নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকা উত্তরের সকল খাল ও ড্রেন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেলের বিদ্যমান জনবল, ভৌত অবকাঠামো, আনুষঙ্গিক সকল উপকরণসহ খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম।
আজ শনিবার (২৭ জুন) বেলা সাড়ে এগারটায় কাওলায় সিভিল এভিয়েশন কবস্থানের পাশে আশকোনা হজক্যাম্প হতে সিভিল এভিয়েশন অফিসার্স কোয়ার্টার হয়ে বনরূপা হাউজিং পর্যন্ত খননকৃত খালের উদ্বোধনকালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলামের কাছে এ প্রস্তাব দেন ডিএনসিসি মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। তিনি উদ্বোধনকৃত এ খালটির পাশাপাশি কুড়িল-বিশ্বরোড থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সাইকেল লেন তৈরি করার প্রস্তাবও দেন।
মেয়র বলেন, খালগুলো জেলা প্রশাসনের অধীনে, পানি নির্গমণসহ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ওয়াসার। কিন্তু জনগণের দুর্ভোগের কথা শুনতে হয় সিটি কর্পোরেশনকে। জনপ্রতিনিধি হিসাবে মেয়র ও কাউন্সিলরদেরকে জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু ওয়াসাকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। এমতাবস্থায়, নগরবাসীর ভোগান্তি লাঘবে, ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ সার্কেলের বিদ্যমান জনবল, যান-যন্ত্রপাতি, আনুষঙ্গিক সকল উপকরণসহ খাল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করার প্রস্তাব দিচ্ছি।
মেয়র আরো বলেন, গত ২১ এপ্রিল স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আমরা আশকোনা হজক্যাম্প সংলগ্ন জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করি। উত্তরা ৪নং সেক্টরের একাংশ, কসাইবাড়ি, আশকোনা, কাওলা এলাকার তীব্র জলাবদ্ধতা দূরীকরণে আশকোনা হজক্যাম্প হতে বনরূপা আবাসিক এলাকা পর্যন্ত খালটির বিভিন্ন জায়গায় খননের জন্য ঢাকা ওয়াসা ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় উভয় সংস্থা অপরাগতা প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে এই এলাকার দীর্ঘদিনের জনদুর্ভোগ লাঘবে দ্রুততম সময়ে কাজটি সম্পাদনের জন্য প্রায় ১.৯০ কিমি দীর্ঘ খালটি খননের জন্য যৌথভাবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। ডিএনসিসি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ৩০ মে ২০২০ থেকে খাল খনন শুরু করে এবং ২৭ জুন ২০২০ খনন সম্পন্ন করে। ডিএনসিসি তার সীমিত জনবল এবং যান-যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ০.১৭ কিমি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১.৭৩ কিমি সর্বমোট ১.৯০ কিমি খাল খনন করে। খালটি খননের ফলে উত্তরা ৪নং সেক্টরের একাংশ, কসাইবাড়ী, আশকোনা, কাওলাসহ আশেপাশের এলাকার জলাবদ্ধতা অনেকাংশে দূর হবে।
আতিকুল ইসলাম আরো বলেন, চলতি বছরে ডিএনসিসি কর্তৃক ৪.৭৫ কিমি সুপরিসর আরসিসি পাইপ-নর্দমা নির্মাণের মাধ্যমে উত্তরা ৪ এবং ৬নং সেক্টরের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতাও অনেকাংশে দূর করা হচ্ছে। এছাড়া বনানী মেইন রোডে মাছরাঙ্গা টিভির সামনে জলাবদ্ধতা নিরসনে বিমানবন্দর সড়কে বনানী ওভারপাস হতে কাকলী পর্যন্ত রিটেনশন পন্ড পূনরুদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া চলমান পাইপলাইন নির্মাণের মাধ্যমে এক মাসের মধ্যে এ এলাকার জলাবদ্ধতাও অনেকাংশে দূর করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের সকল খাল সংস্কার করে পর্যায়ক্রমে হাতিরঝিলের আদলে আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। জনপ্রতিনিধিরা জনগণের কাছে যেমন জবাবদিহি করবেন কর্মচারিরাও তেমনি জবাবদিহি করবেন; আপনি মন্ত্রী হোন আর ছোট কর্মচারি হোন।
তিনি আরো বলেন, আজকে একটি নমুনা ডিএনসিসি মেয়র প্রদর্শন করেছেন। আমাদের অনেকে বলেছে, কিন্তু করে দেখিয়েছে মেয়র আতিক।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম, ৪৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিছুর রহমান নাঈম এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।