বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা:আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে পালাবদল হচ্ছেই। এমনই বিশ্বাস বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। শুধু তাই নয়, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে পর্যুদস্ত করে ক্ষমতায় আসছেই বিজেপি। সেই সঙ্গে বুধবার এমনই একটি কথা বললেন, যে কারণে তাঁর দল বাংলার ক্ষমতায় এলে নবান্ন থেকে রাজ্য সরকারের সচিবালয় মহাকরণে ফিরে আসতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে।
বৃহস্পতিবার বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার ডাকে নবান্ন অভিযান। নেতৃত্ব দেবেন যুব মোর্চার সর্বভারতীয় সুপ্রিমো তেজস্বী সূর্য। থাকবেন বাংলার যুব মোর্চার সভাপতি তথা সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সেই অভিযানের অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার শীর্ষ নেতারা। প্রত্যাশিত ভাবেই সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। তবে সেইজন্য বিজেপি যুব মোর্চা নবান্ন অভিযান থেকে পিছিয়ে আসেনি। বরং আগের কর্মসূচি বহাল রেখেছেন ওই দলের শীর্ষনেতারা। সেই সঙ্গে গত কয়েকদিন ধরেই বিজেপি নেতারা এই অভিযান আটকালে বিজেপি যে পাল্টা আঘাত হানবে, সে কথা বলে বারবার হুমকি দিয়ে এসেছেন।
সেই কারণে এই অভিযান ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা করে প্রস্তুত রয়েছে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। জল্পনা আরও বেড়েছে রাজ্য সরকারের একটি সিদ্ধান্তে। রীতিমতো অদ্ভুত কারণ দেখিয়ে বৃহস্পতিবার নবান্নে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। সরকারের তরফে বলা হয়েছে, অতিমারি পরিস্থিতির মোকাবিলায় বৃহস্পতিবার নবান্ন জীবাণুমুক্ত করা হবে। তাই নবান্নে সমস্ত সরকারি সমস্ত দফতর বন্ধ থাকবে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বিজেপি নেতাদের হুমকিকে রাজ্য সরকার যে হাল্কা ভাবে নিচ্ছে না, এই ঘোষণার পিছনে সেই কারণটিও থাকতে পারে। এই প্রসঙ্গে এদিন সাংবাদিকদের কাছে মুখ খোলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি পরিষ্কার বলেন, ‘নবান্ন তো বন্ধ হওয়ারই কথা। তাই আগে থেকেই রাজ্য সরকার তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বৃহস্পতিবারও সেই কারণে নবান্ন বন্ধ রাখছে।’
পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকই আছে। এমনিতেই আগামী বছর বন্ধ হয়ে যাবে। না হয় আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’ এ কথা বলার সময় তাঁর মুখে শ্লেষের হাসি ফুটে ওঠে। তবে, বিজেপির রাজ্য সভাপতির এ কথার পরই রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের মধ্যে একটি জল্পনা ছড়িয়ে পড়ে। তা হলে কি বিজেপি রাজ্যের ক্ষমতায় এলে ফের রাজ্যের সচিবালয় সরে যাবে নবান্ন থেকে। যদি যায়, তা হলে কোথায় যাবে? নাকি ফের ফিরে আসবে মহাকরণে? যদিও এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি আর কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর আচমকাই কলকাতার মহাকরণ থেকে সচিবালয় সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, সংস্কারের জন্য মহাকরণে সরকারের কাজকর্ম করা সম্ভব নয়। তখনই দ্রুত নবান্নে সরকারের সচিবালয় সরিয়ে নেওয়া হয়। বলা হয়েছিল, সাময়িক ভাবে স্থানান্তরিত হচ্ছে সচিবালয়। অল্প সময়ের মধ্যেই সংস্কারের পর সচিবালয় ফিরে আসবে মহাকরণে। কিন্তু ৯ বছর কেটে গেলেও নবান্ন থেকে মহাকরণে আর রাজ্য সরকারের সচিবালয় ফিরে আসেনি।