প্রত্যয় বিনোদন ডেস্ক: জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ দেখতে দেখতে তার অভিনয় জীবনের পঁচিশ বছর পার করলেন। ১৯৯৫ সালে দেওয়ান নজরুল পরিচালিত ‘বাংলার নায়ক’ সিনেমাতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সিনেমাতে রিয়াজের অভিষেক হয়। বিমানবাহিনীর চাকরি ছেড়ে সিনেমার নায়ক হিসেবেই ধীরে ধীরে ব্যস্ত করে তোলেন রিয়াজ। ‘বাংলার নায়ক’র পর সালমান শাহর সঙ্গে ‘প্রিয়জন’ এবং ‘অজান্তে’, ‘বাঁচার লড়াই’, ‘পৃথিবী আমারে চায়না’, সিনেমাতে অভিনয় করেন।
১৯৯৭ সালে এটলাস মুভিজ প্রযোজিত মো. মুখলেছুর রহমান পরিচালিত ‘হৃদয়ের আয়না’ সিনেমাতে প্রথম একক নায়ক হিসেবে রিয়াজের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম একক নায়ক হিসেবেই আলোড়ন সৃষ্টি করেন। মতিন রহমানের পরিচালনায় ‘মন মানে না’ সিনেমায় শাবনূরের সঙ্গে প্রথম নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু। শাবনূরের সঙ্গে রিয়াজকে দর্শক লুফে নেয়। পরবর্তীতে শাবনূরের সঙ্গে আরও বহু সিনেমায় অভিনয় করে দর্শকের ভালোবাসায় নিজেকে সিক্ত করেন। জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমাতে রিয়াজের বিপরীতে প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিষেক হয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার।
রিয়াজ তার দীর্ঘদিনের অভিনয় জীবনের ক্যারিয়ারের শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গেই বেশি অভিনয় করেছেন। নাটকে তার প্রথম অভিনয় করা অতিথি চরিত্রে হুমায়ূন আহমেদের ‘হাবলঙ্গের বাজারে’ নাটকে। পরবর্তীতে হুমায়ূন আহমেদেরই নির্দেশনায় ‘দুই দুয়ারী’ সিনেমাতে অভিনয় করে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। পরবর্তীতে তৌকীর আহমেদের ‘দারুচিনি দ্বীপ’ ও চন্দন চৌধুরীর ‘কী যাদু করিলা’ সিনেমাতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। অভিনয় জীবনের রজতজয়ন্তী পেরোনো প্রসঙ্গে রিয়াজ বলেন, ‘এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আমার সর্বোচ্চ প্রাপ্তি কোটি কোটি দর্শকের ভালোবাসা। আর অবশ্যই এ জন্য সর্বপ্রথম যে দুজন প্রিয় মানুষের কাছে আমি কৃতজ্ঞ সে দুজন হলেন শ্রদ্ধেয় ববিতা আপা এবং প্রয়াত শ্রদ্ধেয় নায়ক জসীম ভাই। কারণ ববিতা আপা আমাকে হাত ধরে এখানে নিয়ে এসেছেন আর জসীম ভাই আমাকে প্রথম কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন।
অবশ্যই কৃতজ্ঞ পরিচালক দীলিপ বিশ্বাস, মতিন রহমান, মহম্মদ হান্নান, কোহিনূর আক্তার সুচন্দা, মতিউর রহমান পানু, এসএ হক অলীক। তারা আমার চলার পথকে সমৃদ্ধ করতে আমাকে অনেক অনেক সহযোগিতা করেছেন। অবশ্যই কৃতজ্ঞ আমার প্রত্যেক সিনেমার সহশিল্পী, প্রযোজক, সিনেমাটোগ্রাফার, মেকআপ আর্টিস্ট, কাহিনিকারসহ আরও যারা আছেন।’ সবচেয়ে বেশি সিনেমা করেছেন আপনি শাবনূর ও পূর্ণিমার সঙ্গে। দুজন সম্পর্কে আপনার অভিমত? জবাবে রিয়াজ বলেন, ‘সহশিল্পী হিসেবে শাবনূরের সঙ্গে আমার ভালো অভিনয় করার প্রতিযোগিতাটা বেশি ছিল। আমরা অভিনয়ে দুজন এত বেশি প্রতিযোগিতা করতাম যে পর্দায় দর্শকের সামনে আমাদের দুজনের মধ্যে কাজের চমৎকার কেমিস্ট্রির কারণে একটা ম্যাজিক তৈরি হতো। অবশ্য আমাদের দুজনের কাজের প্রতি ডেডিকেশনও ছিল অনেক বেশি। আর পূর্ণিমা ভীষণ ভালো একজন অভিনেত্রী।’ ২০০৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর রিয়াজ তিনাকে বিয়ে করেন। ২০১৫ সালের ৩০ মে তাদের ঘর আলোকিত করে আমিরা সিদ্দিকীর জন্ম হয়। বর্তমানে রিয়াজ নিজস্ব বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘পিংক ক্রিয়েটিভ লিমিটেড’ নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন।