নিজস্ব প্রতিবেদক: মানবপাচারের অভিযোগে কুয়েতে আটক বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুল ইসলাম পাপুল কুয়েতের কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। পাবলিক প্রসিকিউটরের কাছে তদন্তের সময় পাপুল এই বক্তব্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে আরব টাইমস। এদিকে পাবলিক প্রসিকিউটরের অফিস মনে করে এই অবৈধ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সবার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য মামলাটি ফৌজদারি আদালতে প্রেরণ করা উচিত।
কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার বিষয়ে পাপুল পাবলিক প্রসিকিউটরকে জানান, তার কোম্পানিতে ৯ হাজার মানুষ কাজ করে এবং কুয়েতে কাজ করার জন্য একটি বৈধ আদেশ আছে। তার দাবি, তিনি যে কাজ করেছেন সেটির সফলতা নিয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করতে পারবে না। কিন্তু কুয়েতের কিছু কর্মকর্তা তার কাজ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাদের ঠেকানোর জন্যই তিনি ঘুষ দিয়েছেন। পাপুল আরও বলেন, তার কোম্পানিতে যে ধরনের ইকুইপমেন্ট আছে সেটি আর কোনো কোম্পানির কাছে নেই এবং তিনি গুণগতমানসম্পন্ন সেবা প্রদান করেছেন, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখানকার কিছু কর্মকর্তা। এদিকে প্রসিকিউটর অফিসের একটি সূত্র জানায়, এর সঙ্গে অনেক ব্যক্তি জড়িত। এদের সবার দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য অনেক সময়ের প্রয়োজন।
গত ৭ জুন মানবপাচার, ভিসা জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে সংসদ সদস্য পাপুলকে গ্রেফতার করে কুয়েতের পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর উঠে আসে কীভাবে বাংলাদেশের ওই সংসদ সদস্য মানুষকে প্রতারিত করে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন এবং এ কাজে তাকে কুয়েতের প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তারাও সহায়তা করেছেন ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য সুযোগের বিনিময়ে। এখন পর্যন্ত তদন্তে বের হয়ে এসেছে পাপুল প্রতিবছর ঘুষ, উপহার ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৬০ কোটি টাকা লাভ করতেন। এ ছাড়া পাপুল এবং তার কোম্পানির প্রায় ৫০ লাখ কুয়েতি দিনার (প্রায় ১৪০ কোটি টাকা) ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ ফ্রিজ করার জন্য ওই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনুরোধ করেছেন কুয়েতের পাবলিক প্রসিকিউটর। বিদেশের মাটিতে একজন সংসদ সদস্য আটকের ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত অসম্মানজনক বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।