1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. Azharislam729@gmail.com : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
  4. bobinrahman37@gmail.com : Bobin Rahman : Bobin Rahman
  5. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  6. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  7. harun.cht@gmail.com : চৌধুরী হারুনুর রশীদ : চৌধুরী হারুনুর রশীদ
  8. shanto.hasan000@gmail.com : Rakibul Hasan : Rakibul Hasan
  9. msharifhossain3487@gmail.com : Md Sharif Hossain : Md Sharif Hossain
  10. humiraproma8@gmail.com : হুমায়রা প্রমা : হুমায়রা প্রমা
  11. dailyprottoy@gmail.com : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রত্যয় আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  12. namou9374@gmail.com : ইকবাল হাসান : ইকবাল হাসান
  13. mohammedrizwanulislam@gmail.com : Mohammed Rizwanul Islam : Mohammed Rizwanul Islam
  14. hasanuzzamankoushik@yahoo.com : হাসানুজ্জামান কৌশিক : এ. কে. এম. হাসানুজ্জামান কৌশিক
  15. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  16. niloyrahman482@gmail.com : Rahman Rafiur : Rafiur Rahman
  17. Sabirareza@gmail.com : সাবিরা রেজা নুপুর : সাবিরা রেজা নুপুর
  18. prottoybiswas5@gmail.com : Prottoy Biswas : Prottoy Biswas
  19. rajeebs495@gmail.com : Sarkar Rajeeb : সরকার রাজীব
  20. sadik.h.emon@gmail.com : সাদিক হাসান ইমন : সাদিক হাসান ইমন
  21. safuzahid@gmail.com : Safwan Zahid : Safwan Zahid
  22. mhsamadeee@gmail.com : M.H. Samad : M.H. Samad
  23. Shazedulhossain15@gmail.com : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু : মোহাম্মদ সাজেদুল হোছাইন টিটু
  24. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  25. showdip4@gmail.com : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ : মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
  26. shrabonhossain251@gmail.com : Sholaman Hossain : Sholaman Hossain
  27. tanimshikder1@gmail.com : Tanim Shikder : Tanim Shikder
  28. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :
  29. Fokhrulpress@gmail.com : ফকরুল ইসলাম : ফকরুল ইসলাম
  30. uttamkumarray101@gmail.com : Uttam Kumar Ray : Uttam Kumar Ray
  31. msk.zahir16062012@gmail.com : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক : প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক
ভ্রমণ বিলাসী মন, বাইকে চড়ে রাজশাহী থেকে টাঙ্গাইল - দৈনিক প্রত্যয়

ভ্রমণ বিলাসী মন, বাইকে চড়ে রাজশাহী থেকে টাঙ্গাইল

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২০
