1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

বিশ্বনবির অবমাননায় শায়খ সুদাইসির নিন্দা

  • Update Time : বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০
  • ২৬৯ Time View

প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: পবিত্র কাবা শরিফের জুমআর খুতবায় গত ১৩ রবিউল আউয়াল ফ্রান্সের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বিশ্বের ১৮০ কোটি মুসলমানের পক্ষ থেকে শায়খ সুদাইসি বিশ্বনবির অবমাননাকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরেন প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্দর চারিত্রিক মাধুর্যের অনন্য দৃষ্টান্ত। হারামাইন ডটইনফো ফেসবুক পেজ অবলম্বনে তা তুলে ধরা হলো-

তিনি বলেন, ‘বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুয়ত লাভের পর থেকে গত প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে সারা জগত জুড়ে আলোকিত মনোহর চরিত্রমাধুরীর সুবাস ছড়িয়ে আসছেন। তাঁর চরিত্র মাধুর্যে বিমোহিত পুরো বিশ্ব। কথা ও কাজের ঝলকে মুগ্ধ পৃথিবী। অথচ মত প্রকাশের স্বাধীনতার নামে তাঁরই ব্যাপারে ঘৃণ্য ও নিকৃষ্ট খেলায় মেতে ওঠেছে ফ্রান্স। দেশটির এ ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যে ১৮০ কোটি মুসলমানের পক্ষ থেকে বিশ্বনবির অবমাননাকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

কাবা শরিফের প্রধান ইমাম ও খতিব শায়খ সুদাইসি প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর আগে ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪২ হিজরির জুমআর খুতবার শুরুতেই বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তুলনাহীন চারিত্রিক মাধুর্য ও জগত শ্রেষ্ঠ তাঁর অনন্য সব বৈশিষ্ট্যগুলো তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আল্লাহ তাঁর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যেসব গুণ, মর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্ব, মনোনয়ন ও উজ্জ্বল চয়নের মাধ্যমে বিশিষ্ট করেছেন; কলম, কালি ও কাগজে তা লিখে শেষ করা যাবে না। এ ব্যাপারে আমাদের রবের একটি বাণীই যথেষ্ট, ‘আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি।’ (সুরা আলাম-নাশরাহ : ৪)
কবির ভাষায়-
‘তাঁর চরিত্রালেখ্য আলোচনায় অন্তর জেগে ওঠে
যেমন বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পায় সৃষ্টিজগত।
তাঁর স্বভাব পবিত্র, মর্যাদা সউচ্চ,
তাঁর সবই সুন্দরম, সবই মুক্তোসম।’

তিনি বলেন, তাঁর চরিত্রমাধুরীগুলো কল্যাণ, ছোট-বড় পুণ্য, পূর্ণতর হেদায়েত, সুষম ইনসাফে ভরপুর। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন গঠনে-আচরণে ও চেহারা-চরিত্রে অনন্য। গঠনগত দিক থেকে তিনি উজ্জ্বল বর্ণ, নির্মল ও দীপ্তিময় ছিলেন। সুদর্শন ও কমনীয়। তাঁর দুই চোখ ছিল কালো ও ডাগর। চোখের পাতার প্রান্তদেশ ছিল ঘন ভ্রবিশিষ্ট। কণ্ঠ ছিল স্বরভাঙা। কাঁধ ছিল প্রশস্ত। চুল ছিল মিশমিশে কালো।

তিনি নীরব থাকলে গাম্ভীর্য ফুটে উঠত। কথা বললে সৌন্দর্য ঝরে পড়ত। দূর থেকে দেখলে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ও মনোহর ছিলেন তিনি। কাছে থেকে দেখলে সবচেয়ে উত্তম ও চিত্তাকর্ষক। মিষ্টভাষী; একেবারে নিখুঁত। এতে এতটুকু কমও নয়, বেশিও নয়।

তাঁর শারীরিক গঠনও ছিল চমৎকার। তাঁর ঘন শ্মশ্রুমণ্ডিত, পুরু কাঁধবিশিষ্ট, হাত ও পায়ের দুই তালু চওড়া, তিনি লিকলিকে লম্বা ছিলেন না; আর দৃষ্টিকটু খাটোও ছিলেন না। সিঁথি কাটা চুলবিশিষ্ট পরিপাটি ছিলেন তিনি। যখন কথা বলতেন তখন মনে হতো যেন তাঁর সামনের দাঁতগুলো থেকে আলো বের হচ্ছে। হাদিসের একাধিক বর্ণনায় যেমন ছিলেন বিশ্বনবি-

