জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি: স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক স্থান ও স্থাপনাগুলো নিয়ে গঠিত ‘চলমান জাদুঘর’ ঘুরে দেখেছেন ১৯টি দেশের সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা।
এসব দেশের সেনাবাহিনীর অন্তত ৩০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজ শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হেঁটে হেঁটে ওই সব স্থান ও স্থাপনা ঘুরে দেখেছেন।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক বটতলা থেকে সেনা কর্মকর্তারা যাত্রা শুরু করেন। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ এই বটতলায় প্রথম উত্তোলন করা হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। এরপর মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীর স্মরণে নির্মিত স্মৃতি চিরন্তন, ব্রিটিশ কাউন্সিল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, জগন্নাথ হল, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ডাকসু সংগ্রহশালা পরিদর্শন করেন তাঁরা। পরে মধুর ক্যানটিনে গিয়ে তাঁরা কিছুক্ষণ সময় কাটান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চালানো গণহত্যার ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতে ২০১৮ সাল থেকে চলমান জাদুঘর কার্যক্রম শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ। এরই অংশ হিসেবে আজ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সিনিয়র ডিরেকটিং স্টাফ রিয়ার অ্যাডমিরাল এম ময়েনুল হকের নেতৃত্বে ১৯ দেশের সেনা কর্মকর্তারা স্থান ও স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখেন।
অতিথিদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান ও ঘটনা সম্পর্কে জানান সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অজয় দাশগুপ্ত।
পরে অজয় দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রথম টার্গেট ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা সংঘটিত গণহত্যার উপকেন্দ্র বলতে পারি। স্বাধীনতাযুদ্ধে এখানে ১৯৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী প্রাণ দিয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ধূলিকণায় মিশে আছে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের রক্ত। গণহত্যার এসব স্থান ও স্থাপনাগুলো আসলে জীবন্ত জাদুঘর। এগুলোকে আমরা চলমান জাদুঘর নাম দিয়েছি।’