  • ৬৩১ Time View
নজরুল ইসলাম তোফা: ভ্রমণ বিলাসী মন, হঠাৎ করেই তাতো জাগ্রত হয়নি, দীর্ঘদিনের পরিকল্পিত বলাই চলে।রাজশাহীর “ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব” সমগ্র বাংলাদেশের অসংখ্য জায়গাতে ভ্রমণ করেছে এবং আগামীতেও এই ভ্রমণ অব্যাহত থাকবে।
তাই তো ”রাজশাহী টু টাঙ্গাইল” ভ্রমণ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব এর কর্ণধার মহম্মাদুল হাসান শুপ্ত ভাই সহ সাকিব ভাই, হারুন ভাই, হাসান সিজার ভাই, অভীভাই, সঞ্জু ভাইয়ের মতো অনেকেই। এভ্রমণে ছিল ইয়ামাহা কম্পানির ১৯টা বাইক ও মোট সদস্য ছিল ২২ জন। যদিও তারা দুই দিন আগ থেকে বিশাল প্রস্তুতি নিয়েছে কোথাও যেন কোনো সমস্যা না হয়। এমন ভ্রমণের আগের রাতে যেন দু‌চোখে কারো তেমন ঘুম ছিল না, কারণ হলো কখন যে ‘সকাল হবে’। সকাল সাড়ে ৬ টায় একত্রিত হয়ে সাতটায় রওনা দিয়েছে টাঙ্গাইলের উদ্দ্যেশে। সবাই দল বেঁধে ”ইয়ামাহা বাইক” চালিয়ে যাওয়ার অপরূপ দৃশ্যটাকে যেন ভিডিও করেছে। সকাল ৭টায় চলছে বাইক, সেইসময় আকাশে ছিল ঝকঝকে রোদ, হঠাৎ করে রিমঝিম বৃষ্টি অবিরাম, ভিজিয়েছে দেহ সাথেই পথ-ঘাটও যেন বুঝি পূর্ণ আষাঢ় মাসের রূপ নিয়েছিল। নাটোরের বাইপাস পার না হতেই বৃষ্টি শুরু, যেহেতু ভ্রমণটা পূর্ব পরিকল্পিত হওয়ায় সবার কাছে রেইনকোট ও পর্যাপ্ত সেফটি গিয়ার ছিল।
যাকগে এবার আসা যাক ‘সকালের নাস্তার প্রসঙ্গে’, নাস্তা করার উদ্দেশ্যে সিরাজগঞ্জের ফুড ভিলেজে বিরতি। সেখানেই দিক নির্দেশনা দেয়া হলো, যমুনা সেতু বা বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর সবাই দাঁড়াতে পারবে- অন্য কোথাও নয়। নাস্তাটা শেষ করার পর পর সিরাজগঞ্জ হতে টাংগালের উদ্দেশ্যে ভ্রমণের ল়ং যাত্রা শুরু হয়। যমুনা সেতুর টোল দিয়ে সকলে মিলে একসাথে যমুনা সেতুর সৌন্দর্য এবং যমুনা নদীর পানি দেখে চোখ জুড়িয়েছে। নানান প্রকার ছবি সহ ভিডিও সেখানেই সবচেয়ে বেশি করেছে। আর সেখানে বেশকিছু মানুষের সঙ্গেও কথা হয়, তাদের তথ্য মতেই বলা যায়, ‘যমুনা বহুমুখী সেতু কিংবা যমুনা সেতু’ বাংলাদেশের যমুনা নদীর উপর অবস্থিত সড়ক ও রেল সেতু। ৪.৮ কিঃমিঃ দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এমন সেতুটি বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার “২য় একটি দীর্ঘতম সেতু”। ১৯৯৮ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছিল। এটি যমুনা নদীর পূর্ব তীরেই ভূঞাপুর (ভুয়াপুর) ও পশ্চিম তীরের দিকটা সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করেছে। এটি বিশ্বে ১১ তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম সেতু। ‘যমুনা’ বাংলাদেশের প্রধান তিনটি নদীর মধ্যেই যেন বৃহত্তর ও প্রবাহিত জল আয়তানিক পরিমাপের দিক থেকে বিশ্বে পঞ্চম বৃহত্তম। সেতুটি বাংলাদেশের পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যেই যেন একটি কৌশলগত সংযোগ প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি অত্র অঞ্চলের জনগণের জন্যই বহুবিধ সুবিধা সৃষ্টি করেছে।