– ইমাম বুখারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হজরত বারা বিন আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মোবারক কি তরবারির মতো (চকচকে) ছিল? তিনি বললেন, ‘না, বরং চাঁদের মতো (স্নিগ্ধ ও মনোরম) ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দুই কানের লতি পর্যন্ত প্রসারিত ছিল।’ (বুখারি)

– হজরত আলি বিন আবি তালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না অতি লম্বা ছিলেন আর না (অতি) বেঁটে ছিলেন। তাঁর দুই হাত ও দুই পা ছিল গোশতবহুল, মাথা ছিল আকারে বড় এবং হাড়ের গ্রন্থিগুলো ছিল স্থূল ও শক্তিশালী। তার বুক থেকে নাভি অবধি প্রলম্বিত ফুরফুরে পশমের একটি রেখা ছিল। চলার সময় তিনি সম্মুখের দিকে ঝুঁকে হাঁটতেন, যেন তিনি ঢালবিশিষ্ট জায়গা দিয়ে হেঁটে চলেছেন। আমি তাঁর আগে কিংবা তাঁর পরে আর কাউকে তাঁর মতো দেখিনি।’ (তিরমিজি)

হজরত জাবির বিন সামুরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘আমি একবার পূর্ণিমা রাতের স্নিগ্ধ আলোতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লাল চাদর ও লুঙ্গি পরিহিত অবস্থায় দেখলাম। তখন আমি একবার তাঁর দিকে ও একবার চাঁদের দিকে তাকাতে থাকলাম। মনে হলো তিনি আমার কাছে পূর্ণিমার চাঁদের চেয়ে অধিক সুন্দর।’

তাঁর শারীরিক সৌন্দর্য বর্ণনা শায়খ সুদাইসি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সভা কবি হাসসান বিন সাবেতের একটি কবিতাংশ তুলে ধরেন। কবি বলেন-
‘তোমার চেয়ে সুন্দর কোনো চোখ পৃথিবীতে দেখেনি
তোমার মহৎ কোনো মাতা প্রসব করেনি।
তুমি এমন দোষমুক্ত হয়ে সৃষ্টি হয়েছ
যেন তুমি যেভাবে চেয়েছ সেভাবেই জন্ম নিয়েছ।’

মুসলিম উম্মাহকে লক্ষ্য করে শায়খ সুদাইসি বলেন- ইসলামের ভাইয়েরা! সৃষ্টির সেরা মানবের প্রিয় উম্মতেরা! নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাচন ও বাকরীতি সম্পর্কে যদি বলতে যাই, তাহলে আমরা দেখি- তিনি ছিলেন দীর্ঘ নীরবতার অধিকারী, প্রয়োজন ছাড়া কথা বলতেন না। কথা শুরু ও শেষ করতেন ‘বিসমিল্লাহ’ দিয়ে। সারগর্ভ ও সুস্পষ্ট কথা বলতেন।

– উম্মুল মোমিনিন আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তোমাদের মতো চটপটে তথা অস্পষ্টভাবে তাড়াতাড়ি কথা বলতেন না, বরং তাঁর প্রতিটি কথা ছিল সুস্পষ্ট। শ্রোতারা খুব সহজেই তা হৃদয়ঙ্গম করতে পারত।’ (তিরমিজি)

– নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর সঙ্গীদের সঙ্গে অধিকাংশ সময় মুচকি হাসিতে কথা বলতেন। হজরত আবদুল্লাহ বিন হারিস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চেয়ে বেশি মুচকি হাসি দিতে আমি আর কাউকে দেখিনি।’

– তিনি আরও বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধু মুচকি হাসিই দিতেন।’
– হজরত জারির বিন আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন ‘আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঘরে প্রবেশ করতে কোনোদিন আমাকে বাধা প্রদান করেননি এবং যখনই আমাকে দেখেছেন মুচকি হাসি দিয়েছেন।’ (বুখারি)।

– হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, লোকেরা বলল- ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের সঙ্গে কৌতুকও করেন, তিনি বললেন, ‘আমি সত্য ব্যতিত কিছু বলি না।’

