1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

নারীর সমঅধিকারে অর্থনৈতিক মুক্তি: নাইম ইসলাম নিবির 

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২২
  • ১৯৪ Time View

নারীর সমঅধিকারে অর্থনৈতিক মুক্তি

— নাইম ইসলাম নিবির 

 

জীবনের সর্বক্ষেত্রে একজন নারী ও একজন পুরুষের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকার নামই নারীর সমঅধিকার। নারীর অধিকার বলতে বোঝায় কর্মক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীর সমস্বীকৃতি ও স্বাধীনতা, যা সকল বা যে কোন বয়সের নারীর ক্ষেত্রে থাকা উচিত। নারীর এই অধিকার প্রাতিষ্ঠানিক, আইনানুগ ও আঞ্চলিক সংস্কৃতি, রীতি-নীতি দ্বারাও স্বীকৃত হওয়া প্রয়োজন। এটি নির্ভর করে কোন দেশের সাধারণ মানুষের মনোভাব, সামাজিক রীতি-নীতি, দেশের আইন ইত্যাদির ওপর। উন্নত দেশগুলোতে অনেকাংশে নারী-পুরুষকে কর্মক্ষেত্রে বা মর্যাদার স্থানে আলাদা করে বিচার করা হয় না। সেখানে নারীরা সকল ক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সমাজে তাদের আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। বর্তমানে এমন কোন কাজ নেই যেখানে নারীরা পিছিয়ে আছে। আজকাল কায়িক পরিশ্রমের কাজগুলোতেও নারীরা অংশগ্রহণ করছে। যেমন- শ্রমিক হিসেবে নারীরা কাজ করছে মাঠে ঘাটে যুদ্ধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আমাদের দেশসহ বিভিন্ন দেশে সশস্ত্র বাহিনীগুলোতে নারীরা তাদের দক্ষতা প্রমাণ করছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যবসা-বাণিজ্য সকল ক্ষেত্রে নারীরা অংশগ্রহণ করছে সমানভাবে। সভ্যতার পরিপূর্ণ বিকাশের স্বার্থে নারীর অধিকার স্বীকৃত হওয়া প্রয়োজন সকল ক্ষেত্রে সকল স্তরে।

নারীর অধিকার নিয়ে আলোচনা করতে গেলে নারী ও পুরুষ উভয়ের সমান অধিকারের বিষয়টিই আলোচ্য বিষয় হিসেবে এসে যায়। নারী শুধু ক্ষমতা পেলে হবে না। পুরুষের সঙ্গে সঙ্গে নারীর অধিকারেরও প্রয়োজন। নারীকে সমাজে তার অধিকার দিতে হবে যথাযথভাবে। সমঅধিকারের ক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, আমাদের দেশে নির্বিত্ত  নারীরা সমঅধিকার থেকে বঞ্চিত। দেখা যায় নারী এবং পুরুষ শ্রমিক যেখানে কাজ করছে, সেখানে একই কাজের জন্য নারী শ্রমিককে পারিশ্রমিক কম দেয়া হয় পুরুষের তুলনায়। যেটি নারীর জন্য অসম্মানের। বর্তমানে নারীরা পুরুষের সঙ্গে সমানভাবে তাল মিলিয়ে সকল ক্ষেত্রে সকল স্তরে অবদান রাখছে। শিক্ষা থেকে শুরু করে সকল কর্মক্ষেত্রে নারীরা বর্তমানে পুরুষের চাইতে পিছিয়ে তো নেইই, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে। কিন্তু এখনও সমাজে পুরুষের আধিপত্য অনেক বেশি। সমাজকে আমরা এখনও পুরুষ শাসিত সমাজ বলে আখ্যা দিচ্ছি। পরিবারে দেখা যায় পুরুষের কতৃত্ববাদিতাই বেশি। পারিবারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অনেকাংশে নারীর চাইতে পুরুষের সিদ্ধান্তই গৃহীত হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।

বর্তমানে বুদ্ধিবৃত্তিক সব ধরনের কাজে নারীরা পুরুষের সমপারদর্শী। এই জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করে নারী উন্নয়ন ও নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সকল ক্ষেত্রে নারীকে নেতৃত্ব দানের সুযোগ করে দিতে হবে। সুযোগ ও সক্ষমতা অর্জন এই দুইয়ের মধ্যে সংযোগ হলেই ব্যাপকভাবে সামাজিক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। সমাজে মোট জনশক্তির অর্ধেকই নারী। সুতরাং সমাজের এই অর্ধেক জনশক্তিকে বাদ দিয়ে বা পেছনে ফেলে কোন জাতি বা দেশ অর্থনৈতিক মুক্তি ও উন্নত সমাজ ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখতে পারে না। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের আলোকে নারী-পুরুষের সমতা এবং নারীর জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে সকলকে।