বিশেষত অভ্যন্তরীন পণ্য ও যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থা দ্রুত করেছে। পরবর্তিতে এই সেতুটার নামকরণ করা হয়েছে “বঙ্গবন্ধু সেতু”। যমুনা সেতু স্থাপনের জন্য প্রথম উদ্যোগ নেয়া হয় ১৯৪৯ সালে। জানা যায় যে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রথম এই উদ্যোগ নেন। কিন্তু, তখন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছিল না। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবরে কাজ আরম্ভ হয়েছিল আর তা ১৯৯৮ সালের ২৩ জুনে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সেতুটার উপর বাইকাররা অন্যরকম একটা ফিলিংস এর ভিতরে চলে যায়। এতো ‘মনোরম পরিবেশ’ ছেড়ে তারা নড়তেই চাইছিল না।
সেখান থেকে টাঙ্গাইল তো মেতেই হবে। সে কথা মাথায় রেখে সকলকে পরামর্শ দিয়ে ছিল রাইডার্স ক্লাবের পরিচালক শুপ্ত ভাই। তিনি বলেন, খুব দ্রুতগতি সম্পূর্ণ বাইকাররাই আগে আগে থাকবে। আর নিয়ন্ত্রণে রেখে বাইক গুলো দ্রুতগতিতে চালাবে। অতিরিক্ত গতি বাড়িয়ে চলছে তাদের বাইক। তথা সময়ের মধ্যে সবাই যেন টাঙ্গাইল শহরে পৌঁছেছে। সেখানে শৈশব ভাই নামের এক ব্যক্তি ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব টাঙ্গাইলের মডারেটর, তিনি লম্বা স্বাস্থ্যবান, সুদর্শন চেহারার সু-পুরুষ। রাজশাহীর ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সবাইকে রিসিভ করার জন্য থাকবে কিন্তু তিনি সেখানে নেই। কারণটা হলো শুক্রবার দিন হওয়ায় তিনি “জুম্মার নামাজ” আদায় করতে গেছে। পরে তিনি এসে সবাইকে এক হোটেলে উঠানোর বন্দোবস্ত করেছে। সেই হোটেলে ১৯টি বাইক গ্যারেজ করে ফ্রেশ হওয়ার জন্যই যার যার রুমে চলে গেলো। ফ্রেশ হয়েও দেখে বৃষ্টি থামার কোনো লক্ষণ নেই। ইতিমধ্যেই ‘ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব’, টাঙ্গাইল এর এডমিন ‘মিজান ভাই’ও রাজশাহীর বন্ধুদের মাঝেই উপস্থিত হন। আর তখনই আরম্ভ হলো এক “জমজমাট আড্ডা”। সবাই মিলে অসাধারণ একটি আড্ডা হয়েছিল হোটেলের করিডোরে। এদিকে কখন যে বিকেল হয়েছে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ বলে টের পাওয়া যায়নি। স্মরণ হলো টাঙ্গাইল এসে পোড়া বাড়ির ‘চমচম’ না খেলে চলে। তাই আবার সেই শৈশব ভাই, মিজান ভাই, কবির ভাইকে সহ সবাইকে নিয়েই গেলো বিখ্যাত সেই পোড়াবাড়ির সুস্বাদু চমচম খেতে। তার পর সকলে মিলেই বাইক নিয়ে ডিসি লেক ও ডিসি পার্ক এর উদ্দেশ্যে রওনা। খুবই গোছানো জায়গা ও রাত্রে বেলা লাইটিং এবং তার পরিবেশ দেখে সবাই যেন মুগ্ধ। সবার আফসোসটা এক জায়গায় ছিল তা হলো, সেখানে দিনের বেলা যেতে পারলেই হয়তোবা আরো অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পারতো।
