করোনাকালীন সময়ে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রমে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট বিতরণ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মোবাইল কেনার জন্য সফট লোন দেয়ার কথা ছিল। তবে এ পদক্ষেপগুলোর কোনোটিই বাস্তবায়ন করতে পারেনি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) প্রশাসন।
যদিও গত বছরের নভেম্বরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট দেয়ার উদ্দেশ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি মোবাইল কোম্পানিকে বেছে নেওয়ার কথা গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও এ নিয়ে অগ্রগতি দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘এখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার মৌসুম চলছে। কোনো ক্লাস হচ্ছে না৷ আরও দুই মাস পরীক্ষা চলবে। এরপর যদি ছুটি বর্ধিত হয়। তবে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে।’
এসময় তিনি আরও বলেন, ‘যদি কেবল আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের দিতে হয়, তাহলে দিতে পারতাম৷ সব শিক্ষার্থীদের দিতে হলে অনেক বড় বাজেট দরকার। যা আমাদের নেই।’
অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে প্রদত্ত সফটলোনের আওতায় মোবাইল কেনার জন্য ঘোষিত ঋণের প্রকল্পটিও ঝুলে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘ইউজিসির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। ইউজিসি এখনো ঋণ দেওয়া শুরু করেনি৷ তবে খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে জানিয়েছে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আর অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মোবাইল কেনার জন্য যে সফট লোন দিয়েছে তা তারা নিজেদের ফান্ড থেকে দিয়েছে’।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো নিজেদের ফান্ড থেকে সফট লোন দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে রেজিস্ট্রার বলেন, ‘বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো তো আমাদের নিজস্ব আয় নেই। তাই আমরা দিতে পারছি না৷’
উল্লেখ্য, দেশের ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪১ হাজার ৫০১ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে সফট লোনের আওতায় স্মার্টফোন ক্রয়ের জন্য জনপ্রতি সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা দেয়ার কথা ইউজিসির।
এ ঋণ প্রাপ্তির জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর সম্বলিত ৬৩৪ জন অসচ্ছল শিক্ষার্থীর একটি তালিকাও করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আসলে প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব ছিলো। চাইলেই স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারতো তারা। আর অনলাইন ক্লাসের শুরুর দিকেই যাদের ভালো ডিভাইস ছিল না, তাদের তালিকা নেয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো তারা কোনো সহযোগিতা পায়নি। এসব সমস্যার কারণে অনলাইনে ক্লাস করতে না পারলেও তাদের ঠিকই এখন পরীক্ষা দিতে হচ্ছে’।