নারীর সমঅধিকার নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেক নারীকে তার নিজের বোধকে জাগ্রত করতে হবে। তাকে তার পারিবারিক, সামাজিক, আইনগত অবস্থান সম্পর্কে বুঝতে হবে। ব্যক্তি হিসেবে একজন নারীর সমাজে কতটুকু অধিকার ও সুযোগ আছে, তা বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। নতুবা নারীরা সেই অধিকার ভোগ করতে পারবে না। অধিকার থেকে সে বঞ্চিতই থেকে যাবে। নারীর অধিকারকে মর্যাদা দেয়া নির্ভর করে একটা পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের ওপর। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র। সাধারণত সামাজিক কাঠামোর মধ্যে একটি বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে নারী-পুরুষের বৈষম্য সৃষ্টি হয়। যাকে আমরা বলি পুরুষতান্ত্রিক বা পিতৃতান্ত্রিকতা। এই দৃষ্টিভঙ্গি পুরুষ-নারী উভয়ের মধ্যেই পরিলক্ষিত হয়। এ কারণেই নারীর অগ্রযাত্রা, নারীর সক্রিয় দায়িত্বশীল ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রে সাফল্যের মূলমন্ত্র হিসেবে গণ্য হয় না। নারীর প্রতি কিছু মানুষের সহিংসতা, নিষ্ঠুর আচরণ এবং ধর্মের নানা ধরনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে নারীকে পিছিয়ে রাখা হয়। এজন্যই সমাজে নারীর সমঅধিকার প্রয়োজন। বাংলাদেশের সংবিধানে কয়েকটি অনুচ্ছেদে নারী-পুরুষের সমান অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তা কতটুকু কার্যকর হচ্ছে তা দেখার বিষয়। কারণ ব্যক্তিগত জীবনে যেমন বিয়ে বা বিয়ে-বিচ্ছেদ, সন্তানের উত্তরাধিকার, পুত্র-কন্যার সম্পত্তিতে সমঅধিকার, নারী-পুরুষের সম্পত্তিতে সমঅধিকার ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোতে আমাদের দেশের আইন অনেকটা সেকেলে। এর সংস্কার হওয়া প্রয়োজন।

ইসলামে নারীদের অনেক সম্মান ও মর্যাদা দেয়া হয়েছে। বিদায় হজে আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘হে মানুষ ! নারীদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি। তাদের সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করো না। তাদের ওপর তোমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, তেমনি তোমাদের ওপরও তাদের অনুরূপ অধিকার রয়েছে।’ বিদায় হজের বাণী থেকে এটিই প্রমাণিত হয় যে, আমাদের প্রিয় নবী নারী ও পুরুষ উভয়কেই যথাযথ মর্যাদা দিয়ে গেছেন। তিনি পুরুষকে নারীর চেয়ে বেশি নয় বরং উভয়কেই অধিকারের দিক থেকে যথাযথ মর্যাদা ও অধিকারের আসনে বসিয়েছেন।

শারীরিকভাবে নারীরা একটু দুর্বল। দুর্বল বলতে বোঝাচ্ছি নারীরা শারীরিক কাঠামোর কারণে পুরুষের তুলনায় একটু কোমল। ফলে নারীদের বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়। বর্তমানে আমাদের সমাজে নারীরা মোটেও নিরাপদ নয়। জীবনযাপন এবং চলাফেরার ক্ষেত্রে শারীরিক কারণে নারীকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা হতে হয়। এখানেই নারীদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। বর্তমানে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে নারীরা অতি মাত্রায় ধর্ষিত হচ্ছে। ধর্ষিত নারীরা কখনও বিচার পাচ্ছে, কখনও পাচ্ছে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে হেয় হবে বলে কেউ কেউ ধর্ষিত হলেও এর বিচার চাচ্ছে না। এই দিক থেকে নারীদের অনেক বেশি সোচ্চার হতে হবে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও বিজ্ঞ বিচারকগণকে হতে হবে আরও বেশি কঠোর। যদি ঠিকমতো ধর্ষণকারীর বিচার করা যায়, তাদের বিচারের আওতায় আনা হয়, তবে সমাজ থেকে এক সময় ধর্ষণ অনেকটাই কমে যাবে।

আজকাল দেখা যায় স্বামীরা স্ত্রীকে খুন করছে তুচ্ছ দ্বন্দ্বের কারণে। বর্তমানে নারী পাচার, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, এসিড সন্ত্রাস, যৌন নিপীড়ন, ফতোয়াবাজির শিকার হচ্ছে অসংখ্য নারী। এটি সমাজের এক ধরনের অবক্ষয়। নারীদের সমাজে, রাজপথে, সকল কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিতে হবে। সর্বক্ষেত্রে নারীদের নিরপেক্ষ সমাজ অধিকার এবং সঠিক নিরাপত্তা বাস্তবায়নকে আরও সক্ষম ও কার্যকর করতে হবে। অর্থাৎ, সকল ক্ষেত্রে নারীদের পদচারণা ও একই সঙ্গে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিভিন্ন নারী সম্পর্কিত অপরাধ দমনের জন্য সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কঠোর আইন তৈরি করেছে। আমরা সেসব আইন মেনে চলার চেষ্টা করব। এছাড়াও বাংলাদেশের নারী অধিকার বা নারীর ক্ষমতায়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে অনেকভাবে। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন মহিয়সী নারী। তিনি নারী অধিকার, নারীর ক্ষমতায়নের ওপর অনেকখানি জোড় দিয়েছেন। তাই আমাদের দেশে সর্ব পর্যায়ে নারীর বিচরণ আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা জাতিগতভাবে নারীর সম্মান, মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখার চেষ্টা করব। তবেই সমাজ উন্নত হবে, জাতি হবে উন্নত।

নাইম ইসলাম নিবির : প্রধানমন্ত্রীর স্নেহধন্য রাজনীতিক ও কলামিস্ট

nayemulislamnayem148@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..