ফেনী প্রতিনিধি: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নেমে আসা পানির চাপে ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজী এলাকায় মুহুরী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৬ স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে বিস্তীর্ণ এলাকায় পানি ঢুকে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের, ডুবে গেছে মুরগি খামার ও বীজতলা, বন্ধ রয়েছে সড়ক যোগাযোগ।
জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ১৫০ টন চাল ও ২ লাখ টাকার সহায়তা বরাদ্দ হয়েছে বলে জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে ফুলগাজী বাজারের বিভিন্ন দোকানে পানি ঢুকে আসবাবপত্র ও মালামাল নষ্ট হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে কৃষি ও মৎস্য বিভাগের মাঠকর্মীরা কাজ করছেন। একদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব অন্যদিকে প্লাবনে দুর্যোগে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নদী তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষ। তবে সোমবার বিকাল পর্যন্ত পানি কমতে শুরু করায় কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, রবিবার বিকালে ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের মুহুরী নদীর কিসমত ঘনিয়া মোড়া ও উত্তর দৌলতপুর, সাহাপুর অংশের ৪টি স্থানে নদী রক্ষা বাঁধে ভাঙন ধরে। এতে করে ঘনিয়া মোড়া, কিসমত ঘনিয়া মোড়া, পূর্ব ঘনিয়া মোড়া, উত্তর দৌলতপুর, বৈরাগপুর, সাহাপাড়া, উত্তর বরইয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের ধনিকুন্ডা ও শালধর অংশে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুই স্থানে ভেঙে অন্তত আরো ৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. জসিম উদ্দিন। তিনি জানান, ইউনিয়নের দূর্গাপুরের কালাম মেম্বারের বাড়ির পাশে ও দক্ষিণ শালধর জহির চেয়ারম্যানের (সাবেক) বাড়ির পাশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুইটি অংশ ভেঙে দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর, শালধর, দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর, পাগলীরকুল, উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন জানান, সোমবার সকালে মুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে বিকাল পর্যন্ত পানির চাপ কিছুটা কমেছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম ভূঞা জানান, পানিবন্দি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ চলছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।