এরপর গন্তব্যের পালা “মনতলা”। যা টাঙ্গাইলের পর্যটন কেন্দ্র। টাঙ্গাইল শহরের জনপ্রিয় ভ্রমণের স্থান মনতলা। মনতলা যাবার রাস্তাটা ছিল অসাধারণ সরু রাস্তার দুই পাশে বড় বড় গাছ, মনে হচ্ছিল যেন রাস্তাটিকেঈ উপর হতে ছাউনি দিয়ে ঘিরে রেখেছে এবং দুই ধারে বিল, যা দেখতে অনেকটা চলন বিলের মতো। মনতলা পয়েন্টের মাঝে গিয়ে সবাই একত্রিত হয়ে ছিল। নৌকা ভ্রমণ এবং হরেকরকমের খাবার মনতলায় পাওয়া যায়। দাম একটু বেশি হলেও মাখা মুড়ির স্বাদ অতুলনীয়। তাদের ভাষায় মাখা মুড়িকে মুড়ি ভর্তা বলে। তাকে খেতে খেতেই কখন যে ৪/৫ প্লেট খেয়ে ফেলেছে সবাই বুঝতে পারিনি এতো সুস্বাদু ছিল। বিনোদন স্পটে সন্ধ্যাতে প্রবেশ করেই যেন রাজশাহীর ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সদস্যরা বেশরাত্রি পর্যন্ত খুব মজা করেছে। তাছাড়াও জানা দরকার, এমন ভ্রমণ কেন্দ্রে বাইক নিয়ে বিনোদন আড্ডা দেয়ার মজাই আলাদা। ফুরফুরে হাওয়ায় সবার মনটা খুব ভালো হয়ে গিয়েছিল। এখানে দিনে দিনেই না কি হাজারো মানুষের ভিড় হচ্ছে। নৌকাতে চড়ে প্রত্যেক দিন অনেক কিশোর কিশোরীরা বিনোদন করে। এখানে গিয়ে- আকাশ জুড়ে মেঘ, পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থাতে ছিল না। আলো ও আঁধারের মাঝে ফোটাই ফোটাই মৃদু বৃষ্টি। তাই টাঙ্গাইল শহরের এক হোটেলে ফিরতে হয়েছিল। অন্ধকার আঁকাবাঁকা পথে দলবেঁধে বাইক চলেছি, তবে ঠিক কেমন অনুভব হয়ে ছিল, না বললেই নয়। উঁচু-নীচু ভাঙ্গা রাস্তায় কাদা যুক্ত অবস্থা, তারপরও বৃষ্টি। এমনটা ছিল শুধু একজায়গাতে, একেবারেই যেন ভয়ানক মুহূর্ত ছিল। অন্ধকারে পিচ্ছিল কাদায় কোনো বাইক চালকরা যে পড়ে যায়নি সেটাই সৌভাগ্য। তবে বাইকের পিছনের সিটে বসেছিল তারা রাস্তায় আগে নেমেছিল বলেই যেন সবার মঙ্গল হয়েছে। হোটেলে ফিরেই ‘দু’চোখ বন্ধ’ করে ঘটনাটা ভাবছিল অনেকে। তারা চোখ খুলে সেখানকার বাজে পরিস্থিতিতে কেমন যেন শিহরণ অনুভব করেছে। বিস্তারিত আরো জানতেই হয় যে, সত্যিই এই মনতলা’র অপরূপ দৃশ্য দেখার আনন্দটাই আলাদা। ‘টাঙ্গাইল’ এর পোড়া বাড়ির ‘চমচম’ খেয়েই মনতলার ঠিকানায় ছুটছে সবাই। সেই সাথে আলো আঁধারির খেলায় মনটা প্রফুল্ল ছিল। রাস্তার দুপাশেই গভীর পানি এবং দু’পাশেই আছে সারিসারি গাছ। সান্ধ্যভ্রমণে বেরোনো স্থানীয় মানুষরাও সেই খানে আনাগোনা করে। তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মজাটাও আলাদা। এ মনতলার কোমল হাওয়ায় কালো আকাশে এক থালা সুপারির মতো সাজানো এক একটি নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে হয়তো বা তারা ক্লান্তি যেন ধুয়ে নিয়েছে। মনে পড়ে গেল ফেলে আসা সেই ছোট বেলার পুরোনো স্মৃতি। জন্মের পর থেকে নওগাঁ জেলার একটি নদী ”আত্রাই” তাকে দেখতে দেখতে, তার কোলেই বড়ো হয়েছি। এমন কতো সন্ধ্যা কাটিয়েছি সেই আত্রাই নদীর পাড়ে তার ইয়াত্তা নেই। ঝিমঝিমে সন্ধ্যা নেমে আসতেই রাস্তার আলোগুলো জোনাকির