1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

পিছু হঠছেন শুভেন্দু? পশ্চিমবাংলায় আশায় বুক বাঁধছে তৃণমূল

  • Update Time : বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০
  • ২২৮ Time View

বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা: এ যেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে গুগলি তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের।
কয়েকদিন আগে সৌগত রায়কে চাপে ফেলে দিয়ে অর্জুন সিং দাবি করেছিলেন, শুভেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়–সহ পাঁচজন হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা বিজেপিতে যোগ দেবেন। আত্মপক্ষ সমর্থনে সঙ্গে সঙ্গেই মুখ খোলেন সৌগত। জানান, মরে গেলেও তিনি বিজেপিতে যাবেন না। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাবেন কিনা, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারেননি সেদিন। সেই জবাবটা দিলেন মঙ্গলবার। জানালেন, শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলেই আছেন। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তৃণমূল।

এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের সৌগত রায় স্পষ্ট বলেন, ‘শুভেন্দুকে নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। তিনি তৃণমূলে যেমন ছিলেন, সেই ভাবেই তৃণমূলে রয়েছেন। আগামী নির্বাচন আমরা সবাই একসঙ্গেই লড়ব। বিজেপিকে হারিয়ে আমরাই ক্ষমতায় থাকব। খেজুরিতে আজ শুভেন্দু যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে তাঁর ইচ্ছেটাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। দলের বিরুদ্ধে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। বরং তাঁর আচরণ দেখে এ কথা কখনও মনে হয়নি যে, তিনি অন্য রকম কিছু ভাবছেন।’ উল্লেখ্য, সোমবার তাঁর সঙ্গে টানা দেড়ঘণ্টা বৈঠক করার পরেও রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গিয়েছিল। মঙ্গলবার অবশ্য সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন সৌগত। কিন্তু প্রশ্ন হল, সবই যদি ঠিক থাকে, তা হলে তাঁর সঙ্গে এতবার বৈঠকে বসতে হচ্ছে কেন? বলা বাহুল্য, এই প্রশ্নের জবাব দেবেন না বলে জানিয়ে দেন সৌগত। সেই সঙ্গে এ কথাও বলেন, ‘রাজ্য সরকারের মন্ত্রী হিসেবে সোমবারও তিনি সল্টলেকের পরিবহণ ভবনে গিয়েছিলেন। দায়িত্বের সঙ্গে কাজও করেছেন। তা হলে তাঁকে নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠছে কেন?’‌‌‌‌

অন্যদিকে, মঙ্গলবার ছিল খেজুরি দিবস। এই দিবস পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে ‘হার্মাদ মুক্তি দিবস’ হিসেবেও পরিচিত। ২০১০ সালে এলাকা দখলকে ঘিরে সিপিএম এবং তৃণমূলের সঙ্ঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল খেজুরি। প্রাণ হারান বহু মানুষ। ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর খেজুরিতে শান্তি ফেরে। সেই স্মৃতিতে প্রতি বছর খেজুরি দিবস পালন করে তৃণমূল। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে সকাল এগারোটায় খেজুরির বাঁশগোড়া থেকে বিশাল মিছিল শুরু হয়। শেষ হয় কামারদায়। মিছিলে তিনি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন খেজুরির তৃণমূল বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল ও কাঁথি দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতি। এ বছরই প্রথম একেবারে অরাজনৈতিক ভাবেই এই দিবস পালন করলেন শুভেন্দু। প্রতি বছরই তৃণমূলের ব্যানারে এই কর্মসূচি নেওয়া হত। এবার কিন্তু তা হয়নি। তাই সৌগতবাবু যে দাবিই করুন না কেন, শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ধোঁয়াশা পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠা যায়নি বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে এদিন শুভেন্দুর মিছিলে যদিও তৃণমূলের কোনও প্রতীক ছিল না, কিন্তু খেজুরিতে শুভেন্দুর মিছিলের সূচনা এবং সমাপ্তিস্থলে দেখা গিয়েছে দলের পতাকা এবং ব্যানার। এমনকী, খেজুরিতে ঝোলানো শুভেন্দুর ছবির একাধিক কাট–আউটে ছিল ‘জোড়া ফুল’ প্রতীক। মিছিল যে সব পথ দিয়ে গিয়েছে, সেখানে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট–আউটও দেখা গিয়েছে।

