বত্রই ছিলো একটা নির্জীব পরিবেশ। তবে রাজধানীর ফার্মগেট, তেজগাঁও, কারওয়ানবাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, খিলগাঁও, উত্তর বাড্ডা, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় স্বল্প পরিসরে ইফতারের দোকান বসতে দেখা গেছে। কিন্তু প্রতিটি এলাকায় ইফতারের দোকান ছিলো এক-দুইটি। দোকানগুলোতে ক্রেতাও তেমন দেখা যায়নি।
পান্থপথের ইফতারের দোকানদার ইসমাইল হোসেন এই প্রতিবেদককে বলেন, বিকেল ৩টা থেকে দোকান খুলেছি। এ পর্যন্ত (৩টা থেকে বিকেল ৫টা) মাত্র ১০ জনের কাছে ইফতার বিক্রি করেছি। যেখানে আগের বছরগুলোতে এই সময়ে প্রায় ২০০ জনের কাছে ইফতার বিক্রি হতো।
এদিকে প্রতিবছরই পবিত্র রমজান মাসে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। কিন্তু এ বছর করোনাভাইরাসের কারণে এসব আয়োজন হচ্ছে না। একইভাবে প্রতি বছরই রমজান মাসের প্রথম দিন থেকে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে মাসব্যাপী ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে রাজনৈতিক দলগুলো এ বছর এসব আয়োজন করছে না।
অন্যদিকে রমজানে মাসব্যাপী দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে গিয়ে তারাবি নামাজ পড়ে থাকেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে মুসলমানদের ঘরে বসেই তারাবি নামাজ পড়তে বলেছে সরকার।
এবিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে সকলের সুরক্ষার স্বার্থে আসন্ন রোজায় মসজিদে না গিয়ে ঘরে বসেই তারাবি নামাজ পড়তে দেশের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। মসজিদে আপাতত জামাতে নামাজ না পড়ার বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, সেগুলোও মেনে চলতে বলেন তিনি।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি অফিসে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৫ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। এ নিয়ে পাঁচ দফায় ছুটি বাড়ল। করোনাভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়। ছুটি তৃতীয় দফা বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।
এরপর চতুর্থ দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়। এসময় নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত সবাই ঘরেই অবস্থান করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরো ৩০৯ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৯৯৮। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ৯ জন। সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৪০।
দৈনিক প্রত্যয়/ জাতীয়/ জাহিরুল মিলন