শায়খ সুদাইসি আরও বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সর্বাধিক বিনয়ী। একাধিক হাদিসে তা প্রমাণিত।
– হজরত আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, এক মহিলা নবীজির কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহু! আপনার সঙ্গে আমার কিছু প্রয়োজন আছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : ‘হে অমুকের মা! তুমি যে কোনো গলিতে ইচ্ছে বস, আমি তোমার কাছে গিয়ে বসব।’ বর্ণনাকারী বলেন, ‘অতপর ওই মহিলা গিয়ে বসল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও গিয়ে বসলেন। এমনকি সে তার প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নিল।’ (মুসনাদে আহমাদ)
– হজরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুগ্ণ ব্যক্তিকে দেখতে যেতেন, জানাজায় হাজির হতেন, গাধায় আরোহণ করতেন। গোলামের দাওয়াতও কবুল করতেন। বনু কুরায়যার যুদ্ধের দিন তিনি একটি গাধায় সওয়ার ছিলেন, খর্জুর ছাল নির্মিত লাগাম ছিল এর মুখে আর তাতে ছিল খর্জুর ছাল নির্মিত একটি আসন।’ (তিরমিজি)

শায়খ সুদাইসি বলেন, প্রিয় ভাইয়েরা, এ হলো বর্ণাঢ্য আদর্শ ও আলোকিত চরিত্রসম্পন্ন পবিত্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আলো ও চরিতমালার সমৃদ্ধ সাগরের সামান্য ঝলক। যেন সুমিষ্ট ভারী মেঘমালার এক পশলা বৃষ্টি। আল্লাহ যার সমুচ্চ মর্যাদা ও সুউচ্চ মাহাত্ম্য বর্ণনায় কথা বলেছেন।

সুতরাং আপনারা নিজেদের নবীর জীবনচরিত অনুসরণ করুন। এটিই তাঁর ভালোবাসার প্রমাণ, যা সর্বোচ্চ শোভা ও মহত্তম লক্ষ্য। নিছক প্রদর্শনী, আকৃতি, সমাবেশ, অনুষ্ঠান, বিরামহীন গল্প-উপন্যাস, স্তুতি বা গান নয় তাঁর ভালোবাসা। এসব তো তাঁর ভালোবাসা প্রকাশের ধরন-প্রকরণমাত্র। কবি বলেন-
‘তাদের জিজ্ঞেস কর বিশুদ্ধ ভালোবাসা ও বিবরণ সম্পর্কে,
অচিরেই তুমি সত্য সংবাদদাতাকে বলতে শুনবে
রাসুলের ভালোবাসা হলো আঁকড়ে ধরায়
তাঁর দৃশ্য-অদৃশ্য সমৃদ্ধ শরিয়ত।’

এর চেয়ে আরও পরিষ্কার ও জোরাল হলো মহান আল্লাহর ঘোষণা। তিনি বলেন-
‘(হে রাসুল!) আপনি বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমাকে (রাসুলকে) অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসেন এবং তোমাদেরকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)

শায়খ সুদাইসি উম্মতে মুসলিমাকে মুমিন ভাই সম্বোধন করেন বলেন, ‘উম্মতের সঙ্গে তাদের রাসুলের, তাদের প্রিয়তম ও সুপারিশকারী মহামানবের এবং তাঁর সুবাসিত জীবন ও চরিত্রমাধুরীর সঙ্গে সম্পর্ক ও ভালোবাসা কোনো সময় বা উপলক্ষের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, বরং এ গভীর সম্পর্ক সব প্রয়োজনে, সব অনুষঙ্গে এবং আমৃত্যু প্রতিটি অবস্থার সঙ্গে।

আমরা কাবার এ পবিত্র প্রান্ত মিম্বার থেকে; কল্যাণ, সত্য ও শান্তির মঞ্চ থেকে বিভিন্ন দেশ ও ভূখণ্ডে অবস্থানরত সব মুমিন মুসলমান বিশ্ববাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানাচ্ছি-

