আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর স্ত্রী ও দেশটির ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাক্রোঁর লিঙ্গপরিচয় নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্লাটফর্মে অনেকেই দাবি করছেন, ব্রিজিত মূলত একজন ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামী নারী। তাদের দাবি, পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর স্ত্রী ব্রিজিত।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ফরাসি সরকার। তারা এটিকে গুজব হিসেবেও আখ্যায়িত করেছে। আর তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরনের গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ। গত মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।
চলতি মাসে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টুইটারে ছড়িয়ে পড়ে যে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর স্ত্রী ও দেশটির ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ জন্মগতভাবে নারী নন। অর্থাৎ তিনি পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন এবং সেসময় তার নাম ছিল জ্যঁ-মিশেল ত্রোগনিউক্স।
প্যারিসভিত্তিক ফরাসি সংবাদমাধ্যম লা ফিগারো জানিয়েছে, টুইটারজুড়ে এমন প্রচারণাকে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন ৬৩ বছর বয়সী ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ। আর তাই এ কাজে প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন ফার্স্ট লেডি।
ফরাসি এই সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, চলতি ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেশ কয়েকদিন ধরে #জ্যঁ-মিশেল-ত্রোগনিউক্স হ্যাশট্যাগটি ট্রেন্ড হিসেবে ছিল।
অবশ্য বুধবার এক প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের আরেক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ফরাসি ফার্স্ট লেডি ব্রিজিত ম্যাক্রোঁর লিঙ্গপরিচয় নিয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে কট্টর ডানপন্থি একটি গ্রুপের ওয়েবসাইটে প্রথম বিভ্রান্তিকর ও ষড়যন্ত্রমূলক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
পরে সেটিই মূলত গুজব আকারে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গুজব রটে, ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ আসলে প্রকৃতিগত ভাবে নারী নন। তিনি পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন।
কট্টর ডানপন্থি ওই ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়, ফরাসি ফার্স্ট লেডির ওপরে টানা তিন বছরের তদন্ত শেষে তারা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে আরও দাবি করা হয় যে, ব্রিজিত ম্যাক্রোঁ যে জন্মগতভাবে পুরুষ ছিলেন এ বিষয়টি অনেক বিশেষজ্ঞও সমর্থন করেছেন।
অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতে রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি বা গুজব রটানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্ট লেডি ও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল ওবামা পুরুষ হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রটানো হয়েছিল।
সেসময় দাবি করা হয়েছিল, মিশেল ওবামার আসল নাম মিশেল লভাউগান রবিনসন। এছাড়া নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নও লিঙ্গপরিচয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবের শিকার হয়েছেন বলে শোনা যায়।