নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চলতি ট্রেনে তৃতীয় লিঙ্গের বা হিজড়াদের চাঁদাবাজির যন্ত্রণা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহসহ সব রুটের ট্রেনগুলোতে ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে তৃতীয় লিঙ্গের চাঁদাবাজি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রেলওয়ে ভিওিক বিভিন্ন গ্রুপে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রতিদিনই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের চাঁদাবাজির এসব ঘটনার ছবিসহ পোস্ট করছেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা। তারপরেও এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের নীরব থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যাএীরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান গ্রুপে আল মামুন শুভ নামক এক যাএী লিখেছেন, রেলওয়ে কতৃপক্ষ যখন এই ব্যাপারে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করছে না, তাহলে একটা কাজ করুক টিকেটের সাথে হিজরা ফি কেটে রাখুক তারপরও সাধারণ মানুষকে এই বিব্রতকর অবস্থা থেকে মুক্তি দিক।
আবেগ দিয়া দুনিয়া চলে না, হিজরা কে যখন কেউ টাকা না দেয় তখন সবার সামনে কাপড় খুলে নিজের লজ্জাস্থান দেখায়।
যেই মানুষটা এই বিব্রতকর অবস্থায় পরে সেই বোঝে পাব্লিক প্লেসে কেমন লাগে এসব।
ট্রেনে হিজরাদের অত্যাচার থেকে সাধারণ মানুষ মুক্তি চায় এবার।
ওবায়দুর রহমান লিখেছেন, হিজরার উৎপাত যদি এতই বেশি হয়, তবে ট্রেনে দায়িত্বরত পুলিশদের কাজ কি?
করোনাকালীন সময়ে রেলওয়ে প্লাটফর্ম এ মাস্ক এবং টিকেট ছাড়া লোক যাওয়া নিষিদ্ধ ছিল। তারপরেও হিজরাদের আসা-যাওয়া অব্যাহত ছিল।
যদি মনে করি তবে স্টেশন মাস্টার এবং রেলওয়ে পুলিশের অদক্ষতার পরিচয়।
আমি যে হিজরার সম্মুখীন হইনি তা নয়। আমার বাবার সাথে যতবার ভ্রমণ করতাম, আব্বু কোনোদিন হিজরাদের টাকা দেয়নি।
বেশি ঝামেলা করলে আব্বু মারার জন্য এক পায়ে দাঁড়াতেন পরে সাইডের লোকজন হিজরাদের বিদায় করে দিতো।
আমার যাতায়াত ঢাকা-দেঃ গঞ্জ রুটে। এদিকের গফরগাঁও এবং ময়মনসিংহ জংশনে এদের আস্তানা। জামালপুর টাউন জংশনেও এদের ফাঁড়ি রয়েছে।
ঢাকা চট্টগ্রাম রুটের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘাঁটি রয়েছে।
অর্থাৎ এরা যেনো রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ন্যায় কাজ করে যাচ্ছে স্টেশন থেকে স্টেশনে।
যদি তাই হয় যে ট্রেনে উঠলে হিজরাদের টাকা দেয়া বাধ্যতামূলক, টাকা না দিলে যদি হেনস্তার শিকার হতে হয়, তবে রেলওয়ের উচিত টিকিটের সাথে এক্সট্রা ১০ বা ২০ রেখে দিতে।
কারণ অতিষ্ঠ।
আমি কয়দিন পরে আবার ট্রেন ভ্রমণ করবো। যদি এমন হয় যে টাকা না দিলে হেনস্তা হতে হচ্ছে, খোদার কসম আমি মেরে ফেলমু।
এতে দায়ভার পুরোটাই রেলওয়ের থাকবে।
রেলওয়ে পুলিশ
মোঃ হাসানুজ্জামান নয়ন লিখেছেন, ট্রেনে হিজরাদের টাকার ভাগ কে কে পায় তা জানতে হবে।।।। যদি রেলওয়ে পুলিশ পায় তাহলে তো কোন কথাই নাই।।।
ইমরান তালুকদার লিখেছেন, রেল এখন হিজড়া ভবঘুরে ভিক্ষুক হকার ছিনতাইকারী মাদকাসক্ত কালোবাজারি এদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে
২০ মার্চ, ১২:২৭ টায় আইনুল হক সুমন লিখেছেন, আজকের দ্রুতযানে হিজড়া!!! প্রথমে এক গ্রুপকে দিলাম৷ কিছুক্ষন আগে পারবর্তী পুরে আরেক গ্রুপ আক্রমন করে! এটার সমাধান জরুরী!!!