মতো জ্বলে উঠত। আর বসার বেঞ্চে বসেই নীলচে ধূসর জল কেমন যেন অদৃশ্য হয়ে যেতো সন্ধের কোলে, শুধু মাত্র জেগে থাকতো সেই আত্রাই নদীর ঢেউয়ের ডাক। আহ!! ঠিক তখনই কি যে ভালো লেগেছিল। ঢালের গা’বেয়ে সাজানো এক একটি বোলডারের ঢালু বাঁধের গা দিয়ে ছুটে যেত লালচোখের শেয়াল। একটা ‘রহস্যময় প্রকৃতি’ জেগে উঠতো চোখের সামনে। আর এ বয়সে এসেই ফিরে গেলাম, টাঙ্গাইলের মনতলায় মনমাতানো মনোরম পরিবেশের পর্যটন কেন্দ্র দেখে। শুধু আমি কেন, ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের সকল সদস্য বৃন্দ এমন পরিবেশকে উপভোগ করেছে। প্রথম দিন বা রাত্রে ভ্রমণ কাহিনী শেষ হলেও ইয়ামাহা’র সদস্যদের মুল লক্ষ্যটা ছিল মহেরা জমিদার বাড়ি। তাই খুব সকালেই থাকার হোটেলের সামনে খাবার হোটেলে নাস্তা করেই জমিদার বাড়ির উদ্দেশ্যে বাইকাররা রওনা হন। পৌঁছে অপরূপ জায়গায় বাইক দাঁড় করিয়েই- ছবি ও ভিডিও করার পালা। জানা যায় যে, “মহেরা জমিদার বাড়ি” এটা বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলাতেই “মির্জাপুরে অবস্থিত”। বেশ কয়টি ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যেই যেন এটি একটি। এমন মহেড়া জমিদার বাড়ীর এক অংশের সামনে আছে একটি চমৎকার ফোয়ারা, ১৮৯০ দশকের পূর্বে স্পেনের করডোভা নগরীর আদলেই এমন “মহেরা জমিদার বাড়ী’টি” প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আরো জানা যায় স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকবাহিনী মহেড়া জমিদার বাড়ীটাতেই হামলা করে এবং জমিদার বাড়ীর কূলবধূ সহ পাঁচ জন গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে (১৯৭১)। পরবর্তীতে তারা লৌহজং নদীর নৌপথেই এ বাংলাদেশ ত্যাগ করে। এখানেই তখন মুক্তি বাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করে ছিল। এমন এ জমিদার বাড়ীটি পুলিশ ট্রেনিং স্কুল হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় ১৯৭২ সালে ও পুলিশ ট্রেনিং স্কুলকে ‘পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে উন্নীত’ হয় (১৯৯০)। এই মহেড়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রায়- ১৮ কিলোমিটার দূরেই প্রায়- আট (৮) একর জায়গা জুড়ে এই মহেড়া জমিদার বাড়ি বিস্তৃত। ঢাকা- টাংগাইল মহাসড়কে নাটিয়াপাড়া বাজার থেকে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার পূর্বে মহেড়া জমিদার বাড়ি অবস্থিত। এ জমিদার বাড়ির সামনে প্রবেশ পথের আগে রয়েছে একটি বিশাখা সাগর নামে বিশাল একটি দীঘি এবং বাড়িতে প্রবেশের জন্যেও আছে দুইটি সুরম্য গেট। তাছাড়াও মূল ভবনে পিছনের দিকে পাসরা পুকুর এবং রানী পুকুর নামে আরো দু’টি পুকুর রয়েছে। শোভা বর্ধনেও আছে সুন্দর ফুলের বাগান। এই ‘বিশাখা সাগর’ সংলগ্ন দক্ষিণ পার্শ্বে এক বিশাল আম্র কানন বা বিশাল ৩টি প্রধান ভবনের সাথে রয়েছে- “নায়েব সাহেবের ঘর, কাছারি ঘর, গোমস্তাদের ঘর, দীঘিসহ ও আরো তিনটি লজ”।
