দৈনিক প্রত্যয় ডেস্কঃ করোনা মহামারির অজুহাতে এক লাখ ৭০ হাজার বিদেশি কর্মপ্রার্থীদের ভিসা এবং গ্রিনকার্ড স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই সিদ্ধান্ত চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানান ট্রাম্প।
এ সময় তিনি বলেন, তার এই পদক্ষেপের ফলে মহামারির কারণে বেকার হয়ে পড়া এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন নাগরিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
আপাতত চার ধরনের ভিসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেগুলো হচ্ছে- এইচ১বি, এইচ ৪, এল১ এবং জি১ ভিসা। এ ছাড়া ভবিষ্যতে এইচ১বির ক্ষেত্রে লটারির চেয়ে যোগ্যতা মানে জোর দিতে বলা হয়েছে।
ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয়রাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ইতিমধ্যে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়েছে।
মার্কিন অভিবাসন দপ্তরের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে যে ১ লাখ ৩৩ হাজার বিদেশিকে এইচ১বি ভিসার অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তাদের বেশিরভাগই ছিল ভারত ও চীনের দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। এবার ভিসা ও গ্রিনকার্ডপ্রত্যাশী ছিলেন এক লাখ ৭০ হাজার।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশটিতে উচ্চ দক্ষতার বিদেশি প্রযুক্তিকর্মী, শীর্ষ নির্বাহী, কৃষি খাতের সহায়ক কর্মী ও গৃহকর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, এক লাখ ৭০ হাজার মানুষের ভিসা ও গ্রিনকার্ড স্থগিত করা হয়েছে। এ বছরের শেষ নাগাদ ৫ লাখ ২৫ হাজার লোকের চাকরিতে এর প্রভাব পড়বে।
এই স্থগিতাদেশের ফলে এক লাখ ৭০ হাজার লোকের গ্রিনকার্ড অনিশ্চয়তায় পড়ল। এসব বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ পেতে এখন অপেক্ষা করতে হবে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত। গত এপ্রিলে একবার এসব গ্রিনকার্ড স্থগিত করা হয়েছিল। সোমবার এ স্থগিতাদেশ আরও বাড়ানো হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি সচল হওয়ার পর কর্মহীন নাগরিকরা যাতে কাজের ধারায় ফিরতে পারেন, সেই সুরক্ষা দেবে ভিসার এই নিষেধাজ্ঞা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, এই বিধিনিষেধ আমেরিকানদের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার চাকরি উন্মুক্ত করবে।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভাইরাসের কারণে যেসব মার্কিন নাগরিক চাকরিচ্যুত কিংবা কর্মহীন হয়েছেন, তাদের স্থলে শ্রমিক হিসেবে বিদেশ থেকে আসা নতুন অভিবাসীদের নেয়া হবে, এটা অন্যায় ও ভুল। সবার আগে দেশের শ্রমিকদের প্রতি যত্নশীল হতে হবে।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধতা এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার সুযোগ দেয় গ্রিনকার্ড। সাধারণত, প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ১০ লাখ গ্রিনকার্ড অনুমোদন করে থাকে।
এই নিষেধাজ্ঞায় এখন প্রযুক্তি সংস্থা এবং বহুজাতিক কর্পোরেশনে কাজ করতে আগ্রহী H-1B, H-2B, ও J-1, L-1 ভিসার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়েছে। যারা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে চাকুরি ও গ্রিনকার্ডের আবেদন করেছেন, এখনো যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাননি তারাও অন্তর্ভুক্ত।
ডিপিআর/ জাহিরুল মিলন