আহসানুল মাহবুব চই কমেন্টে লিখেছেন, ট্রেনের বগিতে টিটি/এটেনডেন্স যারা থাকে তারা যাত্রীদের সেবা না দিয়ে হিজরাদের সেবা দিচ্ছে। বিনিময়ে তাঁরাও টু পাইস কামাচ্ছে হয়ত। হিজরাদের অযথা গালিগালাজ করে লাভ নাই। যারা দায়িত্ব পালনে অক্ষম তাদের নামিয়ে দিয়ে নতুন নিয়োগ দেওয়া হউক। ট্রেনের ভিতরে হিজরা অবাধে চাঁদা উঠায় তাঁদের পোশ্রয় পেয়ে। হিজরাদের জন্য তাদের উপযোগী কম’সংস্হানের ব্যবস্হা করা জরুরী।
আরকে রুমন তার পোষ্টে লিখেছেন, ঈশ্বরদী থেকে রাজশাহীগামী কমিউটার ও কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসে হিজরাদের উৎপাত বেশি থাকে আর এদের মূলঘাটি আজিম নগর আর রাজশাহী।
আহমেদ ইফতেখার বেনোজির তার পোষ্টে লিখেছেন, হিজড়াকে ১০/- টাকা দিয়ে যারা বলে উঠে হিজড়ামুক্ত ট্রেন চাই তাদের বলছি, টাকা দেয়া বন্ধ করুন হিজড়াও ট্রেনে উঠা বাদ দিয়ে দিবে ।
কর্মকার সুর্জিত কমেন্ট করেছেন, আপনি এইভাবে পোস্ট করতে পারতেন যে আমরা সবাই মিলে যেন কোন ব্যবস্থা নিতে পারি যেন তারা আর জোর করে আমাদের থেকে টাকা নিতে না পারে, তা না করে আপনি সরাসরি যারা বাধ্য হয়েই টাকা দেয় তাদেরই দোষী বানিয়ে দিলেন? আপনার হোয়ত কোন অভিজ্ঞতা নেই তাই বলেছেন না হলে এতটুকু বুঝতেন যে তাদের কেও টাকা নিজের ইচ্ছায় বা খুশিতে দেয় না মান-সম্মান এর জন্য বাধ্য হয়েই দিতে হয়।
একই পোষ্টে সরকার রাজীব কমেন্টে লিখেছেন, আপনি যতটা সহজে বললেন বিষয়টা ততটা সহজ না। আপনি যখন সিঙ্গেল থাকবেন ওরা টাকা না দিলে আপনার সাথে বেশি বার্গেডিং করবে না, কিন্তু যখন আপনার সাথে মহিলা থাকবে তখন ইজ্জত রক্ষার্থে আপনি না দিয়ে পারবেন না ওদের আচরনটাই এরকম। এমনতো না যে, হিজড়াদের টাকা না দিলেই চলে যায়, কাপড় খুলে ফেলে। ফেসবুকে অনেক বড় বড় কথা বলা যায়, বাস্তবে একটা লোকও প্রতিবাদ করে না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও তো ওদের ষ্টেশনে ঢুকতে বাধা দেয় না।
বাংলাদেশ রেলওয়ে ওয়েষ্ট জোন (বিআরডব্লিউজেড) ফেসবুক ফ্যানস্ গ্রুপে ফিরোজ খান লিখেছেন, হিজরাদের অত্যাচার অনেক বেড়েছে।
রাতের ট্রেনে ঘুম থেকে ডেকে টাকা নিচ্ছে।
টাকা না দিলে অশ্লিল কথা,কাপড় খুলার হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করছে।
ইজ্জত রক্ষার্থে যাত্রীরা নিরুপায় হয়ে হিজরাদের টাকা দিতে বাধ্য হচ্ছে।
বাংলাদেশ রেলওয়েকে এখনি হিজরাদের বিরুদ্ধে একশনে যেতে হবে।আশাকরি রেল তা পারবে।যেমনটি পেরেছিল করোনার সময় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
পরিস্থিতি কিন্তু দিন দিন ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে।
ধন্যবাদ
হিজড়াদের এই অত্যাচার থেকে মুক্তি চান সকলেই। সকলের আবেদন যতদ্রুত সম্ভব এই ট্রেনকে হিজড়াদের হাত থেকে মুক্ত করে ট্রেনে শান্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনুক প্রশাসন।