এই ঘটনাও যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। শুভেন্দু–ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল জানান, মিছিল এবং সভার জন্য খেজুরির সর্বত্র দলীয় পতাকা, পোস্টার, ব্যানার লাগানো হয়েছে। শুভেন্দুর পাশাপাশি দলনেত্রীর ছবি দেওয়া পোস্টারও লাগানো হয়েছে। শুভেন্দু তৃণমূলেরই নেতা। তাঁর নির্দেশেই সভামঞ্চে বা মিছিলে কোথাও দলীয় ব্যানার বা পতাকা লাগানো হয়নি। তবে এ দিনের কর্মসূচি তৃণমূলেরই দলীয় কর্মসূচি। তাই রাস্তায় নেত্রী এবং নেতার ছবি দিয়ে ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে। এতে কোনও সমস্যা নেই। বাংলার রাজনীতি পর্যবেক্ষকদের মতে, শুভেন্দুর আচরণে তৃণমূলের প্রতি নমনীয় ভাবই প্রকাশ পেয়েছে। তাই তার ইতিবাচক জবাবও দিয়েছে তৃণমূল। এদিন বিকেলে খেজুরিতে তৃণমূলেরও একটি কর্মসূচি ছিল। কিন্তু শুভেন্দুর নমনীয় আচরণের সংবাদ পাওয়ার পরই তৃণমূলের পক্ষ থেকে সেই কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রাম দিবসে শুভেন্দুর পাল্টা সভা করেছিল তৃণমূল। সেখানে ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পূর্ণেন্দু বসু। এ ছাড়া খেজুরির সভায় শুভেন্দুর মুখে শোনা গিয়েছে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনিও। নন্দীগ্রাম দিবস থেকে খেজুরি দিবসে বদলে গিয়েছে তাঁর স্লোগানও। নন্দীগ্রাম দিবসে তিনি বলেছিলেন, ‘ভারতমাতার জয় হোক।’

রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, সৌগত রায়ের সঙ্গে সোমবারের বৈঠকের ফলেই শুভেন্দুর মুখে ফিরেছে ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি। তাই ফের আশায় বুক বাঁধছে তৃণমূল। খেজুরির মিছিল শেষে কামারদার সভায় শুভেন্দু বক্তব্য পেশ করেন। তাঁর বক্তব্যে কোনও রাজনৈতিক প্রসঙ্গ আসেনি। তাই সেই বক্তব্য নিয়ে কোনও রাজনৈতিক বিতর্কও তৈরি হয়নি। সভায় তিনি বলেন, ‘‌আমি প্রত্যেক বছর ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বরের কথা সকলকে স্মরণ করাই। কারণ, ‌২০১০–এর আগে খেজুরিতে গণতন্ত্র ছিল না। কৃষক নিজের ধান নিজে তুলতে পারত না। পুকুরে বিষ দেওয়া হত। ঘরছাড়া হতে হয়েছে অনেককে। মধ্যযুগীয় বর্বরতার সম্মুখীন হতে হয়েছে খেজুরির মানুষকে। প্রচুর মানুষ খুন হয়েছেন খেজুরিতে। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে পৌঁছে এলাকা হার্মাদ–মুক্ত করেছিলাম। খেজুরিকে ব্যবহার করে নন্দীগ্রামকে রক্তাক্ত করা হয়েছে। সেই সময়ের পুলিশ হার্মাদদের সাহায্য করেছে। আমি আপনাদের পাশে সবসময় এভাবেই থাকতে চাই। আমরা মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করি। খেজুরিতে গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, শান্তি বজায় থাকুক এই প্রার্থনা করি।’‌
এখন দেখার এই নমনীয় আচরণ শুভেন্দুকে কোন পথে নিয়ে যায়!

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..