জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি: যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস’। ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সংঘটিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রতি বছর শোক দিবস পালন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৷
দিবসটি ‘জগন্নাথ হল ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবেও পরিচিত।
শোক দিবস দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল, হোস্টেল ও প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো ব্যাজ ধারণ করা হয়।
সকাল সাড়ে ৭টায় জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করেন। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সকল কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে জগন্নাথ হলের অক্টোবর স্মৃতি ভবনস্থ টিভি কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া, জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা, প্রাক্তন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অজয় কুমার দাস, দুর্ঘটনায় আহত তৎকালীন ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার, প্রাক্তন ছাত্র সুভাষ সিংহ রায়সহ তৃতীয় শ্রেণী কর্মচারী সমিতি, কারিগরী কর্মচারী সমিতি ও চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য আখতারুজ্জামান নিহতদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেদিন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছিল। এ ধরনের দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য বলেন, নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি সবাইকে যত্নশীল থাকতে হবে।
বর্তমান কোভিড-১৯ উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হলে অবস্থানের ক্ষেত্রে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যে কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে তাদের যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ সকল হল মসজিদে মোনাজাত করা হয়।