চৌধুরী লজঃ জমিদার বাড়ি প্রবেশের পরেই মূল ফটক দিয়ে দেখা যায় চৌধুরী লজ। গোলাপি রঙের ভবনটির পিলার সমূহ রোমান স্থাপত্য শৈলীতেই যেন নির্মাণ করা আছে। সুন্দর নকশা খচিত এই ভবনের ভেতরে রয়েছে ঢেউ খেলানো ছাদ। দোতলা বিশিষ্ট এ ভবনটির সামনে রয়েছে সুন্দর বাগান ও সবুজ মাঠ। মহারাজ লজঃ এই বাইজেনটাইন স্থাপত্য শৈলীতেই নির্মিত “মহারাজ লজ” ভবনের সামনের দিকে আছে ৬টি কলাম এবং গোলাপি রঙের মহারাজ লজের সামনেই সিঁড়ির বাঁকানো রেলিং আর ঝুলন্ত বারান্দা, যা এই ভবনের অনেক শোভা বৃদ্ধি করেছে। এ ভবনের কক্ষ আছে ১২টি, সামনে বাগান ও পেছনে একটি টেনিস সহ কোর্ট আছে। এমন ভবনটিতে বর্তমানে শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আনন্দ লজঃ এ মহেরা জমিদার বাড়ির খুব আকর্ষণীয় ভবন হলো আনন্দ লজ। নীল এবং সাদা রঙের মিশ্রনে ভরা ভবনটির সামনে আটটি সুদৃশ্য ৮ টি আছে। ৩ তলা বিশিষ্ট ঝুলন্ত বারান্দা এমন ভবনটিকে করেছে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন। আর আনন্দ লজের সামনেই রয়েছে- ”হরিণ, বাঘ ও পশু-পাখির ভাস্কর্য সহ একটি চমৎকার বাগান” আছে। কালী চরণ লজঃ এমন জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির শেষের দিকে নির্মিত ‘কালী চরণ লজ’ অন্য ভবন থেকে অনেকটা আলাদা। ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের আদলে এই ভবনটি ইংরেজ স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত। আর অন্যোন্য স্থাপত্য শৈলীর জন্য বিকেলবেলা ভবনের ভেতর থেকে সুন্দর আলোর ঝলকানি দেখা যায়। সুতরাং এতো কিছু সুন্দর সুন্দর স্হান দেখার পরে, সেখান থেকেই ফিরতে কারো মানসিক অবস্থা ছিলনা, তবুও ফিরতে তো হবে। পরিশেষে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব টাঙ্গাইলে আতিথিয়তা যা ছিল, তা অনেক যথেষ্ট ছিল, সবাই মুগ্ধ। যাক, এমন ভ্রমন কাহিনী নিয়ে ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবের পরিচালক মোহাম্মাদুল হাসান শুপ্ত বলেন, ভ্রমণ শুধু বিনোদন নয়, ভ্রমণে হয় শিক্ষা। পুঁথিগত বিদ্যার চেয়ে ভ্রমণটাই উত্তম। তিনি আরো বলেন, ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাবে থাকবে বড় একটা “ভিডিও প্রোজেক্টের রোম”। সেখানেই বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের জনপ্রিয় ঐতিহাসিক স্হান এবং মহান ব্যক্তির জন্মগ্রহণ বা কোন কোন স্হানের কি কি খাবার বিখ্যাত তা দেখানো হবে। তাছাড়াও মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় ‘ভ্রমণ প্লান’ হবে। ভ্রমণ টিমের একজন সিনিয়র সদস্য হাসান সিজার বলেন, ‘আপ্পায়ন করেছে ইয়ামাহা কম্পানি’, তিনি সহ ক্লাবের সকল সদস্যরা মুগ্ধ হয়েছে। অনুভূতিতেই এমন ঐতিহাসিক মুহূর্তটা বারবার ফিরে আসুক।
লেখকঃ নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..