‘সবাই সম্মানিত রাসুলদের চরিত্রে সুশোভিত হোন, যাদের পুরোভাগে রয়েছেন বিভিন্ন ধর্মের মাঝে ব্যাপকতর শান্তি ও পূর্ণতর দয়ার আহ্বায়ক আমাদের নবি ও আমাদের প্রিয়তম রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সবাই সব ধরনের ধর্মীয় প্রতীকের অসম্মান, সাংঘর্ষিকতা, বিদ্রুপ ও ছিদ্রান্বেষণ থেকে বিরত থাকি। যে ধর্মীয় প্রতীকগুলোর শিরোভাগে রয়েছেন নবি-রাসুলদের পবিত্র সত্তা। আল্লাহ বলেন-

‘আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোনো তারতম্য করি না।’ (সুরা বাকারাহ : আয়াত ২৮৫)

প্রিয় মুসলিম উম্মাহ! আমরা ১৮০ কোটি মুসলমানের পক্ষ থেকে নবি-রাসুলদের সম্মানে আঘাতের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তীব্রভাবে আমরা এসবের প্রতিবাদ করছি। বিশেষত নবীদের মধ্যে সর্বশেষজন, সরলপথ ও সৌহার্দ্যরে নবি, আমাদের নেতা, নবি, প্রিয়তম, সুপারিশকারী ও আদর্শ মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শানে ধৃষ্টতা। এসব ব্যঙ্গ-কার্টুন ও নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড আসলে এক ধরনের সন্ত্রাস। এসব ঘৃণা ও জঘন্য বর্ণবাদ উস্কে দেয়াও উগ্রতা।

আর ধর্মীয় নিদর্শনাদি ও পবিত্র বস্তুগুলোকে অসম্মান ও বিদ্রুপ করা কোনোভাবেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না। এটা বরং শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও সম্মানে আঘাত। যা তার ওপরই পতিত হয়।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভোগ করতে গিয়ে অবশ্যই মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করতে হবে, যা অন্যের অনুভূতিকে সম্মান দানের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

কেউ যখন এই মূল্যবোধ থেকে বের হয়ে যায়, তখন তা স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও ধর্মের নৈতিকতার মর্মমূলে আঘাত করে। এ ধরনের অবমাননা আসলে উগ্রবাদী চিন্তাধারীদের সেবা করে।

যারা চায় মানবসমাজের ঘৃণার আবহাওয়া ছড়িয়ে দিতে। ইসলাম এটি এবং ওইসব থেকে মুক্ত। সন্ত্রাসের তকমা তার গায়ে লাগা থেকে মুক্ত। ইসলাম তো পরস্পর উদারতা, দয়া ও সম্প্রীতির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও নাশকতা এবং আল্লাহর নবি আলাইহিস সালামদের প্রতি বিদ্রুপ, বিষোদ্গার বা বিভেদ সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই।

আমরা একইভাবে আহ্বান জানাই আবেগ ও প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের। প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদে অনিয়ন্ত্রিত ও অপরিকল্পিত উত্তেজনা ও ঝুঁকি পরিহারের। আহ্বান জানাই পরিণতিতে দৃষ্টি দেয়া এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভাবার। কেননা বাস্তবতা হলো, এসব ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ নবি-রাসুলদের এতটুকু মানহানি ঘটাতে পারবে না। কেননা আল্লাহ তাআলাই বলেছেন-
‘আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন।’ (সুরা মায়েদা : আয়াত ৬৭

সুতরাং মুসলিমরা যেন এসব বিলীয়মান বুদ্ধুদের সামনে নিশ্চিত ও স্থিরচিত্ত থাকেন, এসবের মাধ্যমে তারা নিজেদের ছাড়া আর কারও ক্ষতি করছে না। অতপর কুরআনের এসব আয়াত দিয়ে তিনি তাঁর খুতবা শেষ করেন। যেভাবে বলেছেন মহান আল্লাহ-
– ‘যদি তোমরা তাঁকে (রাসুলকে) সাহায্য না করো, তবে মনে রেখ, আল্লাহ তাঁর সাহায্য করেছিলেন।’ (সুরা তওবাহ : আয়াত ৪০)
– ‘বিদ্রুপকারীদের জন্য আমি আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট।’ (সুরা হিজর : আয়াত ৯৫)
– ‘আর আল্লাহ নিজ কর্ম সম্পাদনে প্রবল-অপ্রতিরোধ্য; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।’ (সুরা ইউসুফ : আয়াত ২১)

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..