প্রত্যয় ডেস্ক, তৌহিদুল ইসলাম রুবেল, পিরোজপুর প্রতিনিধিঃ দেশে সুপারির অন্যতম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের সুপরিচিত জেলা পিরোজপুর। এবছর চলমান বন্যা ও করোনায় সুপারির ফলন কমে গেছে প্রায় চার ভাগের দুই ভাগ। বর্তমান সময়ে সুপারি বাজার জমজমাট থাকার কথা তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগে নেই সুপারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীর। অল্প কিছু সুপারি হাটে উঠলেও তার দাম চড়া। কৃষকরা বলছে,স্বল্প সুদে সরকার ঋণের ব্যবস্থা করতে পারলে ক্ষতি কিছুটা পোষিয়ে নেওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে পান-সুপারির চাহিদা পূরণে একটা বড় অংশ যায় পিরোজপুর জেলা থেকে। সুপারির উৎপাদনে দক্ষিণাঞ্চলের সুপরিচিত এ জেলার বিভিন্ন স্থান। এক সময় দেশে উৎপাদিত সুপারির বড় অংশ পিরোজপুর সদর উপজেলার চলিশা বাজারে বেচা-কেনা হতো। বর্তমানে জেলার গাজিরহুলা, চৌরাস্তা, তালুকদারহাট, মিয়ারহাট, ধাবড়ী, নতুনবাজার, কেউন্দিয়া ও চলিশা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে ছোট বড় হাটে বেশি সুপারি কেনা-বেচা হয়। এ সকল হাটে সারা বছরই সুপারি কেনা-বেচা চলে। তবে শুকনো সুপারির পিক মৌসুম ফাল্গুন থেকে আষাঢ় পর্যন্ত এবং পাকা সুপারীর পিক মৌসুম শ্রাবণ থেকে অগ্রহায়ণ পর্যন্ত। এ সময় বেশির ভাগ সুপারি ক্রয়-বিক্রয় হয়ে থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সুপারি কিনে ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠান। আবার বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরাও এখানে আসেন সুপারি কিনতে।
সুপারি চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান,শুকনো সুপারি সাধারণত ফাল্গুন মাস থেকে বিক্রি শুরু হয়ে আষাঢ় মাস পর্যন্ত চলে এবং শ্রাবণ মাস থেকে কাঁচা সুপারি অগ্রহায়ণ মাস পর্যন্ত চলে। এ সময়ে কৃষকদের হাতে কোনো টাকা-পয়সা থাকে না। তাছাড়া এ সময় কৃষকরা বোরো, গমসহ রবি শস্য চাষে ব্যস্ত থাকে। গাছের সুপারি বিক্রি করে পরিবারের দৈনন্দিন চাহিদা মিটিয়ে কৃষি কাজে লাগাতে পারে এ টাকা। তবে এবছর বন্যায় সুপারি ফলন অনেক কমে গেছে। আর্থিক ক্ষতিতে কয়েক হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। চাষীদের দাবি স্বল্প সুদে সরকার যেনো কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করে দেন।
চাষীদের ক্ষতি পোষানোর জন্য পিরোজপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শিপন চন্দ্র ঘোষ জানান, ব্যবসায়ীরা প্রতি বছর এই মৌসুমে বিভিন্ন হাট থেকে সুপারি কিনে মজুদ করে রাখে। শুকিয়ে ও পানিতে ভিজিয়ে সুপারি সংরক্ষণ করা হয়। পরে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এ সুপারি এলসির মাধ্যমে ভারতে এবং ঢাকা, সিলেট, চট্রগ্রাম, নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
বন্যার প্রভাবে পিরোজপুরের এই হাটগুলোতে বর্তমানে ২১০পিচ সুপারি বিক্রি হয় ৪০০-৬০০ টাকা পর্যন্ত যা আগে বিক্রি হতো ২০০-৪০০টাকায়।