নিজস্ব সংবাদদাতা:কিশোরগঞ্জে তালাক দেয়ার জের ধরে বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) দুপুরে প্রাক্তন স্বামীর হামলায় বেসরকারি ক্লিনিক কর্মী মোছা. নাছিমা খাতুন (৩০) গুরুতর আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) দুপুর আড়াইটার দিকে নাছিমা খাতুন শহরের বত্রিশ গোরস্থান রোডে স্থানীয় সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর কামরুন্নাহার লিপি’র বাসা থেকে চাল নিয়ে রিক্সাযোগে বত্রিশ কসাইপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় যাচ্ছিলেন। কিছুদূর যেতেই প্রাক্তন স্বামী মো. আক্কাছ আলী রিক্সার গতিরোধ করে নাছিমা খাতুনের ওপর দা নিয়ে চড়াও হন। এ সময় রিক্সা থেকে নাছিমাকে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে তাকে বেধড়ক মারপিট করেন। এক পর্যায়ে নাছিমার গলায় আক্কাছ আলী পা দিয়ে চেপে ধরে রেখে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী এগিয়ে গিয়ে প্রাক্তন স্বামী আক্কাছ আলীকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তিনি সাথে আনা দা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে নাছিমা খাতুনকে গুরুতর আহত করেন। এ সময় এলাকাবাসী দা’টি তার কাছ থেকে কেড়ে নেয়ায় প্রাণে রক্ষা পান নাছিমা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০০৪ সালের ১২ জুন পারিবারিকভাবে নাছিমার সাথে আক্কাছ আলীর বিয়ে হয়। তাদের ১২ ও ১০ বছর বয়সী দুইটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কিন্তু যৌতুকলোভী স্বামী বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে নাছিমাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। এ রকম পরিস্থিতিতে ২০১৮ সালের ২০ জুন আদালতে স্বামী আক্কাছ আলীর বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে নাছিমা মামলা দায়ের করলে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আদালতে অঙ্গীকারনামা দিয়ে মামলা থেকে অব্যাহতি পান আক্কাছ আলী। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারও যৌতুকের জন্য নাছিমার উপর নির্যাতন শুরু করেন। এরকম পরিস্থিতিতে গত ১৪ মে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আক্কাছ আলীকে তালাক দেন নাছিমা খাতুন। এর জের ধরেই বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) নাছিমার ওপর বর্বর এই হামলা চালান আক্কাছ আলী।
এ ঘটনায় আহত নাছিমা খাতুনের বড় ভাই মো. আফি উদ্দিন বাদী হয়ে শুক্রবার (১৯ জুন) কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা (নং- ৩৭, তারিখ- ১৯/০৬/২০২০